ঠান্ডা মাথার, লো-প্রোফাইলের নেতা জেপি নাড্ডার সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ

বিধানসভা, রাজ্যসভা, লোকসভা অর্থাৎ আইনসভার সবকটি কক্ষেই নানা সময়ে প্রতিনিধিত্ব করার পাশাপাশি রাজ্য এবং কেন্দ্রের ক্যাবিনেটে দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করার প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা আছে জগৎপ্রকাশ নাড্ডার। মোদি-শাহের অত্যন্ত আস্থাভাজন হিমাচল প্রদেশের এই নেতার হাতেই আগামী তিন বছরের জন্য বিজেপির দায়িত্ব আসতে চলেছে।

আদতে হিমাচল প্রদেশের বাসিন্দা জেপি নাড্ডার জন্ম বিহারে। পাটনার সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল ও পাটনা কলেজে পড়াশুনো। একসময় দিল্লিতে জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় বিহারের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। পাটনার কলেজে বিএ পাশ করার পর হিমাচল প্রদেশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক হন নাড্ডা। বিজেপির হিমাচল প্রদেশ রাজ্য ইউনিটে কাজ করার সময়ই নিষ্ঠাবান, দক্ষ কর্মী হিসাবে নজর কেড়েছিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী প্রেমচন্দ্র ধুমল প্রথম নাড্ডাকে ক্যাবিনেট মন্ত্রী করে একাধিক দফতর দেন। 2014 সালে নরেন্দ্র মোদি প্রথমবার ক্ষমতায় এসে নাড্ডার হাতেই গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের ভার তুলে দিয়েছিলেন। কেন্দ্রের যে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প মোদি জমানার অন্যতম এক কৃতিত্বের স্মারক, তা বাস্তবায়িত করার পিছনে বড় অবদান রয়েছে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাড্ডার। গত বছর দ্বিতীয়বার মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেটে দেখা যায়নি নাড্ডাকে। পরিবর্তে জুন মাসে তাঁকে বিজেপির কার্যনির্বাহী সভাপতি পদে বসানো হয়। তখন থেকেই ইঙ্গিতটা স্পষ্ট। উত্তর ভারতের এই ঠান্ডা মাথার, লো-প্রোফাইলের নেতাই হতে চলেছেন অমিত শাহর উত্তরসূরি। নাড্ডা এমন এক নেতা দলের কান্ডারি হিসাবে তিনি থাকলে মোদি-শাহর প্রশাসনের সঙ্গে দলের সমন্বয়ের কাজে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়, ইগোর লড়াই তো দূর-অস্ত। তবে দায়িত্ব নেওয়ার পরই বাইরের একাধিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে বিজেপির নতুন কান্ডারিকে। সামনেই দিল্লি বিধানসভা ভোট, যেখানে প্রাক্-ভোট সমীক্ষায় ফের কেজরিওয়ালের আপের ক্ষমতায় আসার ইঙ্গিত। এছাড়া রয়েছে নাগরিকত্ব ইস্যুতে দেশজুড়ে নানা দল, সংগঠন ও ছাত্রদের প্রতিবাদ। এর বিরুদ্ধে জনমতকে নিজেদের পক্ষে নিয়ে আসার কঠিন চ্যালেঞ্জ নাড্ডার সামনে। এবছরের শেষে বিহার বিধানসভা ভোট ও সামনের বছর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভোটে নাড্ডার আরেক অগ্নিপরীক্ষা হতে চলেছে। তিনি সভাপতি পদে থাকলেও দলের রণকৌশল নির্ধারণে অমিত শাহর মস্তিষ্ক পিছন থেকে কতটা সক্রিয় থাকে, সেটাও কৌতূহলের বিষয়।

Previous articleকোন্নগরে বাঘের আতঙ্ক!
Next articleবর্ণাঢ্য রোড-শো, নস্টালজিক কেজরিওয়াল