দিল্লির ভোটে এবার কি আপকে সমর্থন করবে তৃণমূল?

দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের দিকেই এখন নজর সবার। এখানে মুখোমুখি লড়াই আমআদমি পার্টি বনাম বিজেপির। তৃতীয় পক্ষ হিসাবে কংগ্রেস থাকলেও দীর্ঘকাল দিল্লি শাসন করা সোনিয়া গান্ধীর দল এই মুহূর্তে রাজধানীর রাজনীতিতে অপ্রাসঙ্গিক। এই অবস্থায় আপ ও বিজেপির সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রেক্ষাপটে দিল্লির বাঙালি অধ্যুষিত মহল্লাগুলিতে বাংলার শাসকদল তৃণমূল কী করবে তা নিয়ে কৌতূহল থাকছেই।

মূলত বাংলাভিত্তিক আঞ্চলিক দল হলেও ‘সর্বভারতীয়’ হওয়ার চেষ্টায় অতীতে বারবার অন্য রাজ্যের নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। পরিণতি আশাব্যঞ্জক না হলেও দমে যাননি তৃণমূলনেত্রী মমতা ব্যানার্জি। পাঁচ বছর আগে দিল্লি বিধানসভা ভোটেও প্রার্থী দিয়েছিল তৃণমূল। প্রার্থীরা সবাই হেরে গেলেও রাজধানীর ভোটে পা রাখার সাহস দেখিয়েছিলেন তৃণমূলের কান্ডারিরা। সর্বশেষ ঝাড়খন্ড বিধানসভা নির্বাচনেও বিজেপি বিরোধী শক্তি ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চা-কংগ্রেস জোটে না গিয়ে আলাদাভাবে প্রার্থী দিয়েছিল তৃণমূল এবং সব প্রার্থীরই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। সম্ভবত এই বিপর্যয় থেকে শিক্ষা নিয়েই দিল্লির ভোটে এবার শক্তিক্ষয় করার পথে হাঁটেনি মমতা ব্যানার্জির দল।

কিন্তু দিল্লিতে যেহেতু বিরাট সংখ্যক বাঙালি বাস করেন তাই দিল্লির ভোটে সেই বাংলাভাষী ভোটারদের জন্য মমতা ব্যানার্জির বার্তা কী হবে? এই মুহূর্তে তিনি যেহেতু এরাজ্যে বিজেপির কট্টর বিরোধিতা করছেন তাই দিল্লিতে তৃণমূল ভোটের ময়দানে না থাকলেও তাঁর রাজনৈতিক বার্তা কী হবে? মমতা কি দিল্লিতে আপকে জেতানোর ডাক দেবেন? আপ নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে মমতার সুসম্পর্ক আছে এবং ঘটনাচক্রে আপ ও তৃণমূল দুই দলেরই নির্বাচনী পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোর, তাই বিজেপিকে হারাতে আপকে জেতানোর কথা বলতেই পারে তৃণমূল। বিশেষত, মমতা নিজেই যখন বারবার বলেন বিজেপিকে হারাতে অবিজেপি শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করা দরকার। ফলে দিল্লিতে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় অবিজেপি দল আপকে সমর্থনের ঘোষণা করতেই পারেন মমতা। কিন্তু তা যদি না করেন! জাতীয় রাজনীতিতে তার তাৎপর্যও কিন্তু অর্থবহ হয়ে উঠবে এবং বিজেপির সঙ্গে গোপন বোঝাপড়ার অভিযোগটি এরাজ্যের রাজনৈতিক চর্চায় ফের ভেসে উঠবে।