“অ্যান্টি করোনা সন্দেশ”! মারণ ভাইরাস মোকাবিলায় অভিনব প্রয়াস হিন্দুস্তান সুইটসে

নরখাদক করোনা ভাইরাসের দাপটে গোটা বিশ্বজুড়ে অস্তিত্ব সঙ্কটের মুখে মানব সভ্যতা। মেঘনাথের মতো আড়ালে থেকে মানবজাতিকে ধ্বংসের খেলায় মত্ত এই অদৃশ্য মারণ ভাইরাস। যার বিরুদ্ধে আমাদের একমাত্র হাতিয়ার সামাজিক দূরত্ব। তাই বিশ্বব্যাপী চলছে গ্লোবাল লকডাউন। ব্যতিক্রমী নয় শহর কলকাতাও। একইসঙ্গে প্রয়োজন সচেতনতা। আর তারই অঙ্গ হিসেবে কলকাতার প্রসিদ্ধ মিষ্টান্ন প্রতিষ্ঠান হিন্দুস্তান সুইটস এক অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে।

করোনা যার পোশাকি নাম কোভিড-১৯। যাকে চোখে দেখা যায় না। অজানা শত্রু। তবে বিজ্ঞানীরা অণুবীক্ষণ যন্ত্রে এই ভাইরাসের একটা চেহারা আমাদের সামনে এনেছেন। আর
এই ভয়ঙ্কর ভাইরাসের মোকাবিলায় এবার এগিয়ে এসেছে হিন্দুস্তান সুইটস। বলা ভালো, প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার রবীন্দ্রনাথ পাল। যিনি মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি।

রবীন্দ্রনাথবাবু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ (১৯৩৯-৪৫) দেখেছেন খুব কাছ থেকে। তখন অবশ্য বয়স ছিল মাত্র ৫ বছর। আর কয়েক যুগ পেরিয়ে ২০২০ সালে এই বার্ধক্যে এসে দেখছেন মহামারী করোনার সঙ্গে গোটা মনুষ্য প্রজাতির লড়াই। তাঁর কথায়, এই যুদ্ধ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের থেকেও অনেক অনেক বেশি ভয়ঙ্কর।

তাই ঘরে বসে থাকতে পারেননি। মানুষের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে এসড়ছেন হিন্দুস্তান সুইটসের কর্ণধার। ইতিমধ্যেই
ঢাকুরিয়াতে নিজের পাঁচতলা বাড়িও দিয়েছেন রাজ্য সরকারকে হোম কোয়ারেন্টাইনের জন্য। মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ত্রাণ তহবিলে দিয়েছেন ১ লক্ষ টাকাও। প্রয়োজনে আরও দেবেন বলে জানালেন রবিন পাল।

এখানেই শেষ নয়। তাঁদের একটি কেমিক্যাল কারখানা রয়েছে। তিনি জানান, রাজ্য সরকার যদি মনে করে সেই কারখানা ওষুধ তৈরির কাজে নেবে, তাহলে তিনি সেটাও দিয়ে দিতে রাজি আছেন। প্রয়োজনে ওষুধ তৈরিও করে দেবেন তাঁরা।

তবে এই করোনা যুদ্ধের মধ্যে সবচেয়ে নজর কেড়েছে রবীন্দ্রনাথ পালের হিন্দুস্তান সুইটসের অভিনব প্রয়াসটি। মানুষকে সচেতন করতে এবং করোনা নিয়ে মানুষের মন থেকে অযথা ভীতি দূর করতে হিন্দুস্তান সুইটস বানিয়েছেন “অ্যান্টি করোনা সন্দেশ” এবং “আন্টি করোনা কুকিস”। যে সন্দেশ এবং কুকিস দেখতে হুবহু অণুবীক্ষণ যন্ত্রে ধরা পড়া করোনার মতোই। এবং ক্রেতাদের এই সন্দেশ দেওয়া হচ্ছে একেবারে বিনামূল্যে। অর্থাৎ, অন্য কোনও মিষ্টি কিনলে এই “আন্টি করোনা” সন্দেশ আপনি একেবারে নিখরচায় পেয়ে যাবেন।

হিন্দুস্তান সুইটসের করোনা ভাইরাসের মতো দেখতে এই অভিনব সন্দেশ বানানোর উদ্দেশ্য হলো, মানুষকে বার্তা দেওয়া “উই ক্যান ডাইজেস্ট করোনা”। অৰ্থাৎ, করোনার বিরুদ্ধে একটা প্রতীকী লড়াই। যাকে মানুষ খেয়ে হজম করে ফেলছে। মানে, হারছে করোনা। জিতেছে মানুষ।

রাজ্যের সমস্ত মানুষকে, বিশেষ করে মিষ্টি ব্যবসায়ীদের কাছে হিন্দুস্তান সুইটসের কর্ণধার রবীন্দ্রনাথ পালের আবেদন, সকলে একজোট হয়ে এগিয়ে আসুন। যাঁর যতটুকু সাধ্য তার মধ্যে দিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান। তাহলে এই করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শেষহাসি হাসবে মানুষই।

দেখুন ভিডিও…

 

Previous articleসস্তায় মাস্ক তৈরি করছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়
Next articleBREAKING: রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, রাজ্যপাল,কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও সাংসদদের ৩০% বেতন ছাঁটাই। অর্থ যাবে করোনা তহবিলে