দিল্লির ভোট : দেশের মানুষের এক ডজন প্রশ্ন বিজেপিকে

দিল্লির ভোট কিছু প্রশ্ন তুলে দিয়ে গেল। যে প্রশ্ন আসলে দেশের মানুষেরও। যার উত্তর দেওয়ার দায়িত্ব বিজেপির, দায়িত্ব নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহর।

১. সিএএ-এনআরসি দেশের রাজধানীর মানুষই প্রত্যাখ্যান করেছে। কী বলবে শাসক দল?

২. শাহিনবাগের রাস্তা অবরোধ করে অবস্থান-বিক্ষোভ বেআইনি হতে পারে, শাহিনবাগের মানুষের দাবি নিয়ে দিল্লির সাধারণ মানুষ কিন্তু একটিও বিরূপ কথা বলেননি। কী বলবে বিজেপি?

৩. কেজরিওয়াল সন্ত্রাসবাদী বলেছিল বিজেপি। ভোটে পর্যুদস্ত হওয়ার পথে বিজেপি কী বলবে?

৪. এই ভোট জেএনইউতে হামলা, জামিয়া মিলিয়ায় হামলার উত্তর। পড়ুয়াদের উপর গুলি চালানোর জবাব। কী বলবে বিজেপি?

৫. ভোটের মুখে দিল্লিবাসীর জন্য দেদার ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁকে বিশ্বাস না করে কেজরিওয়ালকে কেন বিশ্বাস করলেন দিল্লিবাসী? জবাব দিতে হবে মোদি-অমিত জুটিকে।

৬. ৩৭০, তিন তালাক, রাম মন্দির সব ইস্যু নিয়েই প্রচার ছিল বিজেপির। মানুষ দেশভক্তির সেই স্লোগানকে কেন মুল্য দিল না? জবাব দিতে হবে বিজেপিকে।

৭. বলা হয়েছিল পাকিস্তানের ভাষা বিরোধীদের মুখে। একটি কথারও জবাব দেয়নি আপ। শুধু বলেছে, কাজের নিরিখে ভোট দিন। মানুষ কেন দেশবিরোধীদের ভোট দিল। যার অর্থ, দিল্লির মানুষও দেশ বিরোধী? কী জবাব দেবেন বিজেপি নেতারা?

৮. পশ্চিমবঙ্গে যেমন রাজ্যপালকে সামনে রেখে রাজনীতি করছে বিজেপি, দিল্লিতেও লেফটেন্যান্ট গভর্নরকে সামনে রেখে আপ সরকারকে ব্যতিব্যস্ত করেছে বিজেপি। মানুষের ভোটে কিসের জবাব পেল বিজেপি?

৯. ভোটের মুখে মেরুকরণ চূড়ান্ত করতে যোগী আদিত্যনাথকেও নিয়ে এসেছিল বিজেপি। তিনি বলেছিলেন ‘বোলি সে কাম না হোনে সে গোলি সে কাম করনা পড়ে গা’। বিজেপি কী বন্দুকে গুলি ভরে রেখেছে?

১০. দেশে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, বেকারত্ব, উন্নয়নের হার, তেলের দাম, দিল্লির দূষণ নিয়ে একটিও কথা বলেননি মোদি-অমিত জুটি। মানুষের আসল সমস্যা থেকে মুখ সরিয়ে কেন জাতীয়তাবাদের হিড়িক তোলা হলো? কেজরিওয়ালকে আটকানো যাবে না সেটা বুঝেই কি দেশবিরোধী তকমা দেওয়ার স্ট্র‍্যাটেজি?

১১. দেশের প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাজি ধরে প্রেস্টিজ ফাইট করেছিলেন দিল্লির ভোটকে। কে আসেননি প্রচারে! মহান বিপ্লবী কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরকে। উল্টোদিকে একা কেজিরিওয়াল। সেই লড়াইয়ে হার কার্যত নিশ্চিত। এরপরেও কী দেশের মানুষের উন্নয়নের কথা না বলে হিন্দু আর জাতীয়তাবাদের রাজনীতি চালাবে বিজেপি?

১২. সাহস থাকলে বিজেপি নেতৃত্ব নিজেদের আসন বৃদ্ধি বা ভোট বৃদ্ধির বড়াই না করে বলুন, তাঁদের ইস্যু মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাঁদের সব অস্ত্র মানুষ ফিরিয়ে দিয়েছেন। কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকার সুবিধার সব অস্ত্র তাঁরা প্রয়োগ করেছেন। কিন্তু মানুষ কেজরিওয়ালের উন্নয়নের পক্ষেই ভোট দিয়েছেন। বিজেপি আর কবে শাক দিয়ে মাছ না ঢেকে উন্নয়নের রাজনীতি করবে?

Previous articleএখনও ৫৫টি আসন জয়ের স্বপ্নে বিভোর বিজেপির মনোজ!
Next articleশেষ কোথায় কেউ জানে না, চিনে করোনাভাইরাসে মৃত্যু ১০১১ ছাড়াল