খেজুরি বন্দর সৎসঙ্গ আশ্রমের পাশে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের ৫২ তম বসন্তোৎসবে তিনি কাজের চাপে যোগ দিতে না পারলেও নিজের হাতে চিঠি লিখে পাঠিয়েছেন। সেচ, পরিবহন ও জলসম্পদ উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী সেই চিঠি নিয়ে আসেন। খেজুরি সৎসঙ্গ আশ্রমের অধ্যক্ষ দীপঙ্কর মণ্ডলকে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর চিঠিতে জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার আশ্রমের আরও উন্নতিকল্পে সর্বতোভাবে পাশে থাকবে। মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা নিয়ে শুভেন্দু শুধু উপস্থিত হওয়াই নয়, প্রথমবার খেজুরি সৎসঙ্গে পা রেখে ভক্তদের সঙ্গে কীর্তনে মেতে উঠলেন রাজ্যের পরিবহণ ও সেচ মন্ত্রী। খোল-করতাল আর খঞ্জনির ধ্বনিতে আপ্লুত হয়ে উপস্থিত ভক্তদের সঙ্গে কীর্তনে মেতে উঠলেন মন্ত্রী। এমনই বিরল ঘটনার সাক্ষী রইলেন খেজুরি সৎসঙ্গের হাজার হাজার অনুগামী।

পূর্ব মেদিনীপুরে বঙ্গোপসাগরের মোহনা সংলগ্ন এলাকায় অনুকূল ঠাকুরের বসন্ত উৎসবে যোগ দিয়ে শুভেন্দু বলেন, “অনুকূল ঠাকুর বর্তমান বাংলাদেশের পাবনা জেলায় হিমাইতপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এত বছর পরেও সনাতন ধর্মের প্রচারক শ্রীশ্রী ঠাকুরের মানবপ্রেম আজও আমাদের শিক্ষা দেয়। নিজে না খেয়েও সবাইকে খাওয়াতেন তিনি। তাই এই মন্দির দর্শনে আগত ভক্ত, যাঁরা নিজেদের অন্তর্নিহিত আধ্যাত্মিক চেতনাকে পরিপূর্ণভাবে কাজে লাগাতে পারেন তার জন্য যে কোনও ধরনের প্রয়োজনে আমি পাশে থাকব।”

ইতিমধ্যেই মন্দির কর্তপক্ষের আবেদনের ভিত্তিতে ঠিক হয়েছে, অতিথি নিবাস, শুদ্ধ পানীয় জল ও উন্নত বিদ্যুৎ পরিষেবা দিয়ে সাজিয়ে তোলা হবে মন্দির চত্বর। উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রাম সৎসঙ্গকে ইতিমধ্যেই বিশাল জমি দান করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। একথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন শুভেন্দু। খেজুরি সৎসঙ্গের মঞ্চে উঠেই প্রথমে তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো একটি শুভেচ্ছা বার্তা পাঠ করে শোনান। মুখমন্ত্রী তাঁর বার্তায় জানিয়েছেন, “আমি আসতে পারলাম না। শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের নির্দেশে খেজুরিতে বঙ্গোপসাগরের মোহনার কাছে সৎসঙ্গের মন্দিরটি তৈরি হয়েছে। শ্রী শ্রী ঠাকুরের নির্দেশেই এখানে বসন্তোৎসব পালিত হয়। দেশের নানা প্রান্ত থেকে সৎসঙ্গীরা এখানে আসেন। আমি উৎসবের সাফল্য কামনা করি।” এই বার্তা সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়ার পর শুভেন্দু বলেন, “আশ্রমের অধ্যক্ষ দীপঙ্কর মণ্ডল আমার ভাতৃপ্রতীম। দীপঙ্করবাবুকে মুখ্যমন্ত্রীও খুব ভালোবাসেন। এই আশ্রমের আরও উন্নতিকল্পে আমরা প্রচুর কাজ করব।” ঘনিষ্ঠ মহলে শুভেন্দুবাবু জানিয়েছেন, খেজুরি পর্যটনকেন্দ্র হওয়ার জন্য আদর্শ। ইকো টুরিজমের পাশাপাশি আশ্রমের আধুনিকীকরণ হলে, দেশ-বিদেশের পর্যটকরাও ভিড় করবেন এই এলাকায়। আখেরে রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তিই আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। খেজুরি আশ্রমের অধ্যক্ষ দীপঙ্কর মণ্ডল জানিয়েছেন, “মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী কথা দিলে কথা রাখেন। শুভেন্দুবাবু আশ্রম থেকে ফিরে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আশ্রমে উন্নয়ন প্রকল্পের প্রাথমিক কাজের ব্যবস্থা শুরু হয়েছে।

দেশের প্রথম ডাকঘরটি গড়ে উঠেছিল খেজুরি আশ্রম সংলগ্ন এলাকায়। এখানেই ইতিউতি ছড়িয়ে রয়েছে বহু প্রাচীন স্থাপত্যের নিদর্শন। যা সবই এখন ভগ্নপ্রায়। মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর কথা থেকে স্পষ্ট যে তিনি দেশের পর্যটন মানচিত্রে খেজুরি ও এই সৎসঙ্গ আশ্রমটিকে আলাদা চেহারায় দেখতে চান। এদিন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন এলাকার বিধায়ক রণজিৎ মণ্ডল, আশ্রমের অধ্যক্ষ দীপঙ্কর মণ্ডল-সহ অন্যান্য ভক্তবৃন্দ।

 
Previous articleমঙ্গলে মাধ্যমিক, পুলিশের বিশেষ ব্যবস্থা পরীক্ষার সময়ে
Next articleশপথ নিলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল, আসেননি মোদি