সাহসী কিশোরীটি প্রায় ১২ ঘন্টার কঠিন পরিস্থিতি পেরিয়ে West Bengal Commission for Protection of Child Rights সক্রিয় সহযোগিতায় পাচার হওয়ার হাত থেকে বাঁচলো !
গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ একটি অজানা নম্বর থেকে আমার ফোনে ক্ষীনকন্ঠী কিন্তু দৃঢ় আওয়াজের এক নাবালিকা ফোন করেন, উত্তর চব্বিশ পরগনার প্রায় বর্ডার সংলগ্ন একটি গ্রাম থেকে। সবে মাধ্যমিক দিয়েছে।
জানায়, এলাকার এক সহৃদয় “দিদি” র কাছে “ও” মন খুলে ওর উপর হওয়া নির্যাতনের কথা বলতে পারতো। ওঁনার থেকেই আমার নম্বর বছর চারেক পেয়েছিল আর রেখে দিয়ছিলো ! এখন ওই প্রতিবেশীর বাড়ি এসেই আমাকে ওনার ফোন থেকেই ফোন করছেন।
কিশোরীর অভিযোগ মারাত্মক: ওঁর বাবা ওঁকে বিয়ের নামে রাজস্থানে পাঠিয়ে (পরুন পাচার) করার চেষ্টায় আছেন। ওঁর তিন মাসের বড়ো দিদিকে ইতিমধ্যেই পাঠানো হয়ে গেছে। ওঁর ভাই আছে। ওঁর বাড়িতে “মেয়েদের” পছন্দ করা হয় না ! এই জায়গা টি কিন্তু বারাসাত (জেলার সদর শহর থেকে) গাড়িতে আধঘন্টার দূরত্ব!! ওঁর আবেদন, ও পড়া শেষ করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায়! রাজস্থানে হারিয়ে যেতে চায় না, কোন মতেই!!
কাল সেই সন্ধে থেকে কমিশন, চাইল্ড লাইন, পুলিশ, সহৃদয় প্রতিবেশী সকলের সাহায্য , “চাইল্ড লাইনের গাড়ির অভাব” , “স্থানীয় পুলিশের এই সব বিষয়ে যুক্ত থাকার স্বদিচছার অভাব”, পরিবারের “মিথ্যা কথার পাহাড়” টপকে , সাহসী মেয়েটি এক কাপড়ে বাড়ি ছাড়লো!
শিশু সুরক্ষা কমিশনের সহায়তায় এই নাবালিকা বিয়ের বিরুদ্ধে, পাচারের বিরুদ্ধে, কন্যা সন্তানের প্রতি এহেন অসম্মানের বিরুদ্ধে, সিস্টেম র পুরুষতান্ত্রিকতার বিরুদ্ধে, নিজের তথাকথিত সবথেকে কাছের পরিবারের বিরুদ্ধে শক্ত পায়ে দাঁড়িয়ে, সম্মানের সাথে মেয়ে হিসাবে, কন্যা হিসাবে, মহিলা হিসাবে, “শক্তি রূপে” দাঁড়ালো !
বলতে পারেন আমরা কজন এই সাহস সারা জীবনে কোনো দিন দেখাতে পারি বা পেরেছি, বা পারতাম ?
এই কন্যা আমার কাছে “ভারতবর্ষ” , আমার “দেশ” , আমার “সাহস” , আমার “অনুপ্রেরণা”
যাঁদের ছাড়া এই লড়াই জেতা যেতো না তাঁরা হলেন মাননীয়া চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী, সদস্যা এবং নারী মুক্তির অনুপ্রেরণা সুদেষ্ণা রায়। কমিশনের সুস্মিতা চন্দ, মৌমিতা, আমার বন্ধু, লড়াকু সৈনিক তানিষ্ঠা খাশনবিশ চাইল্ড লাইন, মেয়েটির প্রতিবেশী তথাগত, অপর্ণা অভিক
জিতুক কন্যারা, জিতুক দেশ