‘আজকাল’-এ এবার দমননীতির অভিযোগ আনলেন কর্মীরা

‘আজকাল’ পত্রিকায় কর্মী ইউনিয়নের সঙ্গে কথা না বলে এই সঙ্কটকালে বেতন কাটার প্রতিবাদে আন্দোলন চলছে।

মঙ্গলবার এনিয়ে বৈঠক হয় নি।
কর্তৃপক্ষের সূত্রে খবর, তাঁদের নিযুক্ত কমিটি আন্দোলনকারীদের বৈঠকে ডাকলেও তাঁরা আসেন নি।
ইউনিয়নের বক্তব্য, ঐ কমিটির বৈধতা তাঁরা মানেন না। তাঁরা অশোক দাশগুপ্ত বা সত্যম রায়চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলতে চান।
এদিকে, ইউনিয়নের অভিযোগ, বিনা অপরাধে তাঁদের তিনজনকে শোকজ ও তিনজনকে সাসপেন্ড করার চক্রান্ত হচ্ছে।
এর মধ্যে কর্তৃপক্ষের একটি নোটিস চর্চায় এসেছে। সেটি প্রকাশকের সই করা। কর্মীদের বেতন ও আন্দোলনের বিষয়ে প্রকাশক সই করতে পারেন কিনা, তা নিয়ে আইনি পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে।
বস্তুত, আজকাল পত্রিকায় একটি দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বহু পুরনো কর্মীর থেকে নতুনদের বৈষম্য এই ক্ষোভ আরও বাড়িয়েছে। সত্যমবাবুর তৈরি কমিটির সদস্যরা কর্মীদের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পারার কারণে দূরত্ব আরও বেড়েছে।

বুধবার কর্মী ইউনিয়নের সম্পাদক দেবাশিস দত্ত একটি ফেসবুক পোস্ট করেছেন।
তাতে তিনি লিখেছেন,” বেআইনি ভাবে বেতন কাটার প্রতিবাদে আজকাল কর্মীদের আন্দোলনের আজ ৩ য় দিন। চলছে পোস্টার , ব্যানার ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রতিবাদ। সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে গেল আজকাল কর্তৃপক্ষের অত্যাচার। হুমকি ও পোস্টার ছিড়ে আন্দোলন দমানোর চেষ্টা। এবার আজকালের পাবলিশার্স নোটিশ লাগিয়ে আইনি ধারায় ভয় দেখিয়ে বলছেন, আজকালে কোনো পোস্টারিং করা যাবেনা, অনুমতি না নিয়ে মিটিং করা যাবেনা। বেরিয়ে পড়েছে পূর্বের স্বৈরাচারী বাম আমলের মুখোশ। একটু অন্যরকম ভাবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও কিছু ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতার নাম করে হুমকি। এর আগেও কিছু আন্দোলনে আমাকে ভয় দেখাতে মিথ্যা অভিযোগ এনে গ্রেপ্তারের চেষ্টা। লোকাল থানার ওসিকে দিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর চাপ সৃষ্টি । বাদ যাইনি কিছু।

না আমরা ভয় পাইনি। গতকাল রাতের অন্ধকারে আজকাল কর্তৃপক্ষ তাদের কিছু ঘনিষ্ঠদের দিয়ে সব ব্যানার , পোস্টার ছিড়ে দেয়। ইউনিয়নের কর্মীদের বাড়িতে হুমকি। তাতেও আন্দোলন থামছে না আমাদের। আজ আরও পোস্টার দিয়ে ঘিরে দেওয়া হবে আজকাল। ব্যবস্থা নেওয়া হবে আইনানুগ। আমাদের আইনের ওপর আস্থা অটুট। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই আন্দোলন কে সমর্থন জানিয়েছে প্রচুর মানুষ। লাইক শেয়ার করেছেন আপনারা। আমাদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন, বিশ্ব বাংলা সংবাদ, এই মুহূর্তে ডট কম, কলকাতা নিউজ টুডে, বেঙ্গল ওয়াচ সহ একাধিক নিউজ পোর্টাল। কৃতজ্ঞ আপনাদের কাছে । সাংবাদিক হয়ে সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমাদের কথা পৌঁছে দিয়েছেন। কতৃপক্ষের কাছে অনুরোধ, বামপন্থীর মুখোশে মমতা ব্যানার্জির নাম ভাঙিয়ে প্রশাসন ও নেতাদের সহযোগিতা নিয়ে আপনারা নিতেই পারেন, আমাদেরও পাশে আছে মমতা ব্যানার্জির আশীর্বাদ, শুভেচ্ছা, অনুপ্রেরণা। তাই এই আন্দোলন দমন করা থেকে বিরত থাকুন।”

কর্তৃপক্ষের বক্তব্য নোটিসটিতেই দেখা যাচ্ছে।
সূত্রের খবর, অশোক দাশগুপ্ত বা সত্যম রায়চৌধুরী বসলে যে সমস্যার জট খুলে যায়, গোটা বিষয়টা বুঝতে ব্যর্থ কয়েকজনের জন্য সেটা হচ্ছে না। উল্টে পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।

মিডিয়াজগতের কথা হল,আমরা সবাই চাই, মিডিয়ার এই সঙ্কটের সময়ে কর্মীদের উপর দমননীতি বন্ধ হোক। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হোক। প্রচারসংখ্যা কমে এলেও আজকাল বাংলার সংবাদজগতের এক অন্যতম নাম। সেই গৌরব অটুট থাকুক।

Previous articleকোয়ারান্টাইন থেকে মুক্তি পাচ্ছে প্রায় ৪ হাজার তাবলিগি জামাত সদস্য
Next articleবাবার মৃত্যু করোনায়, ছেলের প্রাণ যাওয়ার জোগাড় ১৮লাখের বিল দেখে