করোনাভাইরাস: অযথা আতঙ্ক নয়, এই নিয়মগুলি অবশ্যই মেনে চলুন

মারণ করোনাভাইরাস বা কোভিড১৯ -এর দাপটে বিশ্বস্বাস্থ্যে সঙ্কট ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু’। এখনও পর্যন্ত বিশ্বের ৭০ টি দেশে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়েছে, মৃত্যু হয়েছে তিন হাজারের বেশি মানুষের, আক্রান্ত প্রায় ৮৯ হাজার। অন্য কোনও প্রাণী বা নির্দিষ্ট কোনও খাবার থেকে নয়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটছে একমাত্র আক্রান্ত মানুষের দ্বারাই। মুখ, নাক ও চোখের মিউকাস মেমব্রেনের মাধ্যমেই সংক্রমণের আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও চিকিৎসক মহলের বক্তব্য, প্রতিষেধক বা ওষুধ আবিষ্কার না হওয়ায় রোগ সামলাতে বেগ পেতে হচ্ছে ঠিকই, তবে কয়েকটি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই করোনার সংক্রমণ এড়ানো সম্ভব। তাই অযথা আতঙ্কিত না হয়ে বরং এই নিয়মগুলি দেখে নিন, যা মেনে চললে আপনি সুরক্ষিত থাকতে পারেন।

1) সারা দিনে বারবার জল দিয়ে হাত ধুয়ে নিন। পরিস্কার জলে হাত ধোবেন। খাবার আগে জল ও সাবান দিয়ে ভাল করে হাত ধুয়ে নেবেন। বাইরে যাতাযাতের সময় রানিং ওয়াটারে হাত ধোয়ার সমস্যা থাকলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার লোশন দিয়ে হাত মুছে নিন।

2) বাইরে সবসময় রুমাল বা ন্যাপকিন সঙ্গে রাখুন। যখন তখন চোখে, নাকে বা মুখে হাত দেবেন না। মুখ, চোখ, নাক মোছার হলে ন্যাপকিন বা রুমাল বা পরিস্কার কাপড় ব্যবহার করুন।

3) বাইরের খাবার যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। ঘরে তৈরি সুষম খাদ্যই সেরা। শরীরে ফ্লুইডের ঘাটতি যাতে না হয় সেজন্য যথেষ্ট পরিমাণে জল পান করুন।

4) আপাতত করমর্দন বা আলিঙ্গনের রীতি এড়িয়ে চলুন।

5) রাস্তাঘাটে বা বাসে, ট্রেনে হাঁচি, কাশির সময় অবশ্যই হাত দিয়ে অথবা রুমাল বা ন্যাপকিন দিয়ে মুখ ঢেকে নিন। হাঁচি-কাশির সময় মুখ ঢাকার কথা অন্যদেরও বলুন, প্রচার করুন।

6) এই সিজনে অনেক সময়ই ইনফ্লুয়েঞ্জা ও সাধারণ সর্দি-কাশি হয়ে থাকে। ফলে কারুর জ্বর-সর্দি-কাশি মানেই করোনা সংক্রমণ, এমন কখনোই ভাববেন না। তবে কেউ জ্বর-সর্দি-কাশি নিয়ে ভিড়ের মধ্যে ঘুরবেন না। অন্যদের থেকে কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখুন। চেষ্টা করুন এইসময় বাড়িতে থাকতে।

7) বয়স্ক মানুষ ও শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। ফলে সংক্রমণের আশঙ্কাও অনেক বেশি। এদের সাবধানে রাখুন, ভিড় এড়িয়ে চলুন।

8) মাংস খাওয়ায় কোনও সমস্যা নেই। গুজবে কান দেবেন না। তবে মাংস খুব ভাল করে সিদ্ধ করে তবেই খাবেন। অসুস্থ বা রোগাক্রান্ত পশু-পাখীর মাংস কখনোই খাবেন না।

9) দু-তিনদিনে জ্বর-সর্দি-কাশি না কমলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

10) নিউমোনিয়ার ভ্যাকসিন নেওয়া থাকলে করোনা সংক্রমণ এড়ানো যায়, এই ধারণা ভুল। অসুস্থ হলে চিকিৎসকের মতামতই নিন।

11) সর্দি-কাশি নিয়ে কোনও ভিড়ের মধ্যে যাওয়ার থাকলে মাস্ক ব্যবহার করুন। এয়ারপোর্ট ও বিমানের ভিতরে সব যাত্রীর বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক ব্যবহার করা উচিত। জাহাজের যাত্রীদেরও অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।

12) সতর্কতা হিসাবে বিদেশ থেকে সদ্য আগত কোনও ব্যক্তির খুব কাছাকাছি যাবেন না। কথা বলার সময় কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন।

13) কোনও জড় পদার্থ থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের কোনও আশঙ্কা নেই। ফলে অন্য দেশ থেকে আমদানি করা কোনও সামগ্রী থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হতে পারে, এই ধারণা ভুল। একমাত্র করোনা আক্রান্ত মানুষই সংক্রমণ ঘটাতে সক্ষম।

14) খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া এই সময় বিদেশ ভ্রমণ না করাই ভাল।

আরও পড়ুন-দমদম বিমান বন্দরে করোনা আতঙ্ক! পরীক্ষা করেই ছাড়া হচ্ছে যাত্রীদের

Previous articleবাংলা ভাষার কবিতা পার্বণ ঘিরে জমজমাট নন্দন চত্বর
Next articleদিল্লির হিংসা ভোলাতেই করোনা আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে, নাম না করে বিজেপিকে তোপ মুখ্যমন্ত্রীর