তারিখ-তথ্য-পরিসংখ্যান তুলে ধরে বিজেপির অপপ্রচারের জবাব দিলেন অতীন

“বিজেপি সত্যকে ভয় পায়” এমন দাবি করে সাংবাদিক বৈঠকে তারিখ উল্লেখ্য করে তথ্য পরিসংখ্যান তুলে ধরে একটি লম্বা বিবৃতি পাঠ করেন কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র তথা তৃণমূল নেতা অতীন ঘোষ। এদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল কংগ্রেসের নির্দেশে পার্টির বক্তব্য প্রকাশ করেছেন তিনি। শুরুতেই তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্য সরকার মানুষের সহযোগিতায় করোনা ও আমফানের মতো ভয়নক বিপর্যয় মোকাবিলায় অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও দক্ষতার সঙ্গে সকল প্রকার চেষ্টা করছেন। কিন্তু বিজেপি-সহ বিরোধীরা এই পরিস্থিতিতে রাজনীতি করে মানুষের হয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করছে।

দীর্ঘ বিবৃতির মাধ্যমে এদিন অতীন ঘোষ যে সকল বিষয় তুলে ধরেছেন, সেগুলি এরকম–

১) এই কঠিন পরিস্থিতিতে করোনা মহামারি ও আমফানের ফলে সৃষ্ট বিপর্যয়ের উভয় সংকট মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় সামানে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় জনতা পার্টি সাহায্যে বদলে সকল প্রয়াসে বাংলাকে অপমান, বদনাম করে চলেছে।

২) এই কঠিন পরিস্থিতিতে বিজেপি তাদের কার্যপ্রণালীর মাধ্যমে বাংলায় ভুয়ো খবর ছড়িয়ে মানুষকে আতঙ্কিত করে এক বিপদসংকুল পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে।

৩) করোনার এক বিস্তারিত পরিসংখ্যান জানিয়ে বলা হয়েছে বাংলা অনেক ভাল পরিস্থিতিতে আছে। রাজ্যে করোনাতে মৃত্যুর হারে বাংলা পঞ্চম স্থানে আছে, সক্রিয় হারে কোভিড ব বাংলায় ১২ নম্বর স্থানে আছে। এবং নমুনা পরীক্ষার পর পজিটিভ হারে রাজ্য নবম স্থানে আছে।

৪) রাজ্য সরকারের নির্দেশে পুলিশ প্রসাশনের সাহায্যে ধর্ম, জাতি, রাজনৈতিক রঙ না বিচার করে বাংলায় লকডাউন কঠোরভাবে বাস্তবায়িত করা হয়েছে। মুর্শিদাবাদ, টিকিয়াপাড়ার ঘটনার দ্রুত নিষ্পত্তি যার জ্বলন্ত উদাহরণ।

৫) গত ২৯ মে রাজ্যে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান খোলার প্রতিবাদে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ প্রকাশ্য হুমকি দিয়ে লকডাউন না মানার কথা বলেছিলেন। কিন্তু পরের দিন কেন্দ্র একই সিদ্ধান্ত নিলে তাঁর মুখে আর কিছু শোনা যায়নি।

৬) পরিকল্পনা ছাড়াই কেন্দ্র লকডাউন ঘোষণা করাতে কোটি কোটি পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশার ব্যাপারে এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সবার প্রথমে উদ্বেগ প্রকাশ করে গত ২৬ মার্চ ১৮টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে তাঁদের রাজ্যে আটকে থাকা বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের সাহায্যের জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলেন।

৭) “স্নেহের পরশ” নামক এক প্রকল্প করে অন্য রাজ্যে আটকে থাকা বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য নগদ ১ হাজার টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। গত ২৭ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনতে সরকার সবরকম খরচ বহন করবে।

৮) মোদি সরকার প্রতিনিয়ত গাইডলাইন পাল্টে একটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে পরিযায়ী শ্রমিকদের জীবনের সঙ্গে ছেলেখেলা করছে।

৯) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, রাজ্যের প্রত্যেকটি মানুষের জন্য খাদ্যের ব্যবস্থা হবে এবং যাদের ডিজিটাল রেশন কার্ড নেই তাঁদের জন্যও ৬০ লক্ষ কুপন দেওয়া হয়েছে। যাতে রাজ্যের একজনও মানুষ অভুক্ত না থাকে, তার সব ব্যবস্থাই করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

১০) এই কঠিন দুঃসময়ে রাজ্যে যাতে কোনও মানুষ অভুক্ত না থাকে তার জন্য আগামী তিন মাসে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ৫ কেজি করে চাল দেওয়ার ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পরিমাণ মত রেশন সঠিক বন্টন না করার অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে পুলিশ প্রশাসন।

এখানেই শেষ নয়। তৃণমূল নেতা তথা কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ আরও জানান, রাজ্যকে বিপদের মুখে ফেলার জন্য কেন্দ্র সরকার রাজ্যের পরামর্শকে উপেক্ষা করে একদিনে একসঙ্গে সোশ্যাল ডিসট্যানসিং বিন্দুমাত্র না মেনে ৪০-৫০ট্রেন পাঠিয়ে দিয়েছে। কিন্তু তারপরও পরিযায়ীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য যাবতীয় সাধ্যমত প্রচেষ্টা করেছে রাজ্য সরকার। আজও নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পরীক্ষা করা হয়েছে এবং তারপর বাসে করে বাড়ি পৌছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে সরকার।

Previous articleকেরলেই ফের একই কায়দায় হাতি-খুনের দ্বিতীয় ঘটনা ! দেশজুড়ে ছিঃ ছিঃ
Next articleআমফান বিধ্বস্ত বইপাড়া পুনর্গঠনে এবার সরকারি সাহায্যের আর্জি