বিদ্রোহের ভয়েই গালওয়ানে সেনামৃত্যুর কথা চেপে রেখেছে চিন!

লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারতীয় সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে অনেক বেশি সংখ্যায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির। ভারতের ২০ জন সেনা শহিদ হয়েছেন ১৫ জুনের ঘটনায়। কিন্তু তার দ্বিগুণের বেশি প্রাণহানি হয়েছে চিনের তরফে, যার মধ্যে এক কর্নেলও আছেন বলে চিনেরই সংবাদমাধ্যম স্বীকার করেছে। আশ্চর্যের বিষয় হল, ভারতের সীমান্তে বেআইনি অনুপ্রবেশের মত নিজেদের সেনামৃত্যুর খবরও বিলকুল চেপে গিয়েছে চিন। চিনা বিদেশমন্ত্রক ক্ষয়ক্ষতির প্রশ্নে নিরুত্তর। ইতিমধ্যেই সেদেশের সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়ে বহু চিনা নাগরিক মন্তব্য করেছেন, সেনাদের কীভাবে সম্মান করতে হয় তা ভারতের কাছ থেকে শিখুক শি জিনপিং সরকার। সেনা হতাহতের প্রশ্নে বেজিংয়ের চূড়ান্ত অস্বচ্ছতা ও গোপনীয়তার কারণ এবার ফাঁস করলেন সিটিজেনস পাওয়ার ইনিশিয়েটিভ ফর চায়না নামে এক সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা জিলানি ইয়াং। ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’ সংবাদপত্রে তিনি লিখেছেন, চিনের বর্তমান ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসারদের একাংশ জিনপিং সরকারের উপরে অসন্তুষ্ট। তাঁরা সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার সুযোগ খুঁজছেন। চিনের কমিউনিস্ট পার্টির একদলীয় সরকারের বিরোধী জিলানি ইয়াং-এর মতে, সাধারণ মানুষ যদি জানতে পারে, গালওয়ানে ভারতীয় সেনার চেয়ে বেশি সংখ্যক চিনা সেনার মৃত্যু হয়েছে, তাহলে দেশজুড়ে অসন্তোষ দেখা দেবে। তাতে কমিউনিস্ট পার্টি পরিচালিত সরকার বড়সড় বিপদে পড়তে পারে। দেশেই প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে তাদের একাধিপত্যের নীতি। ওয়াশিংটন পোস্টে জিলানি লিখেছেন, কমিউনিস্ট পার্টির শক্তির উৎস হল গণমুক্তি ফৌজ। কিন্তু সেই বাহিনীর কয়েক হাজার সেনাই চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর প্রতি অসন্তুষ্ট। অবসরপ্রাপ্ত সৈনিকদের একাংশও প্রশাসনের প্রতি ক্ষুব্ধ। তাঁরা যদি জানতে পারেন, গালওয়ান উপত্যকায় চিনের তরফে বড় মাপের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তাহলে বিদ্রোহের সূচনা হতে পারে। জিলানি ইয়াং লিখেছেন, চিনের কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্ব অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মীদের অসন্তোষ উপেক্ষা করতে পারছেন না। কারণ তাঁরা জানেন, প্রাক্তন সেনা অফিসাররা সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করার ক্ষমতা রাখেন। তাঁদের দমন করার জন্য অতীতে অনেক চেষ্টা হলেও লাভ হয়নি। সেনা বিদ্রোহের ভয়েই তাই তথ্য চাপার নীতি নিয়েছে জিনপিং প্রশাসন।

 

Previous articleখনি বেসরকারিকরণ ইস্যুতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ধর্মঘটে RSS প্রভাবিত BMS
Next articleদেশে করোনায় মৃত্যু ১৮ হাজারের দোরগোড়ায়, ৬ লক্ষের গণ্ডি পেরোলো আক্রান্ত