বিধায়কের মৃত্যু নিয়ে প্রথমেই চড়া সুরে খেলবেন না, কুণাল ঘোষের কলম

কুণাল ঘোষ

একজন বিধায়কের রহস্যমৃত্যু। গলায় দড়ি দিয়ে ঝোলা মরদেহ।

অত্যন্ত খারাপ ঘটনা।
বড় খবরও বটে।
দাবি, রাজনীতি, প্রতিবাদ, বিতর্ক শুরু।

যদি এটা হত্যাই হয়, খুনিদের শাস্তি দাবি করি।
যদি আত্মহত্যাও হয়; কারণ সামনে আসুক।

কিন্তু এই মৃত্যু নিয়ে যাঁরা এখনই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে চড়া সুরে খেলছেন, তাঁদের বলি, সময় তো অনেক আছে। এখনই এতটা চালিয়ে না খেলাই ভালো। এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক আক্রমণের অভিমুখ তৃণমূলকে করা সহজ। সিবিআই দাবি সহজ। কিন্তু বোধহয় একটু ধরে খেলা ভালো।

মনে পড়ছে রমজান আলি খুনের ঘটনা।
এম এল এ হস্টেলে এম এল এ খুন।
তিনি ফরওয়ার্ড ব্লকের ছিলেন।
সেই সময় উত্তরবঙ্গের ওই এলাকায় সিপিএম বনাম ফরওয়ার্ড ব্লক মারামারিও চলছিল।
ভরা বাম জমানা।
রমজানসাহেবের দেহ তখনও ঘরে। তৎকালীন ডিসিডিডি গৌতম চক্রবর্তী তদন্ত করছেন।
দোতলায় মানস ভুইঞার ঘরে বসে কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বাংলা বনধের সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন।
অভিযোগ, সিপিএম খুন করিয়েছে।
ফরওয়ার্ড ব্লক তাতে ধুনো দিল।
বনধ হয়ে গেল। 356 জারির দাবি হল। সিবিআই চাওয়া হল।
ফরওয়ার্ড ব্লকও বলল রাজনৈতিক হত্যা।
বিরোধীদের বক্তব্য, শরিকি লড়াই।
সর্বত্র শিরোনাম এই বিষয়টা।

এবং শেষে দেখা গেল এই খুন নিতান্ত ব্যক্তিগত।
রমজানের স্ত্রীর সঙ্গে সচিবের প্রেম।
সেটি জানাজানি, অশান্তি থেকেই খুন।
ধরা পড়ে যান দুজনেই।

ফলে, এবারও, নির্দিষ্ট উপসংহার আর অভিযোগের আগে একটু সময় যাক।
তদন্ত হোক।
রাতে বিধায়ককে ডাকা হল, তিনি গেলেন এবং তারপর ঝুলন্ত দেহ মিলল, এ বড় কম কথা নয়।
তৃণমূল এত বড় ঝামেলা ডেকে আনবে, এটা অঙ্কে মেলে না।
বিধায়ক 2016তে কং-বাম জোটের প্রার্থী; পরে বিজেপিতে। তাঁর বৃত্তটি সম্পর্কে বা সমীকরণগত শত্রু সম্পর্কে বিস্তারিত জানা নেই।

ঘটনা মারাত্মক।
যদি খুন হয়ে থাকেন, দোষীদের ধরা হোক, যে দলেই তারা থাকুক।

আমার শুধু বক্তব্য, প্রথমেই রাজনীতির ব্যাট চালিয়ে না খেলে একটু দেখুন। নজর রাখুন। জানার চেষ্টা হোক কী হয়েছিল।
‘তৃণমূল জবাব দাও’ মিছিলের সময় তো আর পালিয়ে যাচ্ছে না।

প্রয়াত বিধায়কের আত্মার শান্তি কামনা করি।

Previous articleবৃহস্পতির থেকেও বড়! নতুন গ্রহের সন্ধান দিল নাসা
Next articleমাঝ সমুদ্রে যুদ্ধজাহাজে বিস্ফোরণ , আহত ২১