Thursday, November 13, 2025

আমফানের দাপটে আলিপুর চিড়িয়াখানার কী হাল?

Date:

Share post:

করোনা আবহে-আমফান বিপর্যস্ত বাংলায় কেমন আছে আমাদের সকলের প্রিয়, সকলের গর্বের আলিপুর চিড়িয়াখানা? ভয়ঙ্কর সাইক্লোনের পর কেমন আছে সকলের ভালবাসার বাঘ-ভাল্লুক-হাতি-শিম্পাঞ্জি? কেমন আছে জিরাফের দল কিংবা হরিণ? কেমন আছে দেশ বিদেশের বিরল পাখি কিংবা সরীসৃপের দল? যারা শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা, বছরের পর বছর খাঁচাবন্দি হয়ে বিনোদন দেয় আট থেকে আশিদের! কেমন আছে তারা? করোনা-আমফন জোড়া বিপর্যয়ের মধ্যে কতটা সুরক্ষিত রয়েছে আলিপুর চিড়িয়াখানার আবাসিকরা? সেটা জানতেই আজ ‘এখন বিশ্ব বাংলা সংবাদের’ ক্যামেরা ছুটে গিয়েছিল আলিপুর চিড়িয়াখানায়।

ঠিক কী দেখলাম আমরা? কী ধরা পড়লো আমাদের ক্যামেরায়? চমকে উঠতে হয়। গোটা বাংলার মতোই বিপর্যস্ত আলিপুর চিড়িয়াখানা। আমফানের ধ্বংসলীলায় ভেঙে পড়েছে একের পর এক শতাব্দী প্রাচীন দামী দামী গাছ। ভেঙে টুকরো হয়েছে শাল-সেগুন-বট-বুদ্ধ নারকেল। তছনছ হয়ে গিয়েছে ফেন্সিং-পাঁচিল-ব্যারিকেড। চিড়িয়াখানার অধিকর্তা জানালেন, আর্থিক অনেকে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা।

তবে প্রকৃতির মহিমায় আলিপুর চিড়িয়াখানার আবাসিক পশুপাখিদের লোম পর্যন্ত স্পর্শ করতে পারেনি আমফান নামক ভয়াল সুপার সাইক্লোন। ঝড়ের তাণ্ডবে এখানকার আবাসিকরা ভীত-সন্ত্রস্ত ছিল বটে, কিন্তু প্রকৃতির বুকে জন্ম নেওয়া এইসব প্রাণীদের অদ্ভুতভাবে রক্ষা করেছে প্রকৃতি নিজেই।

আলিপুর চিড়িয়াখানার ডিরেক্টর আশীষ কুমার সামন্ত এখন বিশ্ব বাংলা সংবাদের কাছে অন্তত তেমনটাই দাবি করেছেন। তাঁর কথায়, “আমফানের ভয়াল গ্রাসে বাংলা তথা শহরের অঙ্গ হিসেবে পড়েছিল আলিপুর চিড়িয়াখানাও। প্রাচীন গাছপালার প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আর্থিক অঙ্কে ক্ষতির পরিমাণ ২৫-৩০ লক্ষ টাকা হলেও সব ক্ষতি টাকা দিয়ে হিসেব করা যায় না। তবে এতো বিপুল ক্ষতির মাঝেও ভালো খবর, আমফানের দাপটে একটিও পশুপাখির সামান্য চোট পর্যন্ত আসেনি।”

কিন্তু কী মাজিকে তা সম্ভব হলো? আশীষবাবু বলেন, “আমরা অনেক আগে থেকেই ঝড় মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। ৩০ জনের একটি টিম বানানো হয়েছিল। যেখানে মেডিক্যাল সাপোর্ট থেকে শুরু করে পশু চিকিৎসকরাও ছিলেন। সারারাত ওই টিম জেগেছিল চিড়িয়াখানার মধ্যে।”

চিড়িয়াখানার অধিকর্তা আরো জানান, “বাঘ-ভাল্লুক-হাতি-সহ পশুপাখিদের আগে থেকেই চিড়িয়াখানার মধ্যে নিরাপদস্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে জিরাফ ও বিভিন্ন প্রজাতির হরিণরা খোলা জমিতে ছিল। তাদের নিয়ে কিছুটা আশঙ্কিত ছিলাম আমরা। কিন্তু ঈশ্বরের অশেষ কৃপা, কারও কিছু হয়নি। তবে অনেক পশুপাখি ঝড়ের তাণ্ডবে মানসিকভাবে আশঙ্কাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। পাখির দল সারারাত ভয়ে চিৎকার করেছে। প্রথম দু’দিন অনেকেই খেতে পারেনি। এখন অবশ্য সবাই ছন্দে ফিরছে।”

সব মিলিয়ে করোনা আবহে এবং গোদের উপর বিষ ফোঁড়া নামক আমফান তাণ্ডব আলিপুর চিড়িয়াখানার অনেক গাছের ক্ষয়ক্ষতি করলেও প্রকৃতির আশীর্বাদে প্রকৃতির বুকে জন্ম নেওয়া অবলা পশুপাখির সুরক্ষিতই আছে।

spot_img

Related articles

“রিচার নামে স্টেডিয়াম ইতিহাস হয়ে থাকবে”, উচ্ছ্বসিত ঝুলন

শিলিগুড়িতে রিচা ঘোষের(Richa Ghosh)  নামে স্টেডিয়াম হচ্ছে শিলিগুড়িতে। কিছুদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা করেছেন বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটারের নামে...

‘হাঁটি হাঁটি পা পা’-র ট্রেলার-পোস্টার লঞ্চে ‘বাবা-মেয়ে’র রসায়নে চিরঞ্জিৎ-রুক্মিণী

অর্ণব মিদ্যার ছবি 'হাঁটি হাঁটি পা পা'-র ট্রেলার ও পোস্টার লঞ্চের জমজমাট অনুষ্ঠান হল ফ্লোটেলে। বৃদ্ধ বাবা ও...

লক্ষ্য ২০২৭! ২৫ নভেম্বর শুরু ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ

ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হচ্ছে আগামী ২৫ নভেম্বর থেকে। রাজ্যের সেচ ও জলপথ মন্ত্রী মানস...

রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কে স্বচ্ছতা আনতে চালু অনলাইন অডিট ব্যবস্থা

রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কগুলির আর্থিক লেনদেনে স্বচ্ছতা আনতে বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। এ বার থেকে সমস্ত সমবায় সমিতি...