হিন্দু নববর্ষের পুণ্যতিথি

 

পার্থসারথি গুহ

নববর্ষ কথাটা শুনলেই আমরা নেচে উঠে বলি ১ জানুয়ারির কথা। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক নতুন বছরের শুরুয়াত। তামাম দুনিয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা বাঙালিরা একে অপরকে হ্যাপি নিউ ইয়ারের পাশাপাশি কেতা করে শুভ নববর্ষও বলে থাকি। যদিও বাংলার নববর্ষ বলতে আমাদের মননে খেলা করে একটিই দিন। পয়লা বৈশাখ যা মূলত ইংরেজির ১৫ এপ্রিল থেকে আরম্ভ হয়। তাছাড়াও ভারতের বিভিন্ন জাতি, বর্ণ বা গোষ্ঠীর মানুষ হরেক দিনে নতুন বছরের উদযাপন করে আসছেন। পঞ্জাব থেকে দাক্ষিণাত্য সর্বত্রই এ ছবি দেখা যায়।
কিন্তু যাবতীয় নববর্ষের যদি গোড়ায় যেতে হয় তাহলে নির্দ্বিধায় একটি দিন বা তিথির কথা বলতে হয়। ব্রহ্মার হাত ধরে দুনিয়ার সৃষ্টির প্রারম্ভে সনাতন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ভারতবর্ষ। সেই সত্যযুগ থেকে চৈত্র মাসের শুক্ল প্রতিপদের এই দিনটিকে হিন্দু নববর্ষের আখ্যা দেওয়া হয়। দশাবতারের অন্যতম রামচন্দ্রের রাজ্যাভিষেকের পাশাপাশি কলিযুগে মহারাজ বিক্রমাদিত্যেরও রাজ্যাভিষেক ঘটে আজকের এই পুণ্য তিথিতে। দ্বাপরযুগে পাণ্ডুপুত্র যুধিষ্ঠিরও কৌরবদের পরাজিত করে এই মাহেন্দ্রক্ষণেই রাজা হিসাবে শপথ নেন। এই দিন থেকে নবরাত্রি তিথিও শুরু হয়। দয়ানন্দ সরস্বতী প্রতিষ্ঠিত আর্যসমাজের জন্মদিবসও আজ। সর্বোপরি রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের প্রতিষ্ঠাতা ডাক্তার কেশব বলিরাম হেডগোয়ারের জন্মলগ্নও এই শুভক্ষণে।
হিন্দু নববর্ষ তৎকালীন সমাজে একেকটি বছরের পরিধি ছিল ১০ মাস এবং ৩০৪ দিন ব্যাপী।

এছাড়া রবিশস্য কাটার শুরুও এই শুভ দিনটিতেই। এবং তৎকালীন জমিদারদের প্রজাদের তরফে যে কর প্রদান করা হত তার অগ্রিম এদিনই দেওয়ার রীতিও ছিল প্রাচীনকালে। কালক্রমে যা হয়ে উঠেছে অ্যাডভান্স ট্যাক্স।

Previous articleকয়েক সেকেন্ডেই বুঝে নিন আপনি করোনায় আক্রান্ত কি না
Next articleলকডাউনের তৃতীয় দিনে অন্য ভূমিকায় পুলিশ