বিহারের দড়ি দিয়ে মেরঠের পবন জহ্লাদ ফাঁসিতে ঝোলাতে তৈরি

'পবন জল্লাদ'

তিহার জেল তৈরি৷

যে কোনও মুহুর্তেই আসতে পারে ডেথ- ওয়ারেন্ট, এমন সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে গত একমাস ধরেই প্রাথমিক সব কাজই প্রায় সেরেই রেখেছিলো তিহার৷ মঙ্গলবার চূড়ান্তভাবে জানানো হলো সেই তারিখ৷

বিহারের জেলবন্দিদের তৈরি ফাঁসির রজ্জু পৌঁছে গিয়েছে তিহারে৷

এবং তৈরি মেরঠের তিন পুরুষের ফাঁসুড়ে পবন জহ্লাদ৷

দিল্লি আদালত মঙ্গলবার জানিয়ে দিয়েছে আগামী 22 জানুয়ারি, বুধবার সকাল 7টায় তিহার জেলে
ফাঁসি দেওয়া হবে চার- নির্ভয়া-ধর্ষক, অক্ষয় সিং, মুকেশ, পবন গুপ্তা এবং বিনয় শর্মাকে।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত 4 জনকেই রাখা হয়েছে তিহার জেলের ফাঁসির সাজাপ্রাপ্তদের রাখার বিশেষ কুঠুরি বা কনডেমন্ড সেল’-এ৷

নির্ভয়াকে পাশবিক নির্যাতন, গণধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় প্রাণদণ্ডে দণ্ডিতদের ফাঁসি কার্যকর করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে ডিসেম্বরেই৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিহারের এক পদস্থ অফিসার মঙ্গলবার আদালতের আদেশ জানার পর বলেছেন, “আমরা মেরঠের ফাঁসুড়ে আনছি। একসঙ্গে চারজনের ফাঁসির সমস্ত প্রস্তুতি সেরে ফেলা হয়েছে। বিহারে বক্সার জেল থেকে ফাঁসির দড়ি আনা হয়েছে৷ 2013 সালে সংসদ হামলার দায়ে প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত আফজল গুরুর জন্যও ফাঁসির দড়ি এসেছিল ওখান থেকেই৷ ইতিমধ্যেই তিহার জেলের ফাঁসিকাঠে 4 সাজাপ্রাপ্তের দেহের ওজন অনুসারে Dummy hanging হয়ে গিয়েছে।
এই 4 জনকে যে আলাদা সেলে রাখা হয়েছে সেখানে 24 ঘন্টাই CCTV-র মাধ্যমে তাদের ওপর টানা নজরদারি চলছে”।

এদিকে, তিহার সূত্রের খবর, নির্ভয়া গণধর্ষণ ও হত্যা মামলা প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত 4 অপরাধীর সম্ভাব্য ফাঁসুড়ে মেরঠের পবন জল্লাদ৷ মেরঠ কারাগারের তৃতীয় প্রজন্মের ফাঁসুড়ে পবন জল্লাদ নিজেই এই 4 সাজাপ্রাপ্তকে ফাঁসি দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। এ দিন আদালতের আদেশ শোনার পরে পবন জল্লাদ সংবাদমাধ্যমে বলেছেন,
তিনি ওই 4জনকে ফাঁসি দেওয়ার জন্য তৈরি আছেন৷

বেশ গর্বের সঙ্গেই পবন জহ্লাদ বলেছেন, “আমার ঠাকুর্দা কাল্লু জল্লাদ ইন্দিরা গান্ধীর খুনিদের ফাঁসি দিয়েছে৷ আমার বাবা বাব্বু জহ্লাদও একাধিক ফাঁসি দিয়েছে৷” পবন দাবি করেছেন, “5 ফাঁসিতে আমি ঠাকুর্দা কাল্লু জল্লাদের সহকারি ছিলাম”৷
ফাঁসির দড়ি পরাতে তিনি মানসিকভাবে কতখানি তৈরি, তা বোঝাতে পবন জল্লাদ বলেছেন, “আমি নির্ধারিত দিনের 2-3 দিন আগেই তিহারে পৌঁছে যাবো। ফাঁসি দেওয়ার আগে অনেক কাজ থাকে৷
প্রথমেই আমাকে দেখে নিতে হবে ফাঁসির দড়ির ভার বহনের শক্তি কতখানি আছে৷ ফাঁসির মঞ্চ কতখানি শক্তপোক্ত, তাও দেখতে হবে৷ ফাঁসিকাঠ পরীক্ষা করতে হবে৷ দড়ি কতখানি নিখুঁত, তা খুঁটিয়ে পরীক্ষা করবো। সাজাপ্রাপ্তদের উচ্চতা, ওজন দেখতে হবে৷ তারপর কথা বলতে হবে জেলের সুপার ও চিকিৎসকের সঙ্গে৷ অনেক কাজ থাকে। সব ক’টি ধাপে নিজে সন্তুষ্ট না হওয়া পর্যন্ত, ফাঁসির মঞ্চের লিভারে আমি হাতই লাগাবো না”৷

সংবাদমাধ্যমে পবন জহ্লাদ ফাঁসির প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করে বলেছেন, “ফাঁসির আদেশ কার্যকর করার দিন আমার কাজ শুরু হবে রাত তিনটে থেকেই৷ চাপমুক্ত থাকার কিছু কৌশল আছে৷ ভোর রাতে আমি সে সব সেরে ফেলি৷ তারপর আস্তে আস্তে পৌঁছে যাই ফাঁসির মঞ্চের কাছে৷ তবে এই 4 সাজাপ্রাপ্ত এমন ঘৃণ্য অপরাধে যুক্ত ছিলো যে এদের ফাঁসিতে ঝোলাতে বাড়তি কোনও চাপই আমার নেই৷”

সূত্রের খবর,তিহারের 3 নম্বর সেলে ফাঁসির প্রস্তুতি করা হয়েছে৷ সেখানেই ফাঁসি দেওয়া হবে।

Previous article ইন্দোরে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টি-২০ ম্যাচে ‘বিরাট’ জয় ভারতের
Next articleমার্কিন সেনাবাহিনী একটা জঙ্গি গোষ্ঠী, প্রস্তাব পাশ ইরানের সংসদে