এটা ভ্রান্ত শিক্ষানীতি, কর্মজীবন থেকে নি:শব্দে দুবছর কেড়ে নিল কেন্দ্র: সমালোচনায় পবিত্র সরকার

দ্বিতীয় বার ক্ষমতাসীন হয়েই বিজেপি সরকার বিশেষ তৎপরতায় নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির বিলটি সংসদে পেশ করেছে। নয়া নীতি বলছে, স্বাধীনতার পর এত দিন শিক্ষার প্রসারের উপর গুরুত্ব দেওয়া হলেও, মানোন্নয়নে জোর দেওয়া হয়নি। এই শিক্ষানীতি স্কুলশিক্ষার মান উন্নত করতে সামগ্রিক স্কুলব্যবস্থার পরিবর্তনের প্রস্তাব দিচ্ছে।
এরপরই দেশ জুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে তীব্র সমালোচনা। কেউ বলছেন, অসঙ্গত। কেউ বলছেন, স্বৈরতান্ত্রিক। কেউ বলছেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আবার কেউ বলছেন, গৈরিক। দিল্লী থেকে ঘোষিত জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে বিরোধী নেতা-নেত্রী থেকে শুরু করে শিক্ষাবিদ‌, শিক্ষক সংগঠন, শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত মানুষের এটাই মতামত।
অধিকাংশেরই বক্তব্য , শিক্ষা একটি যৌথ বিষয়। সেখানে রাজ্যের সঙ্গে কোনও আলোচনা ছাড়া কী করে এমন ঘোষণা করতে পারে কেন্দ্র?
শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকারের স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন , এটাকে জাতীয় শিক্ষানীতি না বলে ভ্রান্ত শিক্ষানীতি বলা উচিত। শিক্ষা ব্যবস্থাকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হল।
তিনি বলেছেন, ১৩০ কোটির দেশে যেখানে দারিদ্রসীমার নীচে বাস করে এমন ছাত্রছাত্রীরা পড়তেই পায় না, তাদের পড়ানোর ব্যবস্থা না করে পদার্থবিদ্যার সঙ্গে ফ্যাশন ডিজাইন পড়তে পারবে, পড়তে পড়তে চলে গেলাম, আবার খানিকটা খেলাধুলো করে এসে পরীক্ষা দিলাম ইত্যাদি বলা হচ্ছে। ১৩০ কোটির দেশে এই নীতি চলবে না। সমস্ত ভেঙে পড়বে। যাঁরা এটা তৈরি করেছেন তাঁরা চিন্তাভাবনা করেননি। আমাদের দেশের মাটির মানুষের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ এঁদের নেই।
তিনি বলেন, মাধ্যমিক পরীক্ষাকে গুরুত্বহীন করে দেওয়া অত্যন্ত খারাপ কাজ। কারণ, মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করার পরে চাকরির জন্য আবেদন করা যায়। নতুন শিক্ষানীতিতে দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষায় পাশ করার পরে চাকরির জন্য আবেদন করা যাবে। এর অর্থ হল, দেশের কোটি কোটি মানুষের কর্মজীবন থেকে নি:শব্দে দুবছর কেড়ে নিল কেন্দ্রীয় সরকার।
এদিকে অনার্সের চতুর্থ বর্ষে গবেষণার কথা বলা হচ্ছে। সমস্ত জিনিসটা দেখে মনে হচ্ছে গোড়া কেটে আগায় জল দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। এভাবে ফতোয়া জারি না করে রাজ্যগুলির মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত ছিল।

Previous articleজলের স্রোতে ভেসে গিয়েছে অ্যাপ্রোচ রোড, সাতটি অঞ্চল থেকে  বিচ্ছিন্ন রায়গঞ্জ
Next articleমালবোঝাই গাড়ির পিছনে পরপর তিনটি গাড়ির ধাক্কা! দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে দুর্ঘটনা