চোপড়া কাণ্ডে বিজেপির দিকেই অভিযোগের তীর পুলিশের

চোপড়ায় জোড়া মৃত্যুর ঘটনায় বিজেপির দিকেই অভিযোগের তীর জেলা পুলিশের । অভিযোগ, রং চড়িয়ে গন্ডগোলের পরিকল্পনা করেছিল বিজেপি। প্রাথমিক তদন্তের পরে এমনটাই মনে করছে ইসলামপুর জেলা পুলিশ। সেই সংক্রান্ত তথ্যপ্রমাণ তারা উপরমহলে পাঠিয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। এই আন্দোলনে নেমে বুধবার গ্রেফতার হয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও বৃহস্পতিবারই তিনি জামিন পান। এই ঘটনার পর থেকেই বিজেপির স্থানীয় কয়েক জন নেতাও ফেরার।
পুলিশের দাবি , বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি সুরজিৎ সেনের সঙ্গে মেয়েটির দাদা থানা থেকে বার হয়ে পার্টি অফিসে যান। মেয়েটির ও ছেলেটির মোবাইল এবং ছেলেটির সাইকেল তখনও তাঁদের কাছে ছিল। কিন্তু সেগুলি কোনওটাই তাঁরা থানাকে দেননি। পুলিশের দাবি, বিজেপির দফতরে বসে মোবাইল দু’টি ঘেঁটে বার্তাগুলি দেখা হয়। তার পরে সুরজিৎ মেয়েটির দাদাকে পরামর্শ দেন নিজেকে বিজেপির বুথ সভাপতি বলে পরিচয় দিয়ে এটি যে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনা, সেটা সবাইকে জানাতে।
প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই এলাকায় বিজেপির বুথ সভাপতি আসলে বিজয় সিংহ নিজেই।
পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে, ওই সময়ে বিজেপি নেতারা নিজেদের মধ্যে একাধিকবার ফোনে কথা বলেন।
পুলিশের দাবি, পরপর ফোন কলগুলি দেখলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে, কী ভাবে ঘটনাটি প্রথমে জানার পরের পৌনে চার ঘণ্টার মধ্যে দলের রাজ্য নেতৃত্বের সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত আলোচনা হয়েছে এটি নিয়ে। পুলিশের বক্তব্য, বিজেপির ইসলামপুর, রায়গঞ্জ এবং কলকাতার নেতৃত্ব এলাকায় লোক খেপিয়ে গোলমালের পরিকল্পনা করেছিলেন।
রবিবার সকালে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া থানার সোনাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বসলামপুর গ্রামে এক কিশোরীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। যদিও গণধর্ষণের সব জল্পনা উড়িয়ে পুলিশ জানিয়ে দেয় যে, কিশোরীর শরীরে কোনও যৌন নির্যাতন বা আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। ছাত্রীর দেহের ময়নাতদন্তের পর জানা গেছে, মূলত বিষক্রিয়ার ফলেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। অথচ রবিবার রাতে চোপড়া সহ উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু এলাকায় এই কিশোরীর মৃত্যুর তদন্ত ও অপরাধীদের গ্রেফতার করার দাবিতে বিক্ষোভ দেখানো হয়। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অপরাধীদের গ্রেফতার করতে হবে, এমন দাবিতে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে গোটা এলাকা।
এদিকে সোমবার এলাকারই একটি খাল থেকে এক যুবকের দেহ  উদ্ধার ঘিরে আরও উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে , কিশোরীর দেহ উদ্ধারের ঘটনাস্থল থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে সেই যুবকের দেহটি উদ্ধার হয়।
পুলিশ যে দাবিই করুক না কেন,
বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় তা মানতে নারাজ । তিনি অভিযোগ করেছেন , “তৃণমূল গুণ্ডারাই ওই মেয়েটিকে খুন করেছে কারণ সে এক বিজেপি কর্মীর বোন। আর পুলিশ ধর্ষণ ও হত্যার বিষয়টিকে আত্মহত্যা হিসাবে চালানোর চেষ্টা করছে।” বিজেপির জাতীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা আরও এক ধাপ এগিয়ে মন্তব্য করেছেন , পুলিশ অপরাধীদের “রক্ষা” করার চেষ্টা করছে।

Previous articleআলুর অস্বাভাবিক দামবৃদ্ধি ইস্যুতে নবান্নে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক
Next articleকোভিড সেন্টারে নাবালিকাকে যৌন হেনস্থা, অভিযুক্ত ভাইরাস রোগী গ্রেফতার