গান্ধী পরিবার নিয়ন্ত্রিত ৩ ট্রাস্টের আর্থিক অনিয়মের তদন্তে কেন্দ্রের কমিটি

প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে দিল্লির সরকারি বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পর এবার গান্ধী পরিবারের বিরুদ্ধেই আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের তদন্তে নামলো মোদি সরকার৷

গান্ধী পরিবারের তিনটি ট্রাস্টের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ এনে তদন্তের নির্দেশ দিলো কেন্দ্র৷ এই তিন ট্রাস্টের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ এনেছিল কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি। বিজেপির আনা ওই অভিযোগে সাড়া দিয়েই এ বার তদন্তের নির্দেশ দিল কেন্দ্র। তদন্তের জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক গঠন করেছে Inter- Ministerial বা মন্ত্রিপরিষদের কমিটি৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক বুধবার এক টুইটবার্তায় এ কথা জানিয়েছে৷

কেন্দ্রের এই তদন্তের নির্দেশ নিয়ে কংগ্রেস বলেছে, চিনের সঙ্গে চলা সংকটে সরকারের ব্যর্থতা থেকে সবার নজর ঘোরাতেই এই অভিযোগ এনেছে বিজেপি। আর সে জন্যই তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের মুখপাত্র এদিন সকালে ট্যুইটে জানিয়েছে,
রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশন, রাজীব গান্ধী চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও ইন্দিরা গান্ধী মেমোরিয়াল ট্রাস্টের বিরুদ্ধে আয়কর নিয়ম ভঙ্গ করা ও বেআইনি আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে৷ সেইসব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে Inter- Ministerial কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। মন্ত্রক জানিয়েছে, এই কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেটের স্পেশাল ডিরেক্টর।

গত জুন মাসে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রথমবার এই অভিযোগ এনেছিলো শাসক বিজেপি। বিজেপি’র অভিযোগ, ক্ষমতায় থাকার সময় মনমোহন সিং সরকার প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে বেআইনিভাবে রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশনে অর্থদান করেছিল।
বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা বলেছিলেন, “মানুষকে সাহায্য করার জন্য PMNRF। কিন্তু UPA আমলে সেখান থেকে রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশনে টাকা দান করা হতো। PMNRF বোর্ডে ছিলেন সোনিয়া গান্ধী, আবার RGF-এর দায়িত্বেও ছিলেন সোনিয়া গান্ধী। এই কাজ নীতিবিরোধী এবং অস্বচ্ছ।” রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশন বা RGF-এর প্রধান কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। RGF বোর্ডে আছেন রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী পি চিদম্বরম ও মনমোহন সিং। বিজেপি পাশাপাশি অভিযোগ তোলে, ১৯৯১ সালের বাজেট বক্তৃতায় তত্‍‌কালীন অর্থমন্ত্রী মনমোহন সিং রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশনের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিলেন। , বিজেপি বলেছে, “১৯৯১ সালের বাজেট বক্তৃতার ১৬ নং পাতার ৫৭তম অনুচ্ছেদে তা বলা হয় মনমোহন সিং সরকার রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশনে ১০০ কোটি টাকা দিয়েছিলেন। বছরে ২০ কোটি করে ৫ বছরে এই টাকা দেওয়া হয়েছে৷” যদিও এই অভিযোগ খারিজ করে কংগ্রেস।
রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশনে চিন টাকা দিয়েছে বলেও এর আগে তোপ দেগেছিলো বিজেপি। এ ব্যাপারে বিজেপির অভিযোগ, ২০০৫-২০০৬ সালে রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশনে ডোনেশন দিয়েছে ভারতের চিনা দূতাবাস। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবি শংকর প্রসাদ এই অভিযোগ তুলে বলেছিলেন, ‘ইউপিএ আমলে চিনের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল? যে ডোনেশন দেওয়া হয়েছিল, সেটা কি চিনের আনুগত্য নয়? তারপরই কি চিনের সঙ্গে ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট করা হয়নি?’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘কংগ্রেসকে এ সব প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে, যদি এই টাকা চিনা দূতাবাস দিয়ে থাকে, তাহলে তা কোন খাতে খরচ হল!’

Previous articleস্বাস্থ্যবিধি মেনে বৃহস্পতিবার খুলছে মদনমোহন বাড়ি
Next articleবৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তর: বাড়ছে বন্যার আশঙ্কা, বৃষ্টির পূর্বাভাস কলকাতা-সহ দক্ষিণেও