পুরপ্রশাসকমণ্ডলীর মুখ্য প্রশাসক হিসাবে প্রাক্তন পুরপ্রধান অংশুমান রায়ই এতদিন পর্যন্ত পুরসভা চালাচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বদলে গেল সোমবার । উত্তর ২৪ পরগনার হালিশহর পুরসভার
প্রাক্তন উপপ্রধান গ্রেফতার হতেই পদত্যাগ করলেন প্রাক্তন পুরপ্রধানও।
প্রবল
পদত্যাগের কারণ হিসেবে পারিবারিক কারণের কথা বলা হলেও, কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে অন্য কথা। পুরপ্রধানের বিজেপিতে যোগদান করা নাকি নিশ্চিত । এমনই বলছেন ওয়াকিবহাল মহলের একটা বড় অংশ । আবার কারও বক্তব্য, দল থেকেই তাঁকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অবশ্য গত লোকসভা নির্বাচনের পরে মুকুল রায়ের হাত ধরেই অংশুমানবাবু পা বাড়িয়েছিলেন বিজেপির দিকে।
পরে তৃণমূলে ফিরেও এসেছিলেন। পুরপ্রধানের পদও সামলাছিলেন। তাঁকে পুরসভার প্রশাসকমন্ডলীর চেয়ারম্যানও করা হয়। কিন্তু তারপরেও কেন তিনি সরে দাঁড়ালেন তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে । আর পুরোটাই ঘটেছে প্রাক্তন পুরপ্রধান রাজা দত্ত গ্রেফতার হওয়ার পরে পরেই। স্বাভাবিক ভাবেই পারিবারিক কারণে পদত্যাগের যুক্তি আদতে ধোপে টিকছে না।
সোমবার সকালে হালিশহর পুরসভায় সাংবাদিক বৈঠকে পদত্যাগের কথা ঘোষণার সময় দাবি করেন, ইতিমধ্যেই তাঁর সঙ্গে এই বিষয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কথা হয়েছে। তিনি ইস্তফা দেওয়ার বিষয়টি মঞ্জুর করার পরেই তিনি পদত্যাগ করছেন।
আসলে রাজা দত্তের গ্রেফতারির পর তাকে জেরা করে এমন বেশ কিছু কথা পুলিশ জানতে পেরেছে যা সামনে এলে অংশুমানবাবু অস্বস্তিতে পড়বেন । সেই সঙ্গে অস্বস্তিতে পড়বেন মুকুল রায় ও তাঁর পুত্র শুভ্রাংশু রায়। কারণ অংশুমান ও রাজা দুজনেই মুকুল অনুগামী। রাজার মুখ খোলা নিয়ে তৃণমূলের মাথাব্যথা নেই । তাঁদের চিন্তা ছিল অংশুমানকে নিয়েই। কারন বিজেপিতে গিয়েও তৃণমূলে ফিরে এসেছেন তিনি। তাই তাঁকে এখন পদত্যাগ করিয়ে কার্যত তাঁকে সেফ জোনে পাঠিয়ে দিল রাজ্যের শাসক দল। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন মুকুল ও শুভ্রাংশুর বিরুদ্ধে অলআউট আক্রমণে নামতে তৃণমূলের কোনও অসুবিধা হবে না ।