হঠাৎ করে ছোট বাথরুম

ইউরিন ধরে রাখতে না পারা মাঝ বয়সী মহিলাদের একটি সাধারণ সমস্যা। সামান্য চিকিৎসাতেই এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। এই রোগের লক্ষণ গুলি কী? কোন দিকগুলি নজর রাখবেন? জানালেন ইউরো গাইনোকোলজিস্ট মল্লিনাথ মুখোপাধ্যায়।

কারও বাড়িতে গেলে রাতে ঘুমাতে পারে না শতাব্দী মল্লিক। ঘুমের মধ্যে ইউরিন পাস হয়ে যায় মাঝে মধ্যেই। কেন? বুঝে উঠতে পারেনি কিছুতেই। ঘুমাতে যাওয়ার বেশ কিছুক্ষণ আগে থেকে জল খাওয়া বন্ধ করেছে, রাতে বহুবার এ্যালার্ম দিয়ে রাখে পাতলা ঘুমের জন্য। তবুও কন্ট্রোল করতে পারেনি। লজ্জায় পড়েছে বাড়ির লোকের কাছে, নিজের ছেলে-মেয়ের কাছে। বাইরের কাউকে শেয়ার পর্যন্ত করতে পারেনি এই সমস্যার কথা। বয়স যখনই একটু বেশীর দিকে এমন সমস্যা প্রায় প্রতি বাড়িতেই। কিছুতেই বাথরুম ধরে রাখতে না পারা, হাসতে গিয়ে কাশতে গিয়ে এমনকি হাঁচি হলেও ইউরিন বেড়িয়ে পড়া, সাধারণত মহিলাদের এই সমস্যাকে ইউরিনারি ইনকনটিনেন্সি বলে।
এই রোগটিকে সাধারণত ডাক্তারি শাস্ত্রে দুইভাগে ভাগ করেছে। আর্জেন্সি ইনকনটিনেন্সি আর স্ট্রেস ইনকনটিনেন্সি

কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে

• আর্জেন্সি ইনকনটিনেন্সিতে প্রস্রাবের বেগ হঠাৎ বেড়ে যায়, দিনে-রাতে বারবার বাথরুমে যেতে হয়।
• স্ট্রেস ইনকনটিনেন্সিতে কাশি, হাঁচি কিংবা হাসির দমকে ইউরেথ্রার চারপাশে টিস্যুগুলি আলগা হয়ে যায়। এরফলে প্রেসার ধরে রাখা সম্ভব হয়না।
• সন্তান প্রসবের পরে অনেকক্ষেত্রে এই সমস্যা দেখা যায়।
• আর্জেন্সি ইনকনটিনেন্সি এবং স্ট্রেস ইনকনটিনেন্সির লক্ষণ গুলি একসঙ্গে থাকলে তাকে বলা হয় মিক্সড ইনকনটিনেন্সি।
• কিছু ক্ষেত্রে ওভার অ্যাকটিভ ব্লাডার হঠাৎ প্রস্রাব হয়ে যাওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ ক্ষেত্রেও মহিলাদের বারবার বাথরুমে যেতে হয়।
রোগ নির্ণয়ঃ
প্রথমেই মনে রাখতে হবে এটি নিতান্তই একটি রোগ তাই লজ্জা করবেন না। চিকিৎসকরা সাধারণত এই ধরণের সমস্যায় ইউরিন অ্যানালিসিস, ব্লাড টেস্ট, ইউরোডায়ানমিক টেস্ট করে থাকেন ।

চিকিৎসককে জানানোর ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখবেন

 কতদিন ধরে এই সমস্যায় ভুগছেন? এই সমস্যায় পড়ার আগে কোনও অসুখ হয়েছিল কিনা?
 কোনও রকম চিকিৎসা কিংবা ওষুধ চলছে কি না?
 কখন ইউরিন বেরিয়ে যাচ্ছে(হঠাৎ করে নাকি হাঁচি, কাশি বা হাসির সঙ্গে, অথবা কোনও পূর্বাভাষ ছাড়াই)
 হাসির সঙ্গে কোনও ক্ষেত্রে স্টুল বেড়িয়ে যাচ্ছে কিনা?
চিকিৎসা
 ফিজিওথেরাপি অথবা পেলাভিক ফ্লোর এক্সারসাইজ এই রোগের ক্ষেত্রে খুবই উপযোগী
 এতে না কমলে কুড়ি মিনিটের একটি ছোট্ট অপারেশন করা হতে পারে। এই অপারেশনে দিনের দিনই বাড়ি ফেরা যায়
 আর্জেন্সি ইনকনটিনেন্সির ক্ষেত্রে ওষুধে খুব ভালো ফল পাওয়া যায়।
 মিক্সড ইনকনটিনেন্সির ক্ষেত্রে ব্লাডার কতটা ইউরিন ধারণ করতে পারে অথবা ইউরিন বেড়িয়ে যাওয়ার কারণটা কী? তা পরীক্ষা করে চিকিৎসা করা যায়।

Previous articleকেন রাজ্যসভায় যাওয়ার প্রস্তাব গ্রহণ- কী বললেন গগৈ?
Next articleকরোনা আতঙ্কে ফাঁকা মেট্রো