গাছ কাটতে হওয়ায় আত্মঘাতী দম্পতি!

গাছ অন্তপ্রাণ । ঝড়-বৃষ্টি হলে গাছের জন্য সব থেকে বেশি দুশ্চিন্তায় থাকতেন তাঁরা। আর আমফানের তাণ্ডবে হেলে পড়েছিল দু’টি নারকেল গাছ । বাধ্য হয়ে কাটতে হয়েছিল গাছ দুটি। সেই শোক সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হলেন দম্পতি!

বিদ্যুতের তার জড়ানো অবস্থায় বৃদ্ধ দম্পতির দেহ উদ্ধারের ঘটনায় শনিবার চমকে উঠেছিলেন চুঁচুড়াবাসী। মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে দম্পতির এক মেয়ে রবিবার দাবি করেন, আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল তাঁর বাবা-মায়ের সাধের দু’টি নারকেল গাছ। ইচ্ছার বিরুদ্ধেই কাটতে হয়েছিল গাছ দু’টি। সেই শোক সহ্য করতে না-পেরে আত্মঘাতী হন তাঁরা।
গাছঅন্ত প্রাণ ছিলেন বৃদ্ধ ওই দম্পতি। ঝড়-বৃষ্টি হলে যাদের নিয়ে সব থেকে বেশি দুশ্চিন্তায় থাকতেন তাঁরা, সেই দু’টি নারকেল গাছ আমপানের তাণ্ডবে হেলে পড়েছিল। বিপজ্জনক ভাবে ঝুঁকে পড়েছিল বস্তির দিকে। অগত্যা, অনিচ্ছা সত্ত্বেও গাছ দু’টি কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন চুঁচুড়ার তালডাঙা গুপ্তগলির বাসিন্দা গঙ্গাধর দাস। কিন্তু বুঝেছিলেন, স্ত্রী জ্যোতিদেবী কখনই এই সিদ্ধান্ত মানবেন না। তাই, গত বৃহস্পতিবার সকালে স্ত্রী যখন মন্দিরে গিয়েছিলেন পুজো দিতে, তখন কাঠুরিয়া ডেকে নারকেল গাছ কাটা শুরু করেছিলেন গঙ্গাধরবাবু। বাড়ি ফিরে গাছের গায়ে করাত চলছে দেখে মেজাজ হারান জ্যোতিদেবী। গঙ্গাধরবাবুর সঙ্গে বিবাদ হয়। খবর পেয়ে দম্পতির দুই মেয়ে এসে শান্ত করেন বাবা-মাকে। দু’দিন পরেই শনিবার দুপুরে নিজেদের ঘরেই মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় দম্পতির দেহ। দু’জনেরই পায়ে জড়ানো ছিল বিদ্যুতের তার। তারের সংযোগ ছিল প্লাগ পয়েন্টে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, আত্মঘাতী হয়েছেন তাঁরা।
দম্পতির ছোট মেয়ে সোমা সেনের দাবি, ‘‘বাবা নারকেল গাছ দু’টি কাটার সিদ্ধান্ত নেওয়াতেই অশান্তির সৃষ্টি হয়। তাতে দু’জনেই আত্মঘাতী হবেন এটা আমরা বুঝতেই পারিনি।’’

শনিবার দুপুরে প্রতিবেশীরা দম্পতির কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে ঘরের দরজা ঠেলেন। দেখেন, মেঝেতে পড়ে রয়েছে বিদ্যুতের তার জড়ানো তাঁদের দেহ। পুলিশ এসে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করে দেহ দু’টি চুঁচুড়া হাসপাতালে নিয়ে য়ায়। পরে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়।

Previous article৫০ শতাংশ শূন্যপদ বিলোপের নির্দেশ ভারতীয় রেলের
Next articleপ্রবীণদের পোস্টাল ব্যালটে ভোট, প্রতিবাদ জানিয়ে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি তৃণমূলের