দেশে করোনার গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে, ভয়ঙ্কর তথ্য ‘জয়েন্ট কোভিড টাস্ক ফোর্স’-এর

উদ্বেগ শতগুণে বৃদ্ধি পাচ্ছে৷

প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে, দেশে শুরু হয়ে গিয়েছে করোনার গোষ্ঠী সংক্রমণ৷

রিপোর্ট আকারে এমনই কথা শোনালেন বিশেষজ্ঞরা৷ ‘জয়েন্ট কোভিড টাস্ক ফোর্স’-এর ১৫ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের একটি দল, যে দলে আছেন ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিসিজ কন্ট্রোলের প্রাক্তন প্রধান, সেই দলের মতে, ‘গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গিয়েছে দেশে । ‘ এখানেই শেষ নয়, বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ডিসেম্বর মাসের মধ্যে দেশের মোট জনসংখ্যার ৫০ শতাংশই করোনা আক্রান্ত হতে পারেন। এই রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কাছে৷

গত ১০ এপ্রিল WHO বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছিলো, ভারতে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হওয়ার মুখে। সেই সময় WHO-এর দাবি খারিজ করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লভ আগরওয়াল বলেছিলেন, “দেশে যদি গোষ্ঠী সংক্রমণের পরিস্থিতি তৈরি হয়, তাহলে আমরাই তা সবার আগে জানাব। আমরা জনগণকে বলব সতর্ক থাকতে৷ এখনও গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়নি।”
সেই লভ আগরওয়ালকে ইদানিং দেখা যাচ্ছে না৷

এর পর গত ২৪ এপ্রিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন দাবি করেছিলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারের তৎপরতায় দেশে করোনা গোষ্ঠী সংক্রমণের পর্যায়ে পৌঁছয়নি”। মোদি সরকারের নেওয়া একাধিক পদক্ষেপের কারণে ভারতের পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে ভালো বলেও দাবি করেছিলেন হর্ষবর্ধন।
করোনার তৃতীয় পর্যায়কে গোষ্ঠী সংক্রমণ বলা হয়। এই পর্যায়ে কোন পথে ভাইরাস হানা দিচ্ছে, তার হদিশ পাওয়া মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়।

‘জয়েন্ট কোভিড টাস্ক ফোর্স’-এর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ভারত সরকার কি কোনও মহামারি বিশেষজ্ঞ বা এপিডেমিওলজিস্টের পরামর্শ নিয়েছে? যদি নিতো, তাহলে এই পরিস্থিতি অনেকটা ভালো হতে পারত।” চিকিৎসকেরা মনে করছেন, যেভাবে এপ্রিলের শেষ থেকে ভারতে করোনাভাইরাসের আক্রান্তের হার বাড়ছে তা গোষ্ঠী সংক্রমণেরই উদাহরণ।
কেন্দ্রের তথ্যই বলছে, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ জাঁকিয়ে বসছে ভারতের বুকে৷ আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েই চলেছে। দু’মাসের বেশি সময় লকডাউনের চললেও দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যায় লাগাম টানা যায়নি। একইসঙ্গে বেড়ে চলেছে মৃত্যুর সংখ্যাও।

স্বাস্থ্যমন্ত্রকের হিসাব, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৮,৩৯২ জন। এটি এখনও পর্যন্ত একদিনে রেকর্ড বৃদ্ধি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইতিমধ্যেই দেশে শুরু হয়ে গিয়েছে করোনার গোষ্ঠী সংক্রমণ । প্রথমদিন থেকে এই ভয়টাই পাচ্ছিলেন সবাই। কারণ একবার গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গেলে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।
‘জয়েন্ট কোভিড টাস্ক ফোর্স’-এর ১৫ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দল, যে দলে আছেন ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিসিজ কন্ট্রোলের প্রাক্তন প্রধান, আছেন ইন্ডিয়ান পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন, ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অফ প্রিভেনটিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিন এবং ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অফ এপিডেমিওলজিস্টস-এর সদস্যরাও, সেই দলের মতে, “গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গিয়েছে দেশে”৷ গত এপ্রিল মাসে এই দলটি গঠন করা হয়েছে।

এই দলের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় সরকার স্বীকার না করলেও ভারতের বিপুল পরিমাণে আক্রান্তের সংখ্যা এটাই প্রমাণ করছে যে এখানে কম্যুনিটি ট্রান্সমিশন হয়ে গিয়েছে । করোনা সংক্রমণের এটা তৃতীয় ধাপ । কম্যুনিটি ট্রান্সমিশন-এ বোঝার উপায় নেই, কার শরীরে কোন পথে ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে ।

Previous articleনিম্নচাপের হাত ধরে কেরলে ঢুকল বর্ষা
Next articleকেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে এমএসএমই-র জন্য বড় অঙ্কের প্যাকেজ ঘোষণা