করোনা-যুদ্ধে কেন্দ্রের সঙ্গে কোনও সংঘাতেই যেতে রাজি নয় কেরল সরকার৷ লকডাউনে ‘বেশি ছাড়ের’ প্রশ্নে কেন্দ্র কেরলকে কড়া চিঠি দিয়েছে কেন্দ্র।

সেই চিঠির প্রেক্ষিতে রাজ্যে পর্যটন মন্ত্রী কে সুরেন্দ্রন জানিয়েছেন, “কেন্দ্রের নির্দেশিকা মেনেই আমরা ছাড় দিয়েছি। কোথাও ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে, সে কারণেই কেন্দ্র আমাদের জবাব চেয়েছে। আমরা জবাব দেব এবং আমি নিশ্চিত তখনই ভুল বোঝাবুঝি দূর হয়ে যাবে।”

করোনা-মোকাবিলায় কেরল এখন দেশের মডেল৷ আলাদা মতাদর্শের সরকার হলেও
কেন্দ্র কেরল মডেল’-এর প্রশংসা করেছে একাধিকবার। করোনা-যুদ্ধের কৌশল নিয়ে একবারও সংঘাত হয়নি দুই সরকারের৷

কিন্তু হঠাৎই সোমবার সকালে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ‘বেশি ছাড় দেওয়া’ নিয়ে কেরলকে কড়া চিঠি দিয়েছে কেন্দ্র।

এদিকে কেরলের দাবি, কেন্দ্রের নির্দেশিকা মেনে আর অনুমতি নিয়েই সব পদক্ষেপ করা হচ্ছে। কেরল সরকারের বক্তব্য,
করোনা-মোকাবিলায় রাজ্যের সবক’টি জেলাকে ৪ জোনে ভাগ করা হয়েছে৷ রেড, অরেঞ্জ-এ, অরেঞ্জ-বি এবং গ্রিন। গ্রিন জোনে যে দুটি জেলা রয়েছে, সেই ইদুকি আর কট্টায়ামে ছাড়ের মাত্রা একটু বেশিই দেওয়া হয়েছে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পরই৷

সোমবার সকাল থেকেই এই দুই জেলা, ইদুকি আর কট্টায়ামে জোড়বিজোড় পদ্ধতিতে গাড়ি চলছে, কিছু রেস্তোরাঁ, সেলুন খুলেছে এবং শর্তসাপেক্ষে আন্তঃরাজ্য গাড়ি চলাচলের অনুমতি দিয়েছে কেরল সরকার। সেই নিয়েই চটেছে কেন্দ্র।

কেরল সরকারকে একটি চিঠিতে স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা লিখেছেন, “১৫ আর ১৬ এপ্রিল কেন্দ্র ছাড়ের ব্যাপারে যে নির্দেশিকা জারি করেছে, কিছু রাজ্য ও কেন্দ্রসাশিত অঞ্চল তাঁর বাইরেও ছাড়ের ব্যবস্থা করেছে। কেরল সরকারের কাছে অনুরোধ, কেন্দ্র যা নির্দেশিকা জারি করেছে, শুধুমাত্র সেই অনুযায়ীই ছাড় দিন।”

এই চিঠি হাতে পেতেই পালটা জবাব কেরল সরকারও দিয়েছে, যদিও সেখানে সংঘাতের কোনো সুর ছিল না। রাজ্যে পর্যটন মন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা কে সুরেন্দ্রন জানিয়েছেন, “কেন্দ্রের নির্দেশিকা মেনেই আমরা ছাড় দিয়েছি। নিশ্চয় কোথাও ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে যার কারণে কেন্দ্র আমাদের জবাব চেয়েছে। আমরা জবাব দেব এবং আমি নিশ্চিত তখনই ভুল বোঝাবুঝি দূর হয়ে যাবে।”

উল্লেখ্য, কেরলে এখন করোনাভাইরাসের ‘কার্ভ’ সমান হয়ে গিয়েছে। গত দু’সপ্তাহ ধরে সেখানে নতুন করে পজিটিভ রোগীর সংখ্যা কমছে আর সুস্থ হওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। যার ফলে রাজ্যে এখন সক্রিয় রোগী মাত্র ১২৯ আর সুস্থ হওয়া রোগী ২৭০। ধাপে ধাপে লকডাউনও তুলবে কেরল৷, তাদের পরিকল্পনা রাজ্যে যে ৪টে জেলায় করোনারোগী সব থেকে বেশি, সেখানে ৩ মে পর্যন্ত কোনও ছাড়ই দেওয়া হবে না।
