আক্রান্ত পরিবারকে বয়কট করবেন না

শৈবাল বিশ্বাস

একটি আবেদন

এখন পাড়ায় পাড়ায় এক- দুজন করোনা রোগীর খোঁজ মিলছে। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। একমাস আগে করোনা পজিটিভ রোগীর সংস্পর্শে এলেও এখন রোগ লক্ষ্মণ ফুটে উঠতে পারে। সেই সব পরিবারকে হেয় চোখে দেখার প্রবণতা একেবারেই ঠিক নয়। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি সবারই আছে। কারুর কম কারুর বেশি। তা বলে কোনও পরিবার বা পাড়াকে হেয় চোখে দেখা বা ভবিষ্যতে বয়কট করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া উচিৎ নয়। বাগবাজারে সম্প্রতি এক বিত্তশালী পরিবারের প্রৌঢ়া করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। কিছু মানুষ ওই পরিবারের ব্যবসা পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে জানি, তাঁর ছেলে উচ্চশিক্ষিত ও সংবেদনশীল। করোনা হতে পারে এমন কোনও আচরণ তাঁর পক্ষে করাটা স্বাভাবিক নয়। এটা বুঝতে হবে, পাড়ায় পাড়ায় এখন গোষ্ঠী সংক্রমণের কিছুটা আভাস পাওয়া যাবে। সতর্ক থাকতে হবে, কিন্তু তার মানে এই নয় যে সংক্রমিত ও তাঁর পরিবারকে অযথা হেয় করব। অনেক ক্ষেত্রে দেখছি অভিযোগ উঠছে রোগ ” চেপে রেখেছিল”। করোনার লক্ষ্মণগুলি সাধারণ জ্বর, সর্দি-কাশির থেকে আলাদা কিছু নয়। সে ক্ষেত্রে প্রচুর পরিমাণ পরীক্ষা করলে তবেই বোঝা যাবে কার শরীরে কোভিড নাইনটিন থাবা বসিয়েছে আর কে অন্য ভাইরাস সংক্রমিত। বড় দেশগুলির কোনও সরকারের পক্ষেই অন্তত এইসময় এত পরীক্ষা সম্ভব নয়। কাজেই দু দিন জ্বর সর্দিকাশি হয়েছিল মানেই রোগ চেপে সমাজের সর্বনাশ করেছে এমনটা ভাবার কারণ নেই। আসল কথা হল, অনেক হয়েছে, এবার কিন্তু আমাদের করোনার সঙ্গে বাস করা শিখতে হবে। পৃথিবীতে মারাত্মক সংক্রমণ অনেক হয়েছে। আমরা সেগুলির সঙ্গে বাস করতে অভ্যস্থ হয়েছি। জেনে রাখুন, করোনা বাচ্চাদের ক্ষেত্রে তেমন মারাত্মক নয় যতোটা মারাত্মক মিজলস। ছোটবেলায় আমারও হয়েছিল। বেঁচে আছি। মা, জ্যাঠাইমা সুশ্রষা করেছিলেন। তাঁরাও বেঁচেছিলেন। আত্মীয়স্বজনের কাছে হেয় হতে হয়নি। এখন অবশ্য হু-র গাইড লাইন মেনে আমরা অনেকটাই মিজলসমুক্ত। করোনার বেলাতেও সেই সামাজিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনুন। কোভিড নাইনটিন মুক্ত হতে সময় লাগবে। লক ডাউন দ্রুত সংক্রমণ রোধ করে, কিন্তু একেবারে তাকে বিদায় জানাতে পারবে না।

Previous article৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে কালবৈশাখী! বজ্রগর্ভ মেঘ থেকে বৃষ্টি
Next articleমুম্বই হামলার মাস্টারমাইন্ড সহ ১৮০০ জঙ্গিকে ছাড় পাকিস্তানের!