প্রায় ১১ বছর আগের ঘটনায় নতুন করে মামলা দায়ের করল এনআইএ!

প্রায় ১১ বছর আগের একটি ঘটনায় নতুন করে মামলা দায়ের হওয়ায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে । সেই সময় জঙ্গলমহলে রাজধানী এক্সপ্রেসের দুই চালককে মাওবাদীরা পণবন্দি করেছিল । সেই ঘটনাতেই ফের নতুন মামলা রুজু করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। এরই পাশাপাশি ২০০৯ সালে প্রবীর মাহাতো-সহ দুই সিপিএম কর্মীকে খুনের ঘটনাতেও নতুন মামলা রুজু করেছে এনআইএ।
জানা গিয়েছে , এই ঘটনাগুলির তদন্তে সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুরে গিয়েছিল এনআইএ-র চার সদস্যের একটি দল। তাঁরা স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে ওই মামলার অভিযুক্তদের বিষয়ে কথা বলেন ও মামলার নথি সংগ্ৰহ করেন।
এরপরই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা, দাঙ্গা, ভয় দেখিয়ে আটকে রাখা-সহ আটটি ধারায় নতুন করে দু’টি মামলা দায়ের করেছে এনআইএ।
ফিরে দেখা যাক সেদিনের ঘটনা।
২০০৯ সালের ২৭ অক্টোবর। ঝাড়গ্রামের বাঁশতলা স্টেশনে ভুবনেশ্বর-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসের চালককে তুলে নিয়ে গিয়েছিল মাওবাদীরা।প্রায় আট ঘণ্টা চালককে আটকে রাখা হয়েছিল । ঘটনাচক্রে ওই দিন ছত্রধর মাহাতোর মুক্তির দাবিতে ‘পুলিশি সন্ত্রাসবিরোধী জনসাধারণের কমিটি’ জঙ্গলমহলে বন্‌ধের ডাক দিয়েছিল। পরে যৌথবাহিনী মাও-কমিটির বিরুদ্ধে অভিযান চালায় এবং চালকদের মুক্ত করে।
রেলের ওই ঘটনায় সিআরপিএফ ‘জনসাধারণের কমিটি’র নামে অভিযোগ দায়ের করে। ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ ওই সংগঠনের বেশ কয়েকজন সদস্যকে গ্রেফতার করে।তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিটও জমা দেওয়া হয় । একই সঙ্গে সিপিএম কর্মী খুনের ঘটনাতেও অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয় এবং চার্জশিট জমা পড়ে।
কিন্তু 2011 সালের পর পরিস্থিতির বদল ঘটে।
বাম আমলে জঙ্গলমহলে তৈরি হওয়া সংগঠনের অনেকেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। জঙ্গলমহলে এখন ওই কমিটির অস্তিত্বও নেই। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে লালগড়ে থাকছেন ছত্রধরও। তাঁর বিরুদ্ধে ৩৯টি মামলা থাকলেও ২০১১ সালের পরে একের পর এক মামলায় ‘নির্দোষ’ প্রমাণিত হয়েছেন তিনি । এই পরিস্থিতিতে এনআইএ ফের তদন্ত শুরু করায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন ছত্রধর। তিনি বলেছেন, ‘‘আমাকে হেনস্থার জন্য কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে ফের তদন্ত করানো হচ্ছে।’’
পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর একাংশ মনে করেন, মাওবাদী এবং কমিটির নেতাদের অনেকের বিরুদ্ধেই যথাযথ তদন্ত হয়নি। ফলে ছাড়া পেয়েছেন তাঁরা। তাঁদের আশা, এনআইএ নিরপেক্ষ তদন্ত করবে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, তবে 11 বছর ধরে এনআইএ কি করছিল? বিধানসভা ভোটের আগে কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তা অনেকটাই স্পষ্ট বলে জানাচ্ছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরাও।

Previous articleভাইরাস মোকাবিলায় বদ্ধ জায়গাতেও পরতে হবে মাস্ক: সিএসআইআর
Next article‘কাশ্মীরি পণ্ডিত’ ভরতকে হুমকি: স্যোশাল মিডিয়ায় ক্ষমা চেয়েও অনড় রাই সেনগুপ্ত