টাইটানিকের সিক্যুয়াল? বেঁচে ফিরছেন সেই জ্যাক?

টাইটানিক ডুবেছিল ১৯১২ সালের ১৪-১৫ এপ্রিলে আটলান্টিক মহাসাগরে। গত শতকের অন্যতম বড় ট্রাজিডি বলা হয় টাইটানিক দুর্ঘটনাকে। দেড় হাজার যাত্রী এবং কর্মী নিয়ে ডুবে গিয়েছিল সেইসময় অত্যাধুনিক বিশাল জাহাজ। কিন্তু তারপর থেকে তার ঢেউ বারবার আছড়ে পড়েছে সাহিত্যে। এরপরের থেকে একটি প্রবাদ বাক্য চালু হয়ে যায়- যদি টাইটানিক ডুবে যেতে পারে, তাহলে যা কিছুই ডুবে যেতে পারে। কারণ, যাঁরা তৈরি করেছিলেন এই জাহাজ, তাঁরা ভেবেছিলেন কখন ঢুকবে না এটি।

বিভিন্ন সময়ে টাইটানিককে ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে, গল্প, উপন্যাস, ছবি। তবে ১৯৯৭-তে যে ছবি তৈরি হয় হলিউডে, তাও এক ইতিহাস। পরিচালনায় জেমস ক্যামেরন। লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও এবং কেট উইন্সলেট অভিনীত এই ছবি ইতিহাস সৃষ্টি করে।

এরপরে ‘টাইটানিক টু’ নামে একটি ছবি তৈরি হয়, তবে কখনই আগের টাইটানিকের সিক্যুয়াল বলা চলে না। হঠাৎ ‘টাইটানিক 2: জ্যাকস ব্যাক’ বলে একটি ছবির ট্রেলার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। ২০১৯-এ ট্রেলার ভাইরাল হওয়ার পরেই হঠাৎ করে খবর ছড়িয়ে পড়ে, ২০২০-তে মুক্তি পাবে ‘টাইটানিক 2 জ্যাক’স ব্যাক’। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভিডিও পোস্ট হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে সেটা ১৫ মিলিয়নের বেশি ভিউ হয়।

তবে আসল খেলাটা কেউ লক্ষ্য করেনি। সেটা হল ট্রেলারটিতে লেখা ছিল প্যারোডি। অর্থাৎ ‘টাইটানিক টু : দ রিটার্ন অফ জ্যাক’ মুক্তি পাচ্ছে না। কারণ এই ট্রেলারটি এটি তৈরি করেছেন একজন ইউটিউব ইউজার VJ4rawr2। এটি কোন ছবির ট্রেলার নয়।

কিন্তু এতে নিখুঁত গল্প। ১০০-র পর তুষারের মধ্যে আটকে থাকা জ্যাককে উদ্ধার করা হচ্ছে। তিনি মরেননি, ঘুমিয়ে ছিলেন। আর ঘুম ভাঙতেই অচেনা পৃথিবীতে এসে দিশেহারা। বেঁচে নেই তাঁর প্রেমিকা রোজ। এদিকে টাইটানিকের একমাত্র জীবিত প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে তাঁকে খুঁজছে সবাই। টানটান গল্প; চরম উত্তেজনা। অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও সেই লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও এবং কেট উইন্সলেট। শুধু নজর করলে বোঝা যাবে, যে এত বছরের ব্যবধানে তাঁদের চেহারায় কোনও পরিবর্তন হয়নি।
হবে কী করে? এই ট্রেলারে যে অংশগুলি ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলি ‘টাইটানিক’- ছবির বিভিন্ন অংশ। আর তার সঙ্গে সেই সময় অভিনীত লিওনার্দো এবং কেটের অন্যান্য ছবির ক্লিপিংস জোড়া হয়েছে। যেমন, ট্রেলারটিতে রয়েছে লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিওর ‘বিচ’, ‘রিভলিউশনারি রোড’- এইসব ছবির অংশ। ৪৯ সেকেন্ডের এই ভিডিওতে কেট উইন্সলেটের বদলে দু’এক জায়গায় দেখা গেছে কেইরা নাইটলিকেও। কিন্তু অত্যন্ত মুন্সিয়ানার সঙ্গে তাঁর অভিনীত ছবির অংশ এখানে জোড়া হয়েছে। যিনি এই ট্রেলারের নির্মাতা, তিনি অবশ্য ইউটিউবের বর্ণনা দিতে গিয়ে স্পষ্ট বলেছেন, “এই ছবির ট্রেলার ভুয়ো। এটি একটি প্যারোডি ট্রেলার। নতুন কিছু ছবি এবং পুরনো ফুটেজের সম্পাদনা করে এটা তৈরি করা হয়েছে। সঙ্গে রয়েছে ভয়েস ওভার, স্পেশাল এফেক্ট এবং মূল ছবির গান।

আর নতুন-পুরনো মিশিয়ে মিশেলে যে ট্রেইলারটিVJ4rawr2 তৈরি করেছেন, সেটি দেখে সত্যিই টাইটানিকের সিক্যুয়ালের দেখার লোভ হয় দর্শকদের। জেমস ক্যামেরনকে অনুরোধ করতে ইচ্ছে করে, ট্রেলারের গল্পের মতোই বরফের মধ্যে বেঁচে থাকুন জ্যাক। ১০০র পরে সেই শীতলতা ছেড়ে তিনি যখন জাগবেন, তখন এই একবিংশ শতাব্দীর পৃথিবীতে রোজকে ছাড়া কেমন লাগবে তাঁর? সেই ছায়াপথ ধরেই না হয় এগোক কোনও গল্প। জেমস ক্যামেরন, আপনি ট্রেলারটি দেখেছেন? একবার ভেবে দেখবেন নাকি প্রস্তাবটা।

 

Previous articleভারতে নিষিদ্ধ হল টিক টক সহ ৫৯ টি চিনা অ্যাপ
Next articleনাটক করছে বিজেপি, পণ্য বয়কটের ডাক দিয়ে চিনের টাকা নিচ্ছে, অভিযোগ আপ নেতার