কোর্টে বড়সড় ধাক্কা খেল উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।
শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও মৌসুমী ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিলেন: পরের বছর থেকে সংসদ পরীক্ষার ফল প্রকাশে ইচ্ছেমত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রমোট করতে পারবে না। কাজ দিতে হলে আগাম যথাযথ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সকলকে সমান সুযোগ দিতে হবে।
জরুরি ভিত্তিতে এই মামলা নিয়ে নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়।
সংসদের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ফল প্রকাশের সাইটের তালিকায় একটিমাত্র বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ছিল।
এই নিয়ে প্রশ্ন তুলে জনস্বার্থ মামলা করেন সবিতাদেব বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আইনজীবী উৎপল বসু ও অয়ন চক্রবর্তী এদিন সওয়াল করেন। প্রধান বিচারপতি মামলাটি শুনানির জন্য গ্রহণ করে ডিভিশন বেঞ্চ চিহ্নিত করে দেন। সরকারের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত ছিলেন।
বিচারপতিরা এদিন সরকারি পরীক্ষার ফলাফলে ছাত্রছাত্রীদের তথ্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
কিশোর দত্ত বলেন,” এখন ফল প্রকাশে আর দু’একঘন্টা বাকি। এবারের তথ্যপঞ্জী আগেই ওই বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া হয়ে গিয়েছে। ফলে এখন থামানো অসম্ভব।”
তখন বিচারপতিরা এই পদ্ধতিতে আপত্তি জানিয়ে এবারের মত ছেড়ে দিলেও আগামী বছর থেকে এই পক্ষপাত বন্ধের নির্দেশ দেন।
যেহেতু এবারের তথ্য হস্তান্তর হয়েই গিয়েছে, তাই সেটা আটকানোর কোনো পথ ছিল না।
উৎপল বসু ও অয়ন চক্রবর্তী এই বিষয়টায় সংসদের সঙ্গে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের আঁতাতের অভিযোগ তোলেন। কিশোর দত্ত আদালতকে জানান কোনো আঁতাত নেই। ওরা কাজটা করতে আগ্রহী ছিল।
ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে প্রতিনিধিত্ব করার কথা ছিল বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যর। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ভিডিও কনফারেন্সে তাঁকে দেখা যায় নি।
কিশোর দত্ত মামলার মেনটেনেবিলিটি চ্যালেঞ্জ করে বলেছিলেন, আবেদনকারী পরীক্ষার্থী নন।
তার পাল্টা অয়ন বুঝিয়ে দেন, আবেদনকারী একটি দুঃস্থ মেধাবী ছাত্রআশ্রমের পদাধিকারী। ফলে ছাত্রদের স্বার্থে তিনি উদ্বিগ্ন।
এরপর কিশোরবাবুর আপত্তি উড়ে যায়।
আদালত থেকে ভিডিওতে সবিতাদেববাবুর মতামতও নেওয়া হয়।
পরে অয়ন চক্রবর্তী বলেন,” আদালতের রায়ে আমরা ভীষণ খুশি। যেহেতু এবার তথ্য হস্তান্তরিত, তাই এখন আর কিছু করার ছিল না। আমরা ফল প্রকাশে বিঘ্নও চাইনি। কিন্তু বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে কোর্ট নীতিগত রায় দিয়েছে। এতে এই অনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট কাজ বন্ধ হবে।”
আদালতের পর্যবেক্ষণে নাগরিক হিসেবে সবিতাদেববাবুর ভূমিকার ব্যাপক প্রশংসা করা হয়েছে।