‘কাশ্মীরি পণ্ডিত’ ভরতকে হুমকি: স্যোশাল মিডিয়ায় ক্ষমা চেয়েও অনড় রাই সেনগুপ্ত

রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব, এমনকী স্বজনপোষণ এবং পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে টলিউডে। কিন্তু বর্ণবিদ্বেষের কালিমালিপ্ত করেনি টালিগঞ্জের স্টুডিওপাড়াকে। এবার সেই বিতর্ক উস্কে দিল সোশ্যাল মিডিয়ায় দুজনের বাগযুদ্ধ। ঘটনার সূত্রপাত লকডাউনের পরে স্টুডিও পাড়ায় কাজ শুরু থেকে। অবাঞ্ছিত সেই কাজিয়া ভরত কল বনাম রাই সেনগুপ্তের। ভরত কল দীর্ঘদিনের অভিনেতা, প্রথম ইপি ও ভরতলক্ষ্মী স্টুডিওর কর্ণধার। অভিনেতা যিশু সেনগুপ্তের দিদি রাই সেনগুপ্তও পরিচিত ইপি। আর্টিস্ট ফোরামের অংশ হিসেবে ভরতের একটি সংগঠনও রয়েছে।

ইপি হিসেবে ইদানীং একটি সংগঠন তৈরি করার প্রক্রিয়া শুরু করেন রাইও। অভিযোগ, সেই জায়গা থেকেই বিবাদের সূত্রপাত। রাইয়ের দাবি, তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। নার্সিংহোম থেকে সদ্য ফিরেছেন। এই ঘটনা নিয়ে নাকি ভরত কল তাঁকে অশালীন ভাষায় কটুক্তি করেন। রাইয়ের অভিযোগ, ভরত মন্তব্য করেন, “নেত্রী ফিরেছেন। তিনি শুয়ে শুয়েই সব কাজ সামলে নেবেন”। এই কথার প্রতিবাদে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট করেন রাই সেনগুপ্ত। আর সেখানেই আরেক পরিচিত অভিনেত্রী মানসী সিনহার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে, “কাশ্মীরী পণ্ডিতকে ছাড়ব না” বলে হুমকি দেন রাই।
এক রাতের মধ্যেই ভাইরাল হয় রাইয়ের পোস্ট। লীনা গঙ্গোপাধ্যায় থেকে রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায় – টলিপাড়ার একাধিক ব্যক্তিত্ব এই মন্তব্যের বিরোধিতায় নিজেদের মত প্রকাশ করেন। এমনকী, যে মানসী সিনহার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে রাই এই মন্তব্য করেন, সেই মানসীই সেই পোস্টে লেখেন যে, এই ধরনের বিদ্বেষমূলক মন্তব্য তিনি সমর্থন করেন না।
ভরত কল জাইয়ের মন্তব্যের স্ক্রিনশট নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করেন এবং জানান, “ও আমার কাছে উজ্জ্বল সেনগুপ্তের মেয়ে বলেই পরিচিত। ঠাট্টার ছলেই বলেছি, নেত্রী ফিরেছে, সংগঠনের কাজ আবার হবে। কিন্তু শুয়ে শুয়ে সব কাজ করে দেবে, এই ধরনের অপমানজনক কথা কখনওই বলিনি”। কিন্তু এই কথার জেরে রাই কেন তাঁকে হুমকি দিলেন তাতেই বিস্মিত এবং আহত ভরত কল। একইসঙ্গে তিনি বলেন, সম্ভবত অবসাদে ভুগছেন রাই। অসুস্থ, হাতেও হয়তো কাজ নেই। সব মিলিয়ে এই মন্তব্য।
এরপরে সেই পোস্টে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে নেন রাই। স্বীকার করেন, উত্তেজনার মুহূর্তে এই ধরনের মন্তব্য তিনি করেছেন। কিন্তু একই সঙ্গে ভরত কলের মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “ভরত দা, আমি তো ক্ষমা চেয়ে নিলাম। কিন্তু তুমি তোমার মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে পারবে কি?” যদিও পাল্টা ভরত কল চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন, তিনি একথা বলেছেন সেটা রাই প্রমাণ করতে পারবেন কি না সে বিষয়ে। এই কাদা ছোড়াছুড়ির মধ্যে অনেকেই মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করেছেন। উঠেছে কোভিড পরিস্থিতিতে ইপিদের বিমার প্রসঙ্গও।
তবে, টলিপাড়ায় বর্ণ-জাতি বিদ্বেষমূলক মন্তব্য যে কেউই সমর্থন করেন না, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন বেশিরভাগ অভিনেতা-অভিনেত্রী, কলাকুশলী থেকে পরিচালক-প্রযোজকরা।

Previous articleপ্রায় ১১ বছর আগের ঘটনায় নতুন করে মামলা দায়ের করল এনআইএ!
Next articleএকুশে জুলাইয়ের ভার্চুয়াল সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কী বললেন তিনি?