45 বছর পার, কতটা জরুরি ছিল ‘জরুরি অবস্থা’!

45 বছর আগে আজকের দিনে গভীর রাতে জারি হয় জরুরি অবস্থা। 26 জুন অল ইন্ডিয়া রেডিও থেকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ঘোষণা করেন, “অযথা আতঙ্কিত হবেন না, রাষ্ট্রপতি জরুরি অবস্থা জারি করেছেন”। দেশ জুড়ে বিভিন্ন কারণে যখন ইন্দিরা গান্ধীর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের হয়েছে। প্রতিবাদ আন্দোলন চলছে। সেই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে 12 জুন এলাবাদ কোর্টে একটি রায় বের হয়। এই রায় জানানো হয়, ইন্দিরা গান্ধী নির্বাচনে দুর্নীতি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত। তাঁকে সংসদীয় রাজনীতি থেকে বহিষ্কার করা হল। এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার। 24 জুন শর্তসাপেক্ষে এই রায়ে স্থগিতাদেশ জারি হয়। বলা হয়, ইন্দিরা গান্ধী সংসদে যেতে পারবেন, তবে কোনও নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

সেই সময় কংগ্রেসের অন্দরে ইন্দিরা গান্ধীকে নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছিল। অনেক নেতাই চেয়ে ছিলেন তিনি পদত্যাগ করুন। কিন্তু সেই সময় তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন কংগ্রেস নেতা তথা পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশংকর রায়। জানা যায়, তাঁরই পরামর্শে জরুরি অবস্থার খসড়া তৈরি করেন ইন্দিরা। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ফকিরুদ্দিন আলি আহমেদ সেই নির্দেশ নামায় স্বাক্ষর করেন। এরকম কিছু যে ঘটতে চলেছে, রেডিওর ঘোষণার আগে পর্যন্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অনেক সদস্যই না কি সেটা জানা ছিল না।
জরুরি অবস্থার ফলে দিল্লির সংবাদপত্র অফিসে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাক স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতার মতো সাংবিধানিক অধিকার হরণ করা হয়েছিল। একের পর এক রাজনৈতিক নেতাদের জেলবন্দি করা হয়।
21 মাস ধরে চলা এই জরুরি অবস্থা আধুনিক ভারতের ইতিহাসে কলঙ্কিত অধ্যায় বলে বিবেচিত হয়। ইন্দিরা গান্ধী দাবি করেন, ওই সময় জাতীয় স্বার্থে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এর ফল অবশ্য পেয়েছিল ইন্দিরা সরকার। 21 মাস পরে যখন নির্বাচন হয়, তখন গদি হারায় কংগ্রেস। শুধু কেন্দ্র থেকে নয়, কংগ্রেস শাসিত অনেক রাজ্যেও পালাবদল ঘটে। 45 বছর পরে আজও 25 জুন তারিখ থেকে ভারতের গণতান্ত্রিক, সার্বভৌম পরিকাঠামোয় কলঙ্কিত দিন বলেই বিবেচনা করা হয় করেন বেশিরভাগ দেশবাসী।

Previous articleঅধিক ফি নেওয়ার অভিযোগে উত্তপ্ত ইছাপুর
Next articleহোম কোয়ারেন্টাইনেই করোনা-মুক্তি মালদহের নার্সের