চাষের জমি জলের তলায়, চাষির ঘরেই ভাত নেই!

বিঘের পর বিঘে জমি জলের তলায়। সবুজে ঘেরা চাষের জমি হারিয়ে গিয়েছে কোথায়! পচা গন্ধ ছড়িয়েছে চারপাশে। নোনা জলে পচে গিয়েছে ফসল। হাসনাবাদ, হিঙ্গলগঞ্জ, বসিরহাটের সংগ্রামপুর, ইটিন্ডা— সর্বত্র একই ছবি। ক’‌দিন আগেও মাঠ ভরে ছিল ধানে। পটল, ঝিঙে, ঢেঁড়স, উচ্ছে, তরমুজ, শসা। টানা লকডাউনের মধ্যেও সবজিখেত থেকেই গ্রাসাচ্ছাদন চলছিল বেশ। অনটন মালুম হয়নি।

সোনালি ধানখেত, সবুজ সবজিবাগান— সব এখন জলের তলায় নিশ্চিহ্ন। প্রায় না খাওয়া অবস্থায় চাষি পরিবারগুলির। ত্রাণের খাবার তাঁদের একমাত্র ভরসা এখন।
বসিরহাট ১ ব্লকের সংগ্রামপুর–শিবহাটি পঞ্চায়েত। এই এলাকার পটল, ঝিঙে, লঙ্কা, কলা ,কচু, শাক জেলার বিভিন্ন বাজারে যায়। কামারডাঙা, সংগ্রামপুর, মেরুদণ্ডী, শিবহাটি, লবঙ্গ গ্রামের সবজিখেত ছারখার করে দিয়েছে আমফান। কয়েক মাস আগে বুলবুল এসে এই গ্রামের সব ফসল তছনছ করে দিয়েছিল। পরপর জোড়া ধাক্কায় মাথায় হাত এলাকার কৃষকদের। কয়েকজন কৃষকের অবস্থা আরও করুণ । তাঁরা জমি লিজ নিয়ে ঋণ করে ওল, লালশাক, কচু, বেগুন, রাঙা আলু চাষ করে এখন সর্বস্বান্ত। কী করে ঋণ শোধ করবেন ভেবে পাচ্ছেন না।

অন্যদিকে হাসনাবাদের পাটলিখানপুর, ঘুনি, ঘেরিপাড়া, খাঁপুকুর এলাকার মাছচাষের একেবারে দফারফা করে গেছে আমফান। আমফানের পর বাঁধের কাজ চলতে চলতেই আবার পূর্ণিমার কোটালে রায়মঙ্গল, কালিন্দী, ডাঁসা, ইছামতীতে জল ঢুকে পড়ল গ্রামে। হাসনাবাদের পাটলিখানপুর পঞ্চায়েতের টিয়ামারিতে কোটালের জল আবার বাঁধের মাটি ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। হাউলি পাড়া, খাঁপুকুর, ঘুনি, বেলিয়াডাঙা গ্রামে এখন জোয়ার–ভাটা খেলছে। বুক সমান জল ঠেলে, কিংবা ভেলায় চেপে পাকা রাস্তায় এসে ত্রাণ সংগ্রহ করতে হচ্ছে।

Previous articleবন্ধ ঘরে সুরজিৎ কর পুরকায়স্থর প্রাক্তন স্ত্রী-শ্বাশুড়ির জোড়া মৃতদেহ! এলাকায় চাঞ্চল্য
Next articleমাসে ৭০ হাজার টাকা বেতন, একবর্ণ ইংরেজি পড়তে পারেন না শিক্ষিকা!