বঙ্গভঙ্গের ৩ বছর পরে তখনকার অবিভক্ত ভারত, বর্তমানে বাংলাদেশের বরিশালে তাঁর জন্ম৷ দিল্লির সবচেয়ে প্রবীণ ভোটার এক বাঙালি বৃদ্ধা৷ নাম, কালীতারা মণ্ডল৷

১১১ বছর বয়সেও ভোট দেওয়ার উৎসাহে ঘাটতি নেই৷ শনিবার সকাল সকালই বাড়ির আর পাঁচজনের সঙ্গে তৈরি হয়ে যান কালীতারাদেবী৷ নির্বাচন কমিশন দিল্লির চিত্তররঞ্জন পার্কের নির্দিষ্ট ভোটকেন্দ্রে কালীতারাদেবী ও তাঁর পরিবারকে নিয়ে যেতে এবং বাড়িতে ফিরিয়ে দিতে বিশেষ গাড়ির ব্যবস্থা করেছিলো৷ সেই গাড়ি চড়েই ভোট দিয়ে আসেন কালীতারাদেবী৷
আর ভোট দেওয়ার পর বাইরে এসে তিনি বললেন, “সকলের উচিত ভোট দেওয়া, কেননা প্রতিটি ভোট গুরুত্বপূর্ণ”৷

অবিভক্ত ভারতে ১৯০৮ সালে জন্ম কালীতারা মণ্ডলের। উপমহাদেশের নানা ভাঙাগড়া দেখেছেন। দেখেছেন দু’বারের দেশভাগ। ভারতে দু’-দু’বার শরণার্থী হিসেবে কাটাতে হয়েছে তাঁকে। শেষবার এসে আর ফিরে যাননি বাংলাদেশে৷ এ দেশের রাজধানী শহরেই বাসস্থান খুঁজে পেয়েছেন৷ ১৯৭১ সালের দেশভাগের পর থেকে কালীতারার পরিবার দিল্লির চিত্তরঞ্জন পার্কের বাসিন্দা।

এদিন সংবাদ সংস্থা PTI-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজের ভোটদানের অভিজ্ঞতার কথাও বলেছেন তিনি৷ ভারতের প্রায় সব ক’টি নির্বাচন তিনি দেখেছেন৷ শুধু দেখাই নয়, প্রতিটি নির্বাচনেই অংশ নিয়েছেন প্রবীণ এই ভোটদাতা। তাঁর স্মৃতিতে এখনও ভাসছে ব্যালটে ভোট দেওয়ার অভিজ্ঞতাও। তিনি বলেন, ‘‘হ্যাঁ, আমি মনে করতে পারি, ভোটের লোকরা আমার আঙুলের ছাপ নিত। তারপর ব্যালটটা ভাঁজ করে বাক্সে ফেলতে হত। আমি তো বড় মেশিনেও (EVM) ভোট দিয়েছি।”
কালীতারার পরিবারের সবচেয়ে ছোট সদস্য তাঁর সাত মাসের নাতনি জন্মেছে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের ৭ মাস পর!
কালীতারাদেবীর ছেলে সুখরঞ্জন বলছেন, ‘‘মা ভোট দিতে বেশ আগ্রহী। গত বছর লোকসভা নির্বাচনের সময়ও বুথে গিয়ে ভোট দিয়ে এসেছিলেন। এবারও হাতে কালি লাগানোর জন্য এতটাই উৎসুক তিনি যে সকালেই তৈরি হয়ে যান৷” কালীতারা মণ্ডলের নাতি সুরজ তাঁর ঠাকুমার সঙ্গেই ভোট দিতে এসেছিলেন।
দিল্লির এবারের ভোটার তালিকায় ১৩২ জন ভোটার রয়েছেন যাঁদের বয়স ১০০ পেরিয়েছে। এর মধ্যে ৬৮ জন পুরুষ ও ৬৪ জন মহিলা। ভোটের দিন এঁদের প্রত্যেককেই নির্বাচন কমিশন ‘VIP’ হিসেবে গণ্য করছে বলে আধিকারিকরা জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন-ভারত-বিরোধিতা! ইমরানের মুখের উপর দরজা বন্ধ করল সৌদি আরব
