Monday, August 25, 2025

দুর্ভাগ্য আমাদের, এই মহা-বিপর্যয়ের সামনে দাঁড়িয়েও কুৎসিত তরজা আর গোঁজামিলের তত্ত্ব এড়াতে পারলাম না আমরা!

Date:

বিশ্বজুড়ে যে অভাবনীয় ঘটনা ঘটছে গত চার মাস ধরে, তার সঙ্গে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিস্থিতির তুলনা টানছেন অনেকেই। তখন তো তবু শত্রুদের দেখা যেত, আর এখন অদৃশ্য শত্রু কখন কার শরীরে ঢুকে কাকে কখন ঘায়েল করবে তার কোনও ঠিকঠিকানা নেই। এই গ্লোবাল প্যানডেমিক বা বিশ্ব মহামারির সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিটি দেশই দাঁত চেপে লড়াই করার চেষ্টা করছে। এমনকী ভারতের অনেক রাজ্যও নিজেদের মত করে লড়াই করার চেষ্টা করছে। ভুল-ভ্রান্তি কি হচ্ছে না? সমালোচনাযোগ্য কাজ কি হচ্ছে না? নিশ্চয়ই হচ্ছে। একাধিক ঘটনা-দুর্ঘটনা ঘটছে। তা সত্ত্বেও অন্যান্য রাজ্যে মোটের উপর মূল ফোকাসটা কিন্তু কোভিড-১৯য়েই আছে। অথচ আমাদের রাজ্য দেখুন! মনে হচ্ছে করোনাভাইরাসের বিপদটা যেন কোনও ব্যাপারই নয়। উল্টে, অজানা এই বিপদকে লঘু করে দিয়ে যে যার মত রাজনীতি আর প্রচারে থাকার প্রতিযোগিতা চলছে যেন। এই মহা-সংকটে যখন রোগ থেকে বাঁচাই (যে রোগে ভ্যাকসিন নেই, নির্দিষ্ট ওষুধ নেই) ঐক্যবদ্ধভাবে সকলের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত, তখন বাংলায় আমরা কুৎসিত তরজা আর সংখ্যাতত্ত্বের গোঁজামিলের জলেই ডুবতে বসেছি। জীবনই যেখানে অনিশ্চিত, সেখানেও এখন শাসক-বিরোধী দল, প্রশাসনের একাংশ চোখ রাঙানোর খেলা দেখিয়ে যাচ্ছে। আর এই ঘোলা জলে লঘু হতে বসেছে করোনা সংক্রমণের মত মারাত্মক বিপদও। কজন আক্রান্ত তা নিয়ে সংশয়, কজনের মৃত্যু তা নিয়ে আরও বড় সংশয়। বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা যেখানে বসে জানান মৃত্যুসংখ্যা সাত, তার দশ মিনিট বাদে ওই একই জায়গায় বসে প্রশাসনের বড়কর্তা বলেন ওটা সাত নয় তিন হবে। অর্থাৎ কার কীসে মৃত্যু হচ্ছে এরাজ্যে তা ডাক্তারদের চেয়ে ভাল বোঝেন রাজনীতিক আর আমলারা। করোনার চিকিৎসাও এবার না হয় ওঁরাই করুন! কোনও কোনও এলাকায় লকডাউন ভাঙার খবর এলেও তা নিয়ে বলতে গেলে প্রশ্ন উঠবে আমরা সাম্প্রদায়িক না ধর্মনিরপেক্ষ? যেন রোগের সংক্রমণটা কোনও ইস্যুই নয়! অভিযোগের যদি কোনও সারবত্তা নাই থাকে তাহলে রাজ্যের সর্বাধিনায়িকাকে কিছু এলাকায় গত দুদিন ধরে ছুটতে হচ্ছে কেন? কোনও সমস্যা না থাকলে তাঁর তো যাওয়ার কথাই নয়। আর যদি সমস্যা থাকেই তাহলে এতদিন পর কেন? কেন লকডাউনের শেষ পর্বে? সমালোচনা মানেই যেমন চক্রান্ত নয়, তেমনই এক পক্ষ যা বলবে অন্য পক্ষকে সবসময় তার বিরোধিতা করতেই হবে তাও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এই মহা বিপদের দিনেও কি একটু অন্যরকম, আরেকটু সহনশীল হতে পারি না আমরা?

Related articles

কলকাতার সর্বজনীন পুজো ডিরেক্টারি: দু-মলাটে বাংলার দুর্গোৎসবের ৪৩৪ বছরের ইতিহাস

রবিবাসরীয় সন্ধেয় গড়িয়াহাটের একটি ব্যাঙ্কয়েটে আড্ডার আবহে প্রকাশিত হল সাংবাদিক-লেখক সম্রাট চট্টোপাধ্যায়ের বই 'কলকাতার সর্বজনীন পুজো ডিরেক্টারি'। উপস্থিত...

তৃণমূল–সমাজবাদী পার্টির পথে এবার আম আদমি পার্টি! জেপিসিতে থাকছে না আপও 

সংবিধান সংশোধনী বিল খতিয়ে দেখতে গঠিত যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিল আম আদমি পার্টি।...

মোদির বিরুদ্ধে সরব! হিটলারি কোপে লাদাখের সোনম ওয়াংচু

দফা এক দাবি এক। লাদাখের জন্য একই দাবিতে আজও অনড় সমাজকর্মী সোনম ওয়াংচু (Sonam Wangchuk)। লাদাখের জমি, যা...

শান্তিপুরে মহিলা স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর ভোটে গোহারা বিজেপি! ২৬-৪-এ জয়ী তৃণমূল 

এসআইআর ইস্যু নিয়ে রাজ্যে বিজেপির মাতামাতির মধ্যে নদিয়ার শান্তিপুরে মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ক্লাস্টার কমিটির নির্বাচনে বড় সাফল্য পেল...
Exit mobile version