কলকাতা পুরভোটে প্রার্থী হতে নারাজ বিজেপির রাজ্য নেতারা

কলকাতা পুরভোটেও ‘মুখ’ খুঁজে পাচ্ছে না বঙ্গ-বিজেপি৷ এই ভোটে প্রার্থী হতে রাজি নন বঙ্গ-বিজেপির কোনও রাজ্যস্তরের নেতা৷ অথচ ভোট হতে পারে এপ্রিল মাসে৷ রাজ্য বিজেপি নেতাদের এই মনোভাবের প্রভাব পড়ছে জেলাস্তরের বাকি শতাধিক পুরসভার নির্বাচনেও৷ রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, পরাজয় নিশ্চিত জেনেই বিজেপির তথাকথিত হেভিওয়েটরা কলকাতার ভোটে প্রার্থী হতে রাজি হচ্ছেন না৷

বিজেপি প্রথম থেকেই বলে আসছে, ২০২০-এর এই পুরভোট কার্যত একুশের বিধানসভা ভোটের সেমিফাইনাল৷ কিন্তু তারকাহীন দল নিয়ে সেমিফাইনাল খেলতে নেমে মুখ পোড়ানোর অর্থ কী, ইতিমধ্যেই এই প্রশ্ন উঠেছে বিজেপির অন্দরে৷

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, “দলের বেশ কয়েক জন প্রথম সারির নেতা কলকাতা পুরভোটে লড়তে পারেন।” দলের আর এক নেতা মুকুল রায়ও বলেছেন, “কলকাতা পুরসভার ভোটকে যে আমরা হেলাফেলা করছি না, সবার আগে সেটা শহরের মানুষকে বোঝাতে দলের হেভিওয়েট নেতাদের টিকিট দেওয়া যেতে পারে।”

দিলীপ-মুকুলের এই বার্তায় কার্যত চটেছেন দলের অধিকাংশ নেতা৷ এই ‘ক্রোধ’ সংবাদমাধ্যমের সামনে উগড়ে দিতেও পিছপা হননি দলের নেতারা৷
বঙ্গ-বিজেপির তথাকথিত হেভিওয়েটরা সংবাদমাধ্যমে কী বলেছেন?

◾রাহুল সিনহা, বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক :-

ইনি কলকাতার ভোটার ও পুর এলাকায় বিজেপির সবথেকে ওজনদার নেতা। লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে অসংখ্যবার ভোটে লড়েছেন তিনি। কিন্তু কোনওবারই জেতেননি। এই রাহুল সিনহাকে সামনে রেখেই কলকাতার ভোটে যেতে চাইছে দল৷ আর এর উত্তরে রীতিমতো বিরক্তির সুরে রাহুল সিনহা বলেছেন, “আমাকে কেন জিজ্ঞেস করছেন? আর লোক খুঁজে পাচ্ছেন না?
এত খারাপ দিন আসেনি যে, কাউন্সিলর হওয়ার ভোটে লড়তে হবে। এই প্রস্তাব দেওয়ার মতো ওজনই রাজ্য বিজেপির কারও নেই। যাঁরা এ সব বলছেন, তাঁদের জিজ্ঞেস করুন। তাঁরাও তো হেভিওয়েট নেতা!”

◾রাজকমল পাঠক, রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি :

দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা৷ রাজকমলবাবুর স্পষ্ট কথা, “গত লোকসভা ভোটে লড়তে চেয়েছিলাম। পার্টি টিকিট দেয়নি। পুরভোটে লড়ার কোনও প্রশ্ন নেই।”

◾সায়ন্তন বসু, রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক:

“আমি সল্টলেকের ভোটার। ফলে, কলকাতা পুরসভার ভোটে লড়ার কোনও প্রশ্নই নেই।”

◾প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক :

“পার্টি চাইলে পুরভোটে লড়তে হবে।”

দলের যে সব নেতারা কলকাতা পুরভোটে প্রার্থী হতে নারাজ, তাঁদের যুক্তি, পুরভোটে কোনও ভাবে পরাজিত হলে পরের বছর বিধানসভা ভোটে লড়া কঠিন হবে৷ গায়ে ‘হেরো প্রার্থী’র তকমা লেগে যাবে।

দলের নেতাদের এ ধরনের মনোভাবে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ প্রতিক্রিয়া খুবই স্পষ্ট৷ তিনি বলেছেন, “তাঁরা তো এর আগেও হেরেছেন। লোকসভায় হেরেছেন, বিধানসভায় হেরেছেন। হেরেই তো এসেছেন। জিতলেন কোথায়! হারাটা আমাদের কাছে নতুন নয়। জেতাটা নতুন।”

রাজ্য সভাপতির এই মন্তব্য কি মূলত রাহুল সিনহার উদ্দেশ্যে, প্রশ্ন উঠেছে মুরলী ধরের অন্দরেই৷

Previous articleবাজেট অধিবেশনের শুরুতেই বিরোধী বিক্ষোভ সংসদ চত্বরে
Next articleমাওবাদী বনাম পুলিশ, রুদ্ধশ্বাস বই প্রাক্তন নগরপালেরই হাতে