‘মহাভোজ’ ফেলে রেখে, ‘অন্তর্যাত্রা’ থামিয়ে চলে গেলেন ঊষা

প্রয়াত নাট্যব্যক্তিত্ব ঊষা গঙ্গোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার সকালে দক্ষিণ কলকাতার বাড়িতে তাঁর মৃত্যু হয়। বাড়িতে একাই থাকতেন ঊষা। এদিন সকালে পরিচারিকা গিয়ে দেখেন অচৈতন্য অবস্থায় মাটিতে পড়ে রয়েছেন তিনি। চিকিৎসককে খবর দেন প্রতিবেশীরা। চিকিৎসক ঊষা গঙ্গোপাধ্যায়কে মৃত বলে ঘোষণা করেন। প্রাথমিকভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বলেই অনুমান। তবে দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। বেশ কয়েকদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন এই নাট্যকার। তারপর কিছুদিন আগেই মৃত্যু হয় তাঁর ছোট ভাইয়ের। ফলে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন তিনি। ঊষা গঙ্গোপাধ্যায়ের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই নাট্য-সংস্কৃতি জগতে শোকের ছায়া নেমে আসে। তাঁর মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

১৯৪৫ সালে রাজস্থানের যোধপুরে জন্মগ্রহণ করেন ঊষা। মাতৃভাষা হিন্দি। তবে বাংলা থিয়েটার জগতেও কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছিলেন তিনি। তাঁর হাত ধরেই বাংলা নাট্যজগতে হিন্দি নাটক জনপ্রিয়তা লাভ করে। ১৯৭৬ সালের ‘রঙ্গকর্মী’ গ্রুপ থিয়েটার প্রতিষ্ঠা করেন ঊষা গঙ্গোপাধ্যায়। সেই দলে অভিনয় করতেন বাংলা ও হিন্দি সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা রাজেশ শর্মা। ঊষা গঙ্গোপাধ্যায় প্রযোজনায় ‘মহাভোজ’, ‘রুদালি’, ‘কোর্ট মার্শাল’, ‘অন্তর্যাত্রা’ নাটকগুলি দর্শকদের মন ছুঁয়ে যায়।
১৯৯৮ সংগীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার পান ঊষা। ‘গুড়িয়া ঘর’ নাটকে অভিনয়ের জন্য রাজ্য সরকারের তরফ থেকে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার সম্মান অর্জন করেন তিনি।
ঊষা বলতেন, “থিয়েটার ছাড়া আমার আর কোনও লাইফ নেই”। পারিবারিক জীবনে তাঁকে ঘিরে অনেক বিতর্ক হয়েছে। এমনকী গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁর নিকটজন। কিন্তু সেই সব পেছনে ফেলে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত শুধুমাত্র রঙ্গমঞ্চ আঁকড়ে ধরে ছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব ঊষা।

Previous articleলকডাউন শিথিল হলে পরিস্থিতি হবে ভয়াবহ! জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা
Next articleসামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিয়ে অসন্তোষ, কোচবিহার মেডিক্যালে বিক্ষোভ শ্রমিকদের