কাউকে দূরে না ঠেলে, সবার ন্যায় হলেই সম্ভব রামরাজ্য, ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা ব্রাত্য আদবানির

আদবানি-যোশি ইস্যুতে ‘অনড়’ শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট৷ প্রথম দিন থেকেই ট্রাস্ট সিদ্ধান্ত নেয়, রাম জন্মভূমি আন্দোলনের কান্ডারি লালকৃষ্ণ আদবানিকে ভূমিপুজোয় ঘেঁষতে দেওয়া হবে না৷ শেষপর্যন্ত সেই অবস্থানই ধরে রেখেছে ট্রাস্ট৷

ফলে, আজ, ৫ আগস্ট, ভূমিপুজোর অনুষ্ঠানে একঘরে আদবানি৷ আদবানির মতো মুরলীমনোহর যোশিও অযোধ্যার অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পাননি৷ টেলিফোন, ই-মেলও যায়নি। রাম জন্মভূমি আন্দোলনের ৫ প্রধান চরিত্র, লালকৃষ্ণ আদবানি, মুরলীমনোহর যোশি, কল্যাণ সিং, উমা ভারতী ও বিনয় কাটিয়ার, এই পাঁচজনের কেউই ভূমিপুজোর অনুষ্ঠানে থাকছেন না। উমা, কল্যাণ ও বিনয় আমন্ত্রিতের তালিকায় ছিলেন। উমা জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি অযোধ্যায় গেলেও সংক্রমণ এড়াতে এবং প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্যের কথা ভেবে পূজানুুষ্ঠানের সময় যাবেন না। কাটিয়ার অযোধ্যায় থাকলেও তাঁকে কোনও দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। আর কল্যাণ সিংকে বলা হয়েছে, আপনার বয়স হয়েছে, দরকার কী ভিড়ে ঢোকার ?

ঠিক এই ‘অসহনীয়’ পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে অবশেষে মুখ খুলেছেন লালকৃষ্ণ আদবানি৷ বেনজিরভাবে আদবানি ভগবান রামের বর্ণনায় শিষ্টাচারের প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন৷ বিশেষ কোনও মহলকে বার্তা দিয়ে প্রবীণ এই মার্গদর্শক স্পষ্ট বলেছেন, ‘‘শ্রীরামের স্থান ভারতীয় সংস্কৃতি ও সভ্যতার কাঠামোয় সর্বোচ্চ। তিনি বিনয়, মর্যাদা ও শিষ্টাচারের মূর্ত রূপ।’’

একইসঙ্গে দেশবাসীর স্মৃতিকে উসকে দিয়ে ৩০ বছর আগে রামজন্মভূমি আন্দোলনের সময় তিনিই যে রাম রথযাত্রা করেছিলেন, তা ফের প্রকাশ্যে এনে আদবানি বলেছেন,‘‘আমি বিনম্রতার সঙ্গে অনুভব করি, নিয়তি আমাকে সোমনাথ থেকে অযোধ্যা পর্যন্ত রথযাত্রার এই দায়িত্ব দিয়েছিল।’’

রামমন্দিরের ভূমিপুজোয় রাম জন্মভূমি আন্দোলনের প্রধানপুরুষকে কেন আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, তা নিয়ে সবার মনেই প্রশ্ন থাকলেও “ভয়ে” কেউ তা মুখে আনেননি৷
ভূমিপুজোর অনুষ্ঠান থেকে ছাঁটাই হওয়ার পর আদবানি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রামমন্দির শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ ভারতের প্রতিনিধিত্ব করবে। যেখানে কেউ ‘বহিষ্কৃত’ থাকবে না। সকলের জন্যই ন্যায় হবে। এমনটাই তাঁর বিশ্বাস।

এদিকে প্রশ্ন উঠেছে, ভদ্রতার খাতিরেও ট্রাস্টের তরফে আদবানির কাছে কেন কোনও আমন্ত্রণ পত্র বা টেলিফোন গেল না? কে বা কারা, কাদের পরামর্শে ঠাণ্ডামাথায় নাম কেটে দিলো আদবানিদের ? বিজেপি’র একাধিক শীর্ষনেতার বক্তব্য, “সৌজন্য, শিষ্টাচার, আদবানির অবদান ও সম্মানের খাতিরেই বিজেপির সর্বোচ্চ নেতাদের আদবানির কাছে যাওয়া উচিত ছিল। গিয়েই না হয় স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত বিধির কথা বলতেন, অথচ তা করা হলো না৷”

আর সেই সুযোগেই বিজেপি নেতৃত্বকে শিষ্টাচারের বার্তা দিয়েই দিলেন লালকৃষ্ণ আদবানি৷ ৯২ বছর বয়সি আদবানি বলেছেন, তাঁর স্বপ্ন পূর্ণ হতে চলেছে। জীবনের কিছু স্বপ্ন পূর্ণ হতে সময় লাগে। কিন্তু যখন তা চরিতার্থ হয়, তখন মনে হয় প্রতীক্ষা সার্থক হল।’’ বলেছেন, ‘‘ভারতে কাউকে বহিষ্কৃত না রেখে, সকলের জন্য ন্যায় হলেই আমরা সুশাসনের প্রতীক রামরাজ্যের দিকে এগোতে পারব।’’

Previous articleআজ রাম মন্দিরের ‘মেগা’ শিলান্যাস, অপেক্ষায় দেশবাসী
Next articleঅযোধ্যায় আজ প্রধানমন্ত্রীর সফরসূচি একনজরে