Thursday, August 28, 2025

পরামর্শ দিতে এত ছুৎমার্গ কেন ? কণাদ দাশগুপ্তের কলম

Date:

Share post:

কণাদ দাশগুপ্ত

দেশে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার অতিক্রম করেছে৷

মঙ্গলবার, ১৪ এপ্রিল, সকাল ৮টায় কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, গোটা দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১০,৩৬৩ জন৷ এর মধ্যে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৮,৯৮৮ জন৷ ছাড়া পেয়েছেন ১,০৩৫ জন৷ এবং মৃত্যু হয়েছে ৩৩৯ জনের৷ গত ২৪ ঘন্টাতেই মৃত্যু হয়েছে ৩১ জনের৷

কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান বলছে, দেশে মোট আক্রান্ত ১০,৩৬৩ জনের মধ্যে ৮,১৫৩ জনই বাস করেন ৮ টি রাজ্যে৷ এই রাজ্যগুলি হলো, মহারাষ্ট্র, দিল্লি,তামিলনাড়ু, রাজস্থান, তেলেঙ্গানা, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ এবং গুজরাত ৷

এই ৮ রাজ্যেই দেশের মোট করোনাক্রান্তের ৭৯% রয়েছেন৷ বাকি ২১% বা ২২১০ জন দেশের বাকি রাজ্য মিলিয়ে বাস করছেন৷

গোটা দেশের যা ছবি, ঠিক তার উল্টো ছবি কেরলে৷ ওই রাজ্যে গত ১ সপ্তাহ যাবৎ নতুন সংক্রমিতের সংখ্যার থেকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়া রোগীর সংখ্যা বেশি।

সোমবারের পর কেরলে আপাতত সক্রিয় রোগীর সংখ্যা কমেছে৷ এবং ছাড়া পাওয়া ব্যক্তিদের সংখ্যা বেড়েছে। তাই কেরল এখন দাবি করছে, করোনা-গ্রাফ ‘সমান’ হচ্ছে কেরলে।

লকডাউন এবং সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং-ই এখন গোটা দেশের জন্য একমাত্র ওষুধ৷ কিন্তু এর পাশাপাশি ওই ৮ রাজ্য, দেশের যে রাজ্যগুলি এই মুহুর্তে কার্যত করোনার তথাকথিত ‘হটস্পট’, সেই মহারাষ্ট্র, দিল্লি, তামিলনাড়ু, রাজস্থান, তেলেঙ্গানা, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ এবং গুজরাত-এর জন্য বাড়তি কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা বা আর কঠোর কিছু শর্তাদি পালনের কথা এদিন প্রধানমন্ত্রীর বলা দরকার ছিলো৷

এই ৮ রাজ্য এবং কেরলকে একাসনে বসানো হলে ওই ৮ রাজ্যের প্রতি অবিচার হয়৷ এতে ৮ রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা থাকবে৷

এই রাজ্যগুলির মধ্যেই আছে যোগী আদিত্যনাথের উত্তরপ্রদেশ৷ প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী কেন্দ্রও এই উত্তরপ্রদেশেই৷ এবং অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর রাজ্য গুজরাত৷

দেশের স্বার্থে দেশবাসী নিশ্চিতভাবেই আগামী ৩ মে পর্যন্ত কঠোরভাবে লকডাউন পালন করবেন৷ সকলেই এই দুঃসহ যন্ত্রণা থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে চাইছেন৷ লকডাউন এবং সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং-ই যে করোনাভাইরাসের একমাত্র ‘ওষুধ’, সেটাও দেশের মানুষ বুঝেছেন৷ তাই, ৩ মে পর্যন্ত লকডাউন ফের সফল হবেই৷

গোটা দেশ এখন দলীয় রাজনীতির উর্ধ্বে উঠে ঐক্যবদ্ধভাবে করোনা যুদ্ধে সামিল৷ তার মাঝেও এই সংহতি বিনষ্ট করার একটা চেষ্টা চলছে বিশেষ এক রাজনৈতিক দলের আইটি সেলের তরফে৷

ওই সেলের কিছু বসন্তের কোকিল অযাচিতভাবে এবং অনধিকার চর্চা চালিয়ে বিভিন্ন রাজ্যকে “পরামর্শ” দিয়ে চলেছে৷ তাদের ধারনা, এই পরামর্শ মানলেই অবধারিতভাবে করোনা থেকে মুক্তি মিলবে৷

হয়তো তাদের এই ধারনা সঠিক৷ তাহলে একটা প্রশ্ন তো থাকছেই, ওই রাজনৈতিক দলের আইটি সেল এই ধরনের মহামূল্যবান পরামর্শ টুইটের মাধ্যমে কেন দিচ্ছে না উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ বা গুজরাত সরকারকে ? পরামর্শ দিতে এত ছুৎমার্গ কোন রহস্যে ?

এই ৩ রাজ্যের মানুষ করোনা’র হাত থেকে রক্ষা পান, তা কি চাইছে না ওই আইটি সেল ?

সাধারন মানুষ যখন জীবন বাঁচাতে মরিয়া লড়াই চালাচ্ছে, তখন “পরামর্শ” দেওয়ার ক্ষেত্রে ওই রাজনৈতিক দলের আইটি সেলের এই দ্বিচারিতা কেন ?

এই ৩ রাজ্যের নাগরিকরা কি ‘দেশদ্রোহী’ ?

spot_img

Related articles

উন্মুক্ত শৌচমুক্ত ৯৪ পুরসভা, স্বচ্ছতার শংসাপত্র বাংলাকে

শহরাঞ্চলে আর খোলা শৌচের দৃশ্য নেই। পুরসভাগুলির উদ্যোগ এবং পুর দফতরের তদারকিতে উন্মুক্ত শৌচমুক্ত হয়েছে কলকাতা সহ রাজ্যের...

ফাঁকা কেন্দ্রগুলিতে দ্রুত ইআরও–এইআরও নিয়োগের নির্দেশ কমিশনের 

ফাঁকা পড়ে থাকা একাধিক বিধানসভা কেন্দ্রে দ্রুত ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন আধিকারিক (ইআরও) এবং অ্যাসিসটেন্ট ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন আধিকারিক (এইআরও) নিয়োগের...

নথিভুক্ত অথচ নিষ্ক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলিকে শুনানিতে তলব করল কমিশন 

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে ফের সক্রিয় হল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর। নথিভুক্ত হলেও কার্যত নিষ্ক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলিকে শুনানিতে...

সুখবর! পুজোর আগে পার্ট টাইম কর্মীদের বেতন বাড়াল রাজ্য 

পুজোর আগে রাজ্যের আংশিক সময়ের কর্মীদের জন্য বড় সুখবর দিল নবান্ন। বিভিন্ন দফতর ও সরকার অধীনস্থ সংস্থায় কর্মরত...