আনলক ফেজ ওয়ানের পর থেকে অফিস-কাছারি, দোকান-হাট সবই প্রায় খুলে গিয়েছে। কিন্তু সমস্যা মেটেনি যাতায়াতের। সরকারি বাস শুরু থেকে চললেও তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট কম। ভাড়া বৃদ্ধির দাবি না মেটায় সব বেসরকারি বাস পথে নামেনি। অটো, ট্যাক্সি বা ক্যাবে যাতায়াতের সামর্থ সকলের নেই। ফলে মানুষ তাঁর কর্মস্থলে ঠিক মতো পৌঁছতে পারছেন না।
এই সবকিছু বিবেচনা করে ১ জুলাই থেকে শহরে মেট্রো চালানোর চিন্তাভাবনা করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সুরক্ষাবিধি মেনে চলতে হবে। দেখা হচ্ছে ১ জুলাই থেকে মেট্রো চালানো যায় কিনা! মেট্রো রেলের সঙ্গে এবিষয়ে আলোচনা করতে হবে।”
সূত্রের খবর, ৩ জুলাই থেকেই শহরের বুকে চাকা ঘুরতে পারে মেট্রো রেলের। বেসরকারি বাস মালিকরা ফের পরিষেবা বন্ধের হুমকি দেওয়ার পর নড়েচড়ে বসেছে রাজ্য সরকার। দ্রুত মেট্রো পরিষেবা চালু করতে তৎপরতা শুরু করেছে নবান্ন। বিষয়টি নিয়ে আজ, সোমবার মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করবেন স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন পরিবহন সচিব প্রভাত মিশ্র এবং মেট্রোরেলের শীর্ষ আধিকারিকরা।
এদিকে, সারা দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রাজ্যেও করোনা সংক্রমণ বাড়ছে লাফিয়ে। সেই পরিস্থিতিতে ১২ অগাস্ট পর্যন্ত গোটা দেশে লোকাল-প্যাসেঞ্জার-মেল-সহ সমস্ত রেল পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।
এই পরিস্থিতিতে মেট্রো চালু করতে গেলে একাধিক নিয়মবিধি মানতে হবে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রতিটি রেকের প্রতিটি গেটে আরপিএফ রাখতে গেলে একটি মেট্রোতেই শুধু ৩২ জন আরপিএফ রাখতে হবে। আদৌ তা সম্ভব কিনা দেখা হবে। প্রত্যেকটি ট্রেন জীবাণুমুক্ত করতে হবে। মক ড্রিল করতে হবে।
টিকিট কাউন্টার বা বুকিং কাউন্টারে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখা থেকে শুরু করে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত প্ল্যাটফর্ম-এ কতজন যাত্রীকে একসঙ্গে প্রবেশ করানো হবে, সেগুলি নিয়েও বিস্তর আলোচনা হবে।
স্বাস্থবিধির ক্ষেত্রে মেট্রোতে কেউ দাঁড়িয়ে যেতে পারবেন না।
সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই মেট্রোতে বসতে হবে। যতগুলি সিট, ঠিক ততগুলিই টিকিট বিক্রি করতে হবে। ইত্যাদি এমন অনেক বিষয় কীভাবে বজায় রেখে মেট্রো চালানো যায়, এদিনের বৈঠকে সেই প্রসঙ্গ উঠে আসবে। তারপরই বোঝা যাবে আদৌ এমন নিয়ম-নীতি মেনে মেট্রো চালানো সম্ভব কিনা!