‘বিশ্ববাংলা সংবাদ’-এর জের, সাতসকালেই অদিতিকে রেল পুলিশের জোড়া ফোন

মহিলা সাংবাদিক “নিগ্রহ”র ঘটনায় নড়েচড়ে বসলো রেল পুলিশ। মঙ্গলবার সাতসকালেই সাংবাদিক অদিতি দে’র মোবাইলে পরপর দুটি ফোন আসে। ফোন দুটি করেন শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার GRP-এর দুই আধিকারিক।

অদিতি জানাচ্ছে, সকাল ৬.৪৫ মিনিট নাগাদ প্রথম ফোন করেন এক রেল পুলিশ আধিকারিক। গোটা ঘটনা তিনি শোনেন। এর কিছুক্ষণ পর আরেক আধিকারিক ফোন করেন আদিতিকে। তিনি জানান, চিন্তার কারণ নেই। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। রেল পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে এই তদন্ত শুরু করেছে। একইসঙ্গে অদিতিকে ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে শিয়ালদহ জিআরপি-তে একটি অভিযোগ দায়ের করতে বলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গতকাল দোলের রাতে ‘এখন বিশ্ববাংলা সংবাদ’ “লোকাল ট্রেনে আক্রান্ত মহিলা সাংবাদিক! পার্ক সার্কাসে অবাধে ছোঁড়া হলো পাথর-মূত্র” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করে।

ঠিক কী ঘটেছিল? অফিস সেরে ট্রেনে করে বাড়ি ফিরছিলেন এক মহিলা যাত্রী। নাম অদিতি দে। নিত্যযাত্রী। পেশায় সাংবাদিক। চড়েছিলেন শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় ডাউন ডায়মন্ডহারবারগামী লোকাল ট্রেনে। কিন্তু পার্ক সার্কাস স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়তেই শুরু হয় দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব। অসভ্যতা। ট্রেন লক্ষ্য করে ইঁট, রেল লাইনের পাথর, এমনকী মূত্রও প্লাস্টিকের প্যাকেটে নিয়ে ছুঁড়তে থাকে ওই দুষ্কৃতী দল। এটা এখন শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় পার্ক সার্কাস এবং মল্লিকপুর স্টেশনের নিত্য ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এবার সেই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভিকটিম অদিতি দে নামের কলকাতার এই মহিলা সাংবাদিক। কী বলছেন তিনি? সাংবাদিকদের বিভিন্ন গ্রুপে হোয়াটস আপ গ্রুপে অদিতি তাঁর তিক্ত অভিজ্ঞতা শেয়ার করে লিখছেন, “অফিস থেকে ফেরার পথে শিয়ালদহ থেকে ডায়মন্ডহারবারগামী লোকাল ট্রেনে সফর করছি। হঠাৎই পার্কসার্কাস থেকে ট্রেন ছাড়ার মুহূর্তেই হটাৎ একদল লোক চলন্ত ট্রেনের দিকে লক্ষ্য করে জানলা দিয়ে মূত্র ছোড়ে এবং ঢিল ছুঁড়ে দেয়। সেই ছোড়া মূত্রে আমি হাফ ভিজে গেছি এবং আর একটুর জন্যে ছোড়া ঢিল-এর হাত থেকে বেঁচে গেছি।

প্রত্যেক দিন এই ঘটনাটি চলছে, সন্ধের পর থেকেই ট্রেনকে লক্ষ্য করে এইভাবে ইট, পাথর, নোংরা ভর্তি প্লাস্টিক ছোড়া হয়।

এইভাবে যে প্রত্যেক দিন ঢিল, ইট, পাথর,নোংরা ভর্তি প্লাস্টিক, মূত্র ছোড়া হচ্ছে, অন্য কোনওদিন যদি এসিড ছোড়া হয় তার দায়িত্ব কে নেবে?

রেল পুলিশ-এর তরফ থেকে পারলে প্লিজ কোনও স্টেপ নিন। নিত্যদিন এইভাবে ইট,পাথর অথবা নোংরা ভর্তি প্লাস্টিক ছোড়া হয় এবং এর কোনও প্রতিকার হচ্ছে না।”

আমরা ‘এখন বিশ্ববাংলা সংবাদ’-এর পক্ষ থেকে এই নিন্দনীয় ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। এবং রেল প্রশাসনকে এই ঘটনার তদন্তের আর্জি জানিয়েছিলাম। শুধু আমরা নয়, বাংলার প্রায় প্রতিটি সংবাদ মাধ্যম এই খবর প্রকাশ করেছে। এবং ঘটনার তদন্তের দাবি করে ধিক্কার জানিয়েছে।

Previous articleশোভন ঘনিষ্ঠ রত্না এবার বাম-কংগ্রেসের মেয়র পদপ্রার্থী! আজ আসন রফা নিয়ে বৈঠক
Next articleবাড়ির ভিতরে লরি!