মমতার উপর প্রবল ক্ষুব্ধ হলেও দিল্লির বৈঠকে তাঁর হাজিরা চায় কংগ্রেস

তৃণমূলনেত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, কংগ্রেস ও বামেরা যেভাবে ধর্মঘটের দিন বাংলায় তাণ্ডব চালিয়েছে তাতে তিনি এতটাই বিরক্ত যে সোনিয়া গান্ধীর ডাকা দিল্লির বৈঠকে যোগ দিতে চান না। আগামী 13 জানুয়ারি নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি ইস্যুতে বিজেপি বিরোধী ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের রূপরেখা ঠিক করতে বিরোধী দলগুলিকে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী। এই বৈঠকে মমতার উপস্থিতি যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ তা বলেওছিলেন কংগ্রেস নেতারা। কিন্তু এখন মমতা যে যুক্তিতে দিল্লির বৈঠকে যোগ না দেওয়ার কথা জানিয়েছেন তাতে কংগ্রেসের একাংশের নেতা ব্যাপক ক্ষুব্ধ। তাঁরা বলছেন, জাতীয় ও রাজ্যের বিষয়কে এক করে ফেলে বৈঠকে হাজির না থাকার ছুঁতো তৈরি করা হচ্ছে। আর এভাবে বিরোধী ঐক্যে জল ঢেলে আসলে বিজেপির সুবিধা করে দিতে চান মমতা। যদিও এই ক্ষোভের পরেও বিরোধী ঐক্যে যাতে চিড় না ধরে সেজন্য মমতাকে বৈঠকে হাজির করানোর সর্বতো চেষ্টা হচ্ছে। এনসিপি সুপ্রিমো শারদ পাওয়ার ও সোনিয়ার রাজনৈতিক সচিব কংগ্রেস সাংসদ আহমেদ প্যাটেল যেকোনও সময় তাঁর সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের অনুরোধ করতে পারেন বলে খবর।

মমতা ধর্মঘটে অশান্তি তৈরির কারণকে সামনে রেখে কংগ্রেসের ডাকা বৈঠকে যোগ না দেওয়ার কথা বললেও এই যুক্তিকে হাস্যকর বলছেন বহু কংগ্রেস নেতা। তাঁদের বক্তব্য, জাতীয় বিষয়ের সঙ্গে রাজ্যের পরিস্থিতিকে মেলানো কখনই সঠিক নয়। কংগ্রেস নেতারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, খোদ মমতাই বারবার জাতীয় ও রাজ্যের পরিস্থিতিকে আলাদা করে দেখার কথা বলেন। কংগ্রেসের কটাক্ষ, 2019-এর 19 জানুয়ারি ব্রিগেডে কংগ্রেস সহ বিরোধীদের নিয়ে হাতে হাত রেখে বিরোধী ঐক্য গড়ে তোলার ডাক দেওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই কংগ্রেস সাংসদ মৌসম নূরকে দল ভাঙিয়ে তৃণমূলে নেন এই মমতাই। এরপর লোকসভা ভোটে মৌসম তৃণমূলের টিকিটে হারেন ও জেতে বিজেপি। কংগ্রেসের কিছু নেতা এই প্রশ্নও তুলছেন, একেবারে শেষ মুহূর্তে নানা অছিলায় তৃণমূলনেত্রী এমন সব সিদ্ধান্ত নেন যাতে কার্যত বিজেপিরই সুবিধা হয়। অতীতেও বারবার হয়েছে। কৌশলে বিজেপির সুবিধা করে দিয়ে মানুষের সামনে বড় বড় কথা বলে এমন ভাব দেখান যেন দেশে একমাত্র তিনিই বিজেপি বিরোধী। ক্ষমতায় আসার আগে নিজে কথায় কথায় বনধ ডাকলেও এখন বিজেপি-বিরোধী ধর্মঘটে তাঁর ‘বিবেক’ জাগ্রত হয়! কংগ্রেস নেতাদের কথায়, দিল্লির এই বৈঠকে যোগ না দিলে প্রমাণ হয়ে যাবে মমতা মুখে যাই বলুন, জাতীয় ক্ষেত্রে বিজেপি বিরোধী ঐক্য গড়ে তুলতে আদৌ আগ্রহী নন।

Previous articleধর্মঘটে সামিল? বাসের চালক, কন্ডাক্টর সাসপেন্ড !!!
Next articleপথ দুর্ঘটনা ঘিরে রণক্ষেত্র খিদিরপুর