দেশজুড়ে দমবন্ধ পরিস্থিতি৷ দিল্লির মৃত্যু-মিছিল দেখে দল-মত-সম্প্রদায় নির্বিশেষে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত৷
বিপরীত ছবিও আছে৷
সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প উড়িয়ে নিরবিচ্ছিন্নভাবে যারা দেশজুড়ে সৌহার্দ্য আর সম্প্রীতির বাতাস ছড়িয়ে দিচ্ছেন দেশজুড়ে, তাদেরই অন্যতম বাংলা ইয়াসিন পাঠান৷ মন্দিরময় পাথরার প্রাণপুরুষ তথা পাথরা পুরাতত্ত্ব সংরক্ষণ কমিটির সম্পাদক ইয়াসিন পাঠান এবং ফটোগ্রাফার্স এ্যাসোসিয়েশন অফ মেদিনীপুরের উদ্যোগে
মেদিনীপুর শহর একটু দূরে নাচগানের মধ্য দিয়ে পালিত হলো বসন্ত উৎসব৷

পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক ড. রশ্মি কমল, অতিরিক্ত জেলাশাসক সৌর মন্ডল,এসডিও ফারানাজ খাঁনম এবং ইয়াসিন পাঠান।
পশ্চিম মেদিনীপুরের পাথরা এলাকার ৩৪টি হিন্দুমন্দির সংরক্ষণে কয়েক দশক ধরে ইয়াসিন পাঠানের লড়াইয়ের কথা আজ গোটা রাজ্য তথা দেশ জানে৷ তাঁর উদ্যোগেই জীর্ণ ওই মন্দিরগুলি সংরক্ষণ করার কাজ শুরু হয়৷ এখন ওই পাথরা-য় পর্যটনকেন্দ্র তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া। পাঠানের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে পাথরায় শুরু হয়েছে মন্দির সংরক্ষণের জন্য জমিদাতাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কাজও। সংরক্ষণের কাজ শুরুর সময় সক্রিয় বিরোধিতা করলেও হিন্দু-মুসলিম, দুই সম্প্রদায়ই আজ ইয়াসিন পাঠানের এই উদ্যোগের পাশে৷
রাষ্ট্রপতির হাত থেকে কবীর পুরস্কার পাওয়া ইয়াসিন পাঠানের উদ্যোগেই পাথরা পুরাতত্ত্ব সংরক্ষণ কমিটির সহযোগিতায় ‘ফটোগ্রাফার্স এ্যাসোসিয়েশন অফ মেদিনীপুর’ সংস্থা মন্দিরময় পাথরার মাঠেই “বসন্ত উৎসব”-এর আয়োজন করে৷ জেলার শিল্পী, কবি ও জেলাশাসক-সহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের উপস্থিতিতে এই উৎসব নজর কেড়েছে গোটা জেলার৷ জাতি-ধর্ম-বর্ণ ভুলে উৎসবে সামিল হন সাধারন মানুষ৷
উৎসবের উদ্বোধন করেন জেলাশাসক রশ্মি কমল৷ ছিলেন বিধায়ক দীনেন রায়, এসডিও দীপনারায়ণ ঘোষ, জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক অনন্যা মজুমদার, বিডিও ফারহানাজ খানম প্রমুখ। আবির খেলা, আবৃত্তি, গান, নাচের মধ্য দিয়ে করা হয় বসন্ত আবাহন৷
এই “বসন্ত উৎসব” প্রসঙ্গে
ইয়াসিন পাঠান বলেছেন,
“হিংসার আগুনে দেশকে জ্বালিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে৷ সেই পরিস্থিতিতে এ ধরনের সম্প্রীতি-মহোৎসবের ভূমিকা ও গুরুত্ব অসীম৷
জেলায় জেলায় সরকারি উদ্যোগেই ছড়িয়ে পড়ুক এ ধরনের মহোৎসব। সম্প্রীতির পক্ষে সম্প্রদায় নির্বিশেষে সাধারন মানুষের সমবেত আওয়াজে দেশছাড়া হবে ওই ধর্ম-ব্যবসায়ীরা৷”