বিয়েতে খরচ না করে বর-কনে খাওয়ালেন অভুক্তদের, টাকা দিলেন মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলেও

লকডাউন চলছে৷ ভিড় হতে পারে, এমন কোনও অনুষ্ঠান বা জমায়েত করা চলবে না, প্রশাসন জানিয়ে দিয়েছে৷

তাহলে বিয়েটা কি অনিশ্চিত থেকে যাবে?

পিয়ালি আর দীপায়নকে এমন ভাবনাই গ্রাস করে ফেলেছিলো৷

শেষমুহূর্ত পর্যন্ত ভেবে শুভকাজটি সেরেই ফেললেন পিয়ালি-
দীপায়ন৷ এবং নজির গড়লেন মানবিকতা প্রদর্শন করে ৷

কি করলেন ?

তাঁরা হাওড়ার একটি মন্দিরে গিয়ে সাদামাটাভাবে বিয়ে করে ফেললেন এবং বিধি মেনে ভিড় এড়িয়ে নববধূ নিজেই স্বামীকে স্কুটিতে চাপিয়ে সোজা হাজির হলেন শ্বশুরবাড়িতে।

আরও একটা কাজ করলেন ৷

ধুমধাম করে বিয়ের অনুষ্ঠান করলে যে টাকাটা খরচ হতো, তার একটা অংশ দিয়ে বিধি মেনে এই মুহুর্তে অভুক্ত থাকা মানুষদের পাতে খাওয়ার পৌঁছে দেবেন৷

আর বাকি অংশটুকু তুলে দেবেন মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দান করব।

উদয়নারায়ণপুরের প্রতাপচকের বাসিন্দা পেশায় বেসরকারি সংস্থার কর্মী দীপায়ন পাত্রের সঙ্গে গজার বাসিন্দা পেশায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা পিয়ালি মাইতির রেজিষ্ট্রি হয় গত ২২ জানুয়ারি এবং তখনই ঠিক হয় আগামী ৩ মে শাস্ত্রমতে অনুষ্ঠান করে বিয়ে হবে।

কিন্তু মাঝখানে হৈ হৈ চলে এলো করোনা৷ করোনার হাত ধরে এলো লকডাউন আর সোশ্যাল- ডিসট্যান্সিং৷ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন লকডাউন চলবে ওই ৩ মে পর্যন্তই।

ফের ‘বৈঠক’ দু’বাড়ির৷
দু’বাড়ির সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়, মন্দিরে বিয়ের কাজ সারা হবে। মন্ত্রপাঠ, সিঁদুরদান, মালাবদল সবই হবে মন্দিরে, নিয়ম মেনে। লকডাউনের মাঝে সেভাবেই অতিথি- আমন্ত্রিতহীন বিয়ে হয়ে গেলো!

দীপায়ন ও পিয়ালি বললেন, “আমরা কাউকে আমন্ত্রণ জানাতে না পারলেও সকলের আশীর্বাদ আমাদের সঙ্গেই থাকবে। খুব চিন্তিত ছিলাম, এমন একটা সময়ে আমাদের দুজনের নতুন জীবন কীভাবে শুরু করব! আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷ বিয়ের বাজেট খরচ হবে অভুক্তদের খাওয়াতে আর মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে জমা দিয়ে”৷

প্রশংসার জোয়ারে এই মুহুর্তে ভাসছেন পিয়ালি-
দীপায়ন৷

Previous articleলকডাউন অমান্য, তৎপর বেলডাঙা পুলিশ ও ব্লক প্রশাসন
Next articleকরোনা আতঙ্কের মধ্যেই কেঁপে উঠল ইতালি