অনলাইনে অর্ডার দিয়ে হাতে ‘ভগবত-ম্যানিফেস্টো’!

রাম-বামের এমন সখ্যতার নিদর্শন মেলা ভার। কথাটা ঠিক রাজনৈতিক নয়, এটা হয়ত এখন একজনের মানসিক পরিস্থিতি। যিনি বামেদের ‘ধর্মগ্রন্থ’ অর্ডার দিয়ে হাতে পেলেন সেই বইটি যাতে হাত রেখে বিভিন্ন সময় সত্যি-মিথ্যে বলে আসছে বাদী-বিবাদী দুই পক্ষই। গড়িয়ার বাসিন্দা সুতীর্থ দাস একটি বহুল প্রচলিত অনলাইন শপিং সাইটে অর্ডার দিয়েছিলেন ‘কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো’। যথাসময়ে তাঁকে জানানো হয় যে বইটি আসছে। অফিসে কাজের মধ্যেই তিনি খবর পান বাড়িতে তাঁর অর্ডার মতো পার্সেল পৌঁছে গিয়েছে। আগে অবশ্য অনলাইনে সব টাকা মিটিয়ে দেন তিনি। তারপর বাড়ি ফিরে সন্ধেবেলায় মোড়ক খুলে বিস্মিত, হতবাক, বলা ভালো চক্ষু চড়কগাছ সুতীর্থ দাসের। কারণ, কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টোর বদলে তাঁকে যেটা পাঠানো হয়েছে সেটা একশো কুড়ি পৃষ্ঠার ইংরেজিতে লেখা ‘ভগবৎগীতা’ ।

বিষয়টি সুতীর্থ নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন। জানিয়েছেন, কীভাবে তাঁর অর্ডার করা বইয়ের বদলে ঠিক উল্টো মেরুর একটি বই এসে পৌঁছল সেটা তিনি বুঝে উঠতে পারছেন না। ফেসবুকে তাঁর পোস্টের তলায় পরিচালক অনিকেত চট্টোপাধ্যায় রসিকতা করে লিখেছেন, “একটা ফুটকির তফাৎ ভাই”। বিভিন্ন রসিকতা করে অনেকেই মন্তব্য করেছেন।
তবে অনলাইন শপিং সাইটটি কী কারণে কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো বদলে বেছে বেছে শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা পাঠাল- এ বিষয়ে তারা কিছু জানিয়েছে কি না সেটা অবশ্য সুতীর্থ তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করেনি। অনলাইন শপিং সাইটগুলি ভুল জিনিস প্রায়ই পাঠায়। মোবাইলের বদলে ইটের টুকরো আসে। এই প্রতারণায় বাদ পড়েননি বিখ্যাত ব্যক্তিত্বরাও। কখনও শপিং সাইটগুলি ভুল স্বীকার করে। আবার কখনও দায় চাপায় ডেলিভারি ম্যানের উপর। কোন কোন সাইট চুপচাপ বিষয়টি চেপে যায়। কিন্তু কোনও ডেলিভারি পার্সেন একজনের কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো বের করে প্যাকেটে ভগবতগীতা পুরে দেবেন এই কথাটা কারও পক্ষেই হজম করা একটু কঠিন। বিষয় যাইহোক, মিল হয়ত এক জায়গাতেই আছে, তা হল জীবনকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি। দু’রকম হলেও দুটো বই বোধহয় সে কথাই বলে। আপাতত ফলের আশা না করে সুতীর্থ দাস শ্রীমদ্ভগবদগীতাটিকে আত্মস্থ করছেন কি না সেটাও হয়তো বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করবেন তিনি। তবে তিনি জানিয়েছেন তাহলে বাড়িতে একটি সম্পূর্ণ ‘শ্রীমদ্ভগবদগীতা’ আছে।

Previous articleদেশে করোনায় মৃত্যু সংখ্যা ১০ হাজার ছুঁইছুঁই!
Next article“সুড়ঙ্গের শেষে আলো আছে”- কথা বলুন, শুনবে কলকাতা পুলিশ