আমফান মোকাবিলায় কলকাতা পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিমের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় প্রবীণ মন্ত্রী সাধন পান্ডেকে শোকজ করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। এদিকে এই শোকজ নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে উত্তর কলকাতার তৃণমূল শিবিরে৷ এবং এই ইস্যুতে ফের সামনে চলে এসেছে তৃৃণমূলের অভ্যন্তরের পুরনো ‘দক্ষিন-উত্তর’ বিতর্ক৷ সাধন পান্ডেকে শোকজের পর দলেই পাল্টা প্রশ্ন উঠেছে, তৃণমূলে ‘দলীয় শৃঙ্খলা’র সংজ্ঞা কী ? ‘দলীয় শৃঙ্খলা’ লঙ্ঘন করার বিষয়টি কি কলকাতার ভূগোলের উপর নির্ভরশীল?
উত্তর কলকাতার সাধন পান্ডে যে কথা বলে শোকজের সামনে, ঠিক সেই কথাই দিন দুয়েক আগে বলেছেন রাজ্যের আর এক প্রবীণ মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়৷ সাধনের আগে সুব্রত মুখোপাধ্যায় ফিরহাদ হাকিমকে নিশানা করেছিলেন। অথচ সেক্ষেত্রে দলের শীর্ষনেতারা চোখ-মুখ বন্ধ রাখলেন৷ এর কারন একটাই, সুব্রত মুখোপাধ্যায় দক্ষিণ কলকাতার নেতা৷ তৃণমূল নেতৃত্ব দক্ষিণ কলকাতার নেতাদের সুয়োরানীর নজরে দেখে বলেই সুব্রত এবং সাধনের ক্ষেত্রে চোখে লাগার মতো দু’ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো৷ তৃণমূলে উত্তর কলকাতার নেতা-কর্মীরা চরম অবহেলা,অবজ্ঞার শিকার৷
এখানেই শেষ নয়৷ প্রশ্ন উঠেছে আরও একাধিক৷ বলা হচ্ছে, কলকাতার প্রাক্তণ মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় তো আমফানের পর সংবাদমাধ্যমের কাছে কলকাতা পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিমকে ধুইয়ে দিয়েছেন৷ শোভন এখনও তৃণমূলের বিধায়ক এবং কাউন্সিলর ৷ ফিরহাদের অযোগ্যতা নিয়ে কিছু বলতেই সেদিন বাকি রাখেননি শোভন৷ অথচ তার পরেও দল শোভনকে দল থেকে বহিষ্কার করেনি, কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি৷ কারন একটাই, শোভন চট্টোপাধ্যায় দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা, তাই সব মাফ৷
প্রশ্ন উঠেছে কলকাতা পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিমকে নিয়েও৷ উত্তরের একাধিক নেতার বক্তব্য, এই ববি হাকিম তো দলের টিকিট না পেয়ে দলবল নিয়ে হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের বাড়ি চড়াও হয়ে টালির চালে পাথর ছুঁড়ে মারার ঘটনার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন কয়েকবছর আগে৷ দল ববি-র বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছে ? দল সব হজম করে নিয়েছে একটাই কারনে, ফিরহাদ হাকিম দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা, তাই সব মাফ৷
মোটের উপর, সাধন পান্ডেকে শোকজ করে তৃণমূল নেতৃত্ব পুরনো বিতর্কেই নতুনভাবে অক্সিজেন সরবরাহ করলো বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷