Wednesday, August 27, 2025

ডাক্তার দেখানো, চিকিৎসা করানোয় বহুগুণ খরচ বেড়েছে কলকাতায়

Date:

Share post:

সবার অলক্ষ্যে, ঘোষণা ছাড়াই, বেঁচে অথবা সুস্থ থাকতে চাওয়ার খরচ এক ধাক্কায় অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে কলকাতায়৷

একাধিক জায়গায় চিকিৎসা সম্পর্কিত খরচ এবং ক্ষেত্রবিশেষে চিকিৎসকের ফি এক ধাক্কায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে৷ বাড়িতে যাদের অসুস্থ স্বজন আছে, এই ঘটনায় চরম হতাশ ও আতঙ্কিত তাঁরা৷ এবং কেউ জানে না এভাবে অসহায় সাধারন মানুষকে আরও সংকটাপন্ন করার অপচেষ্টা রুখবে কে ? কোথায় জানাতে হবে অভিযোগ ?

এই মুহুর্তে ভারতে করোনা-সংক্রমণ লাফিয়ে বাড়লেও, দুই সরকারই দেশ ও রাজ্যকে ‘স্বাভাবিক’ দেখাতে নেমে পড়েছে৷ বাস,ক্যাব,ফেরি, অফিস-আদালত ধীরে ধীরে চালু হচ্ছে আজ সোমবার থেকেই৷

শহরের বেশ কিছু বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমের আউটডোর, পলিক্লিনিক, প্রাইভেট চেম্বার, প্যাথলজিক্যাল সেন্টার ইতিমধ্যেই চালু হয়েছে৷ চিকিংসা করাতে এ ধরনের সেন্টারে গেলে চমকে উঠতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে৷
চিকিৎসকদের একাংশের ফি যেমন আচমকা বেড়েছে, তেমনই বহুগুন বেড়েছে চিকিৎসা-সক্রান্ত খরচ৷ “করোনা প্রতিরোধ”-এর মোড়কে বাড়তি টাকা দিতে হচ্ছে রোগীর পরিবারকে৷ একাধিক জায়গায় অতিরিক্ত টাকার পরিমান পাঁচ-ছ’শো টাকারও বেশি৷

এই সব প্রতিষ্ঠানের বক্তব্য, করোনার সঙ্গে লড়াইয়ে সর্তকতামূলক পদক্ষেপ নিতে খরচ বেড়েছে৷ প্রশ্ন উঠেছে, এই বাড়তি খরচ কেন বহন করতে হবে শুধুমাত্র রোগী-পরিজনকেই। যে কোনও বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমের আউটডোর, পলিক্লিনিক, প্রাইভেট চেম্বার, প্যাথলজিক্যাল সেন্টারে পা রাখলেই এই ছবি দেখা যাচ্ছে৷
শেক্সপিয়র সরণির এক বেসরকারি হাসপাতালের আউটডোরে গেলে প্রথমেই ৪২০ টাকার রেজিস্ট্রেশন স্লিপ কাটতে হবে। এখানে ডাক্তারের ফি -র বাইরে এই টাকা দিতে হচ্ছে করোনা প্রতিরোধের অঙ্গ হিসেবে!ঢাকুরিয়ার এক বেসরকারি হাসপাতালের
আউটডোরে ঢুকলেই হাত স্যানিটাইজ করানো হচ্ছে, দেওয়া হচ্ছে নতুন একজোড়া মাস্ক। পরে দেখা যাচ্ছে রেজিস্ট্রেশন চার্জ ও চিকিৎসকের ফি ছাড়াও ১৫০ টাকা অতিরিক্ত নেওয়া হচ্ছে ‘ওপিডি সান্ড্রি ফি’ বাবদ।

এই অতিরিক্ত খরচ আউটডোরের চেয়ে ইন্ডোরে বেশি। গত বৃহস্পতিবার এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে পাটুলির বাসিন্দা এক তরুণীর। জন্ডিসের পুরোনো সমস্যা থাকায় ৭০ বছরের বাবাকে তিনি ভর্তি করান ইএম বাইপাস লাগোয়া একটি বেসরকারি হাসপাতালে। ভর্তির সময়েই হাসপাতাল জানিয়ে দেয়, সতর্কতার কারণে তাঁরা রোগীর করোনা পরীক্ষা করাবেন। সেই রিপোর্ট যতক্ষণ না-আসছে, ততক্ষণ পর্যন্ত রোগীকে থাকতে হবে আইসোলশন-সিসিইউ ওয়ার্ডে। করোনা টেস্টের খরচ ৪ হাজার টাকা। আপত্তি করেননি তরুণী। কিন্তু করোনার রিপোর্ট না-আসা পর্যন্ত কেন দু’দিনের ‘আইসোলেশন ওয়ার্ডে’ থাকার খরচ হিসেবে পরিবারকে ২০ হাজার টাকা অতিরিক্ত গুনতে হলো, কেনই বা ওই ২ দিন চিকিৎসকের ব্যবহার করা PPE-র জন্য তাঁকে প্রায় ২ হাজার টাকা দিতে হলো, তা এখনও বুঝে উঠতে পারেননি ওই তরুণী, যিনি বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন৷

এদিকে, ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় এ সম্পর্কে বলেছেন, “এই বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। অনেক জায়গাতেই সতর্কতার নামে রোগীকে অনর্থক বাড়তি ব্যয়ভার বহন করতে হচ্ছে। কিন্তু কেউ যদি এই নিয়ে কমিশনে লিখিত অভিযোগ না-করেন, তা হলে আমাদেরও পদক্ষেপ করতে অসুবিধে হচ্ছে।”

রাজ্য প্রশাসনের এক্ষেত্রে কি কিছুই করার নেই? প্রশ্ন করছেন সাধারন মানুষ৷

spot_img

Related articles

বিরক্ত মিঠুন? এড়াচ্ছেন বঙ্গ বিজেপির একাধিক কর্মসূচি

বারবার রং বদল করে আপাতত গেরুয়াতে ঠেকেছেন ডিস্কো ড্যান্সার মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। ভোটের আগে বা বিজেপির. (BJP)...

আরজি কর কাণ্ডে ভুয়ো প্রচারের অভিযোগ! নোটিশ চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামীকে

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক পড়ুয়া অভয়ার মৃত্যুকে ঘিরে ভুয়ো প্রচার মামলায় নোটিশ ধরাল কলকাতা পুলিশ। পুলিশের...

দুর্গাপুজোর আগে রাজ্যে ডেঙ্গি-উদ্বেগ! টানা বৃষ্টিতে বাড়ছে আশঙ্কা 

দুর্গোৎসবের মুখে একদিকে নিম্নচাপের জেরে টানা বৃষ্টি, অন্যদিকে ডেঙ্গি সংক্রমণ রাজ্যবাসীর কপালে ভাঁজ বাড়াচ্ছে। জুলাইয়ের শেষ দিক থেকে...

মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর স্টলে হঠাৎ মুখ্যমন্ত্রী! কিনলেন শাড়ি 

বর্ধমানে প্রশাসনিক সভায় এসে হঠাৎ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর স্টলে হাজির মুখ্যমন্ত্রী। শুধু মহিলাদের হাতের কাজই ঘুরে দেখলেন না, কেনাকাটাও...