অগ্ন্যাশয় থেকে বেরল ২ কেজির টিউমার! বিরল অস্ত্রোপচার এসএসকেএমে

দীর্ঘদিন ধরে পেটের যন্ত্রণায় ভুগছিলেন যুবক। ভেবেছিলেন গ্যাস অম্বলের ব্যথা। বহু জায়গায় চিকিৎসা করেও কোনও লাভ হয়নি। অবশেষে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হন মুর্শিদাবাদের কান্দির বড়েঞা থানা এলাকায় মালিয়ান্দি গ্রামের বাসিন্দা অনুপকুমার মণ্ডল। বিভিন্ন পরীক্ষা করে অগ্ন্যাশয়ের মধ্যে বিরল টিউমার ধরা পড়ে। চিকিৎসার পরিভাষায় যার নাম ‘‌‌প্যানক্রিয়াটিক নিউরো এন্ডোক্রিন টিউমার’। তারপর সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার করে রোগীকে নবজীবন দেন এসএসকেএমে সার্জারি বিভাগের ইউনিট ছয়–এর চিকিৎসকরা। অস্ত্রোপচারের পর সপ্তাহখানেক কেটেছে। রোগী এখন ভাল আছেন। কিছুদিন পর তাঁকে ছুটি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
পেশায় চাষি ওই যুবক মাস তিনেক আগে প্রথমে মুর্শিদাবাদের কান্দি হাসপাতালে দেখান। তারপর বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে। পরে বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দেখালে ২৯ মার্চ রেফার করা হয় এসএসকেএমে। কিন্তু লকডাউনের জন্য তেত্রিশ বছরের ওই যুবক আসতে পারেননি। ২৩ মে আসেন কলকাতায়। সার্জারি বিভাগের ওপিডিতে চিকিৎসকরা দেখার পর ভর্তি নেন। সিটি স্ক্যান, এমআরআই, প্রয়োজনীয় রক্ত পরীক্ষা করা হয়।
৯ জুন সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডাঃ বিতানকুমার চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে অত্যন্ত সন্তর্পণে পেট কেটে সম্পূর্ণ টিউমার বের করে দেখার পর অবাক হন। টিউমারের ওজন দু কিলো হলেও দৈর্ঘ্য প্রস্থে ও লম্বায় ছিল ১৫/১৩/‌‌১০ সেন্টিমিটার। অস্ত্রোপচারে সহায়তায় ছিলেন অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসার ডাঃ সুনন্দ দে, চিকিৎসক পবন মণ্ডল, দেবতনু হাজরা, চন্দ্রিকা ভট্টাচার্য। শুক্রবার রোগীর মা বলেন, ‘‌ছেলে আগের থেকে এখন একটু ভাল আছে।’
চিকিৎসকরা জানান, অগ্ন্যাশয়ে এই ধরনের টিউমার হলেও তা সাধারণত ছোট আকৃতির এবং ফাংশনাল হয়। কিন্তু এই রোগীর টিউমার অত্যন্ত বিরল প্রজাতির। প্রথমত তাঁর টিউমারটি অনেক বড়। দ্বিতীয়ত ম্যালিগন্যান্ট (‌ক্যান্সার প্রবণ)‌ হওয়া সত্ত্বেও নন–‌ফাংশনাল ছিল অর্থাৎ শারীরিক কোনও কার্যকারিতা ব্যাহত হয়নি।

Previous articleনবান্নে সাংবাদিকদের মুখোমুখি স্বরাষ্ট্রসচিব, কী বললেন তিনি?
Next articleছাত্র পরিষদের রক্তদান শিবিরে উৎসাহ দিতে হাজির বামেদের ছাত্র-যুবরা