লঙ্কা ২৫০ টাকা, সবজি বাজারেও আগুন, বাঙালির হেঁশেল লকডাউনের পথে

লঙ্কাকাণ্ড ! কাঁচা লঙ্কায় হাত দিলেই হাত পুড়ছে। খুচরো বাজারে ২৫০-৩০০ টাকা কেজি৷ কোলে মার্কেটে ৭দিন আগেও ৫০-৬০ টাকা কেজিতে লঙ্কা পাইকারি বিক্রি হয়েছে। সেই লঙ্কার পাইকারি দর আজ ১২০-১৪০ টাকা কেজি। নবান্ন ফতোয়া দিয়েছে, আলু ২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে হবে৷ কোন বাজারে এই দামে আলু মিলছে জানা নেই, আমরা তো দেখছি জ্যোতি ৩০-৩২ টাকা, চন্দ্রমুখী ৩৬-৩৮ টাকা৷

আলু বা কাঁচালঙ্কাই শুধু নয়, টমেটো, ঢ্যাঁড়শ, পটল,ঝিঙে, বেগুন,
কুমড়ো, করলা সব, সব
সবজির দাম এখন ঊর্ধ্বমুখী৷ আমদানি নির্ভর সবজি-র দর বৃদ্ধির একটা কারন থাকতে পারে, কিন্তু বাকি সবজির দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে কেন ?
পাইকারি বিক্রেতাদের বক্তব্য, আরও বাড়বে আগামী দিনে। লঙ্কার দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার ব্যাখ্যাও আছে তাদের কাছে৷ বর্ষা ও গরমে বাংলায় লঙ্কার উৎপাদন কম হয়। তখন নির্ভর করতে হয় ইউপি , বিহার ও ঝাড়খণ্ডের লঙ্কার ওপর। এই নির্ভরতা এবছর অনেক বাড়বে৷ কারন আমফানের জন্য দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ, ভাঙ্গড়, ক্যানিং অথবা উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটে লঙ্কাচাষের অনেক ক্ষতি হয়েছে৷ তাই ভিনরাজ্যের লঙ্কার উপর নির্ভর করতে হবে৷ আর সেই লঙ্কার দাম চড়া হবেই৷

এসব যুক্তি যতই সঙ্গত হোক, মহামারির কোপে বিপর্যস্ত বাঙালির হেঁশেল তো তা শুনবে না৷ এমনিতেই এখন সপ্তাহে এক বা দু’দিন বাজার হচ্ছে৷ সেদিন পছন্দের সবজি না পেলেও কিছু করার নেই৷ যা মিলছে, তাই খেতে হচ্ছে৷ তার ওপর এই চড়া দামের কারনে অনেক সবজিই এখন কেনা যাচ্ছে না৷ তাহলে কী খাওয়া হবে ?

বাজারে আগুন লাগলে সরকার সাধারনত “টাস্ক-ফোর্স” নামে একটি অদ্ভুত এজেন্সি গঠন করে৷ সারা বছর এই ফোর্স কোথায় থাকে কেউ জানেনা৷ বাজার-দর বাড়লে এই “টাস্ক-ফোর্স”-এর লোকজন মিডিয়া ফুটেজ খেতে নেমে পড়েন৷ টিভি’র টক-শো’তে এদের কথাবার্তার তেজ শুনলে কৃষি বিপণনমন্ত্রীও লজ্জা পাবেন৷ তাতেও সবজির দর কমেনা! যারা বাড়িয়েছে, তাদের ফখন ইচ্ছা হবে, তখনই কমবে৷ এখানে প্রশাসনের ভূমিকা নগন্য৷
এবারও নিশ্চয়ই তেমনই হবে৷ আশা করা যায়, আজ বা কাল নবান্ন এই
“টাস্ক-ফোর্স”-এর কথা ঘোষণা করবে৷ সাধারণ মানুষও অপেক্ষায় থাকবেন দাম কমার৷ এমনই তো হচ্ছে৷

Previous articleচলতি সপ্তাহে দ্বিতীয় লকডাউন কবে? জল্পনা সর্বত্র
Next articleচলন্ত অটো থেকে রাস্তায় ছিটকে পড়ে যুবকের মৃত্যু