নেপালের প্রধানমন্ত্রীর ভাগ্য ঝুলে রইল বুধবার পর্যন্ত

এই নিয়ে পরপর তিনবার পিছিয়ে দেওয়া হল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির অতি গুরুত্বপূর্ণ স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক। সোমবারই নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির অপসারণ নিয়ে স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। শেষ মুহূর্তে তা পিছিয়ে বুধবার করা হয়েছে। এদিন বৈঠক স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানান ওলির মিডিয়া উপদেষ্টা সূর্য থাপা। তবে তার কোনও কারণ জানাননি তিনি। সূত্রের খবর, স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকের আগে মঙ্গলবার ফের একান্ত বৈঠকে বসতে পারেন ওলি ও দলে তাঁর কট্টর বিরোধী পুষ্পকমল দহল বা প্রচণ্ড।

প্রসঙ্গত, ব্যক্তিগত স্বার্থে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করে নেপালে রাজনৈতিক সংকট ডেকে এনেছেন চিনের দালাল হিসাবে কাজ করা নেপালি প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। তাঁর নিজের দল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টিই এখন তাঁর স্বেচ্ছাচারিতায় প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। ওলির দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যই তাঁর পদত্যাগ দাবি করেছেন। চিনের অঙ্গুলিহেলনে কাজ করা ওলি কয়েকদিন আগে অভিযোগ করেন, ভারতই তাঁকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরাতে চায়। এজন্য দিল্লিতে বসে চক্রান্ত হচ্ছে। নেপালের প্রধানমন্ত্রীর এই ভিত্তিহীন অভিযোগ খারিজ করে দেয় তাঁর নিজের দল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টিই। দলের কো- চেয়ারম্যান পুষ্পকমল দহল ওরফে প্রচণ্ড নেপালের প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ভারত নয়, আমরাই আপনার পদত্যাগ চাই। পার্টিকে অগ্রাহ্য করে আপনি স্বৈরাচারীর মত সরকার চালাচ্ছেন। ব্যক্তিগত স্বার্থে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নষ্ট করছেন, একটি দেশের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক রীতিনীতি লঙ্ঘন করে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছেন। আপনার অবস্থান রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিকভাবে ভুল। আপনি থাকলে নেপালের মানুষের ক্ষতি। আপনি ক্ষমতা থেকে সরে যান। নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ডর এই দাবিকে সমর্থন করেছেন অন্য দুই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মাধব নেপাল ও ঝালানাথ খানালও। নেপালের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, দেশের শাসক দল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির সর্বোচ্চ শক্তিশালী স্ট্যান্ডিং কমিটির ৪৫ জন সদস্যের মধ্যে ৩০ জনই ওলির অপসারণ চান। এই পরিস্থিতিতে সোমবার স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে ওলির ভাগ্য ঠিক হওয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে তা পিছিয়ে বুধবার ডাকা হয়েছে। তবে দলের সিদ্ধান্তকে অমান্য করে প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকতে যে মরিয়া ওলি তার ইঙ্গিতও মিলছে। শোনা যাচ্ছে, প্রশাসনিক সমস্ত ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চিনের পরামর্শে নেপালে অর্ডিন্যান্স জারি করতে পারেন ওলি। সেজন্য রাষ্ট্রপতি বিদ্যাদেবী ভাণ্ডারীর সঙ্গে কয়েক দফায় বৈঠকও করেছেন প্রধানমন্ত্রী। চলতি সংকটের আবহে রাষ্ট্রপতি ওলির পাশেই আছেন। ওলির নির্দেশেই তিনি পার্লামেন্টের বাজেট অধিবেশন স্থগিত করার ঘোষণা করেছেন। ওলি যে শেষমুহূর্তে মরিয়া হয়ে চরম সিদ্ধান্ত নিতে পারেন তার ইঙ্গিত মিলেছে তিনি পরপর দুবার দেশের সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক করায়। নিজের দলের অনুগত মন্ত্রীদের নিয়ে পাল্টা ঘোঁট পাকানোর পাশাপাশি রবিবার সেনাপ্রধান জেনারেল পূর্ণচন্দ্র থাপার সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন ওলি। এদিকে তাৎপর্যপূর্ণভাবে ওলিকে বাঁচাতে সক্রিয় চিনও। ওলি ও বিদ্যাদেবী সহ নেপালের প্রভাবশালী রাজনীতিকদের সঙ্গে নেপালের চিনা রাষ্ট্রদূত দফায় দফায় বৈঠক করছেন বলে খবর।

 

Previous article“এটা উত্তরপ্রদেশ নয়, এখানে তাণ্ডবলীলা চলবে না”, অর্জুনকে মনে করিয়ে দিলেন ফিরহাদ
Next articleকরোনায় একদিনে রেকর্ড মৃত্যু রাজ্যে, আক্রান্ত ২৩ হাজার ছুঁইছুঁই!