তাপসকে মেরে ফেলা হয়েছে, বিস্ফোরক অভিযোগ নন্দিনী পালের

“আমার স্বামীকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি ন্যায়বিচার চাই”৷

অভিনেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ তাপস পালের মৃত্যু নিয়ে ঠিক এই বিস্ফোরক মন্তব্যই করলেন তাঁর স্ত্রী নন্দিনী পাল। মুম্বইয়ে মেয়ের কাছে এখন আছেন নন্দিনীদেবী৷ মুম্বই যাওয়ার কারন হিসাবে নন্দিনী পাল বলেছেন, আইনি পদক্ষেপ করতেই তিনি এখানে এসেছেন৷ সেখান থেকেই একটি সংবাদমাধ্যমে এই গুরুতর অভিযোগটি এনেছেন তিনি৷ প্রকাশিত ওই সংবাদে প্রয়াত তাপস পালের স্ত্রী নন্দিনীর বয়ানে বলা হয়েছে, “আমার স্বামীকে ওই হাসপাতাল মেরে ফেলেছে। আমি এর ন্যায়বিচার চাইতেই মুম্বইয়ে এসেছি।”

প্রসঙ্গত, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মুম্বইয়ের বান্দ্রার এক হাসপাতালে মারা যান তাপস পাল৷ যে হাসপাতালে প্রাক্তন সাংসদকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছিলো, সেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ওই সংবাদমাধ্যমে অভিযোগ আকারে নন্দিনী পাল বলেছেন, “গত ১ ফেব্রুয়ারি অসুস্থ তাপসকে তিনি বান্দ্রার একটি হাসপাতালে ভর্তি করেন। তাপসের অসুস্থতার সম্পর্কে বলতে গেলে সেখানকার চিকিৎসক তা শুনতে রাজি হননি। উল্টে বলেন, রোগীর ‘পাস্ট হিস্ট্রি’ শুনতে তিনি উৎসাহী নন। অভিযোগ, অসুস্থ তাপস পালকে দেখে ওই চিকিৎসক নন্দিনীকে প্রশ্ন করেন, “আপনি কেন ওঁকে হাসপাতালে এনেছেন?” এমনকি ৫০ হাজার টাকা জমা না করলে তাপসের চিকিৎসা শুরু করা হবে না বলে হাসপাতালের তরফে জানানো হয় বলে নন্দিনীর অভিযোগ। কিন্তু মাঝরাতে তাঁর কাছে অত টাকা না থাকায় মেয়ের বাড়িওয়ালার সাহায্যে টাকার বন্দোবস্ত করে তাপসকে ভেন্টিলেশনে দিতে হয় বলে দাবি নন্দিনীর! গত ৭ ফেব্রুয়ারি তাপস পালের ভেন্টিলেশন খুলে দেওয়া হয়। তাপস তখন একেবারেই সুস্থ ছিলেন বলে দাবি করে তাঁর স্ত্রীর অভিযোগ, “এর পর থেকেই সমস্যা শুরু হয়৷ ঠিকমতো খেতে দেওয়া হত না তাপস পালকে। নার্সরা ক্যাফেটেরিয়া থেকে খাবার এনে খাওয়াতে বলত। এ নিয়ে তাঁর মেয়ের সঙ্গে এক দিন নার্সদের ঝামেলাও হয়ে বলে নন্দিনীর অভিযোগ। তাঁর আরও দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ফের অসুস্থ হয়ে যান তাপস পাল। আমার সম্মতিতেই ডায়ালিসিস শুরু হয়। প্রকাশিত সংবাদে নন্দিনী বলেছেন, “হঠাৎ দেখি তাপসকে এক দিন বেঁধে রেখেছে। কেন জানতে চাওয়ায় ওঁরা বলেন, এখন শিফ্টিং চলছে। ওঁকে কারও নজরে রাখা সম্ভব নয়।” নন্দিনী অভিযোগ করেছেন, তাপস পালের প্রস্রাব স্বাভাবিক হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে ক্যাথিটার পরিয়ে রাখা হয়। এই পরিস্থিতিতেই তাঁরা ঠিক করেন,১৭ ফেব্রুয়ারি তাপসকে নিয়ে কলকাতায় ফিরবেন। কিন্তু সে দিন রাতেই সব ওলটপালট হয়ে যায় বলে দাবি করেন তিনি। নন্দিনীর দাবি, ওই দিন হাসপাতাল থেকে ফোন করে জানানো হয় তাপস পালের হিমোগ্লোবিন কমে ৩.৫ হয়ে গিয়েছে। নন্দিনীর কথায়, “ওই দিন সকালেই আমি দেখেছি তাপসের হিমোগ্লোবিন ৯। আশ্চর্য রকম ভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওকে রক্ত না দিয়ে আমাদের অনুমতির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এর পর হয় কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট। পর পর। তখনও সিনিয়র কোনও ডাক্তার নেই। এক জন ট্রেনি আর অন্য এক ডাক্তার।”
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়েছেন নন্দিনী পাল। তিনি বলেছেন, “তাপসের সম্পর্কে এত অন্যায়, এত ভুল কথা শুনতে হয়েছে যে, মেয়ে এবং আমি আর পেরে উঠছি না। তবে এই মৃত্যুর বিচার আমি চাইবই। ছাড়ব না।”

নন্দিনীর অভিযোগ নিয়ে হাসপাতালের সঙ্গে ওই সংবাদমাধ্যম যোগাযোগ করলে হাসপাতালের পিআরও কর্ণ দেলিমা বলেন, “এ বিষয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে যা জানানোর জানাব।”

আরও পড়ুন-২০ মার্চ নির্ভয়া মামলায় দোষীদের ফাঁসির দিন ধার্য করল দিল্লির পাটিয়ালা হাউস কোর্ট

Previous articleবধূ নির্যাতনে অভিযুক্ত ফ্লিপকার্টের কর্ণধার
Next article“সৌজন্যে কাটমানি, কলকাতা টু মন্দারমনি”! তৃণমূল কাউন্সিলরের নামে শহরের বুকে নজিরবিহীন হোডিং