ছিঃ কমরেড! আপনার ছোড়া ইট প্রাণ কাড়তে পারত এক শিশুর

ধর্মঘট মানুষের স্বার্থে। জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হরতাল। ধর্মঘট গণতন্ত্র রক্ষায় মানুষের শেষ হাতিয়ার। কিন্তু সেই হাতিয়ার যদি প্রাণঘাতী হয়, তাহলে সেটা গণতন্ত্রের লজ্জা। জাতির জনক গান্ধীজি তেমনটাই মনে করতেন।

বুধবার বাম ও কংগ্রেসের ডাকা সারা ভারত বনধের মিশ্র প্রভাব পড়েছে দেশজুড়ে। এই রাজ্যেও তাই। হঠাৎ কোনও গজিয়ে ওঠা ইস্যু নয়, এটা বাম সংগঠনগুলির বার্ষিক এজেন্ডা। ফি বছরই তারা এটা করে থাকে। এবারও করছে। NRC-CAA বিরোধিতা এবার যোগ করা হয়েছে বামেদের বামেদের এই “বাৎসরিক” অনুষ্ঠানে।

সব ঠিক ছিল কমরেড, কিন্তু স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে ধর্মঘটের নামে এদিন শহর থেকে শহরতলী কিংবা জেলায় জেলায় যে কর্মসূচি আপনারা নিলেন, সেটা ধর্মঘট নাকি তার নামে গুন্ডামি।

নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে আপনারা মানুষ খুন করতেও পিছপা হন না। না, আজ ধর্মঘটের বলি কেউ হয়নি। কিন্তু হতে পারতো অনেক কিছুই। কমরেড, আপনাদের বিরুদ্ধে রেল লাইনে বোমা রাখার অভিযোগ উঠেছে। প্রশাসন সংযত থাকা সত্ত্বেও আপনারা বিনা প্ররোচনায় সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করেছেন, যেটা অতীতেও করতেন আপনারা। ২ পয়সা ট্রাম ভাড়া বৃদ্ধিতে ১০টা ট্রাম পুড়িয়ে ছিলেন।

কিন্তু এদিন নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে ফের গুণ্ডামির পথ বেছে নিলেন আপনারা। বেশি দূর যাওয়ার দরকার নেই। রাসবিহারী মোড়ে যেটা করলেন, সেটা শোভা পায় কমরেড?

যাত্রী বোঝাই সরকারি ও বেসরকারি বাসে মুড়ি-মুড়কির মতো ইট ছুঁড়লেন। বাকিদের কথা নাই ভাবলেন, একবার ভেবে দেখেছে, ওই বাসেই আপনার মতো কোনও কমরেড বা তাঁর পরিবার থাকতে পারে? যারা হয়তো নিজেদের প্রয়োজনে রাস্তায় বেরোতে আজ বাধ্য হয়েছে।

কমরেড আপনি কি জানেন, আপনার ছোড়া ইটের আঘাতে প্রাণ কাড়তে পারতো এক শিশুর। সন্তানহারা হতে পারতেন এক মা? ওই আধলা ইট যেখানে লেগেছে ঠিক সেই জানলার পাশেই এক শিশুকে নিয়ে বসেছিলেন মা। কাঁচ না ফেলা থাকলে আঘাত পেতে পারতো ওই শিশু। আরও বড় বিপদ হতে পারতো।

ছিঃ, কমরেড! গনতন্ত্রের শেষ হাতিয়ারকে আগেও আপনারা ভোঁতা করেছেন। হয়তো আগামীতেও করবেন। তবে খেয়াল রাখবেন সেই হাতিয়ার মানুষের জীবনের অধিকার রক্ষায় ফিরিয়ে দিন, জীবন নিতে নয়!

আরও পড়ুন-ধর্মঘট থেকে মুখ ফেরালেন সরকারি কর্মীরা, দফতরগুলিতে উপস্থিতির হার ৯৫ শতাংশ

Previous articleএবার বরুণ বললেন, এটা নিরপেক্ষ থাকার সময় নয়
Next articleCAA বিরোধী বিক্ষোভের জেরে অসম সফর বাতিল প্রধানমন্ত্রী মোদির