জার্সি প্যান্টের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের ISL খেলার কোনো সম্পর্ক নেই, দুলাল দের কলম

দুলাল দে

আইএসএল এবং জার্সি প্যান্ট মোজা

একজন ভাল ফুটবলার, ফুটবল খেলেন।
একজন ভাল কোচ, ভাল কোচিং করান।
একজন ভাল রিপোর্টার, ভাল খবর রাখেন (যেহেতু সব দিকটা দেখতে পান)
একজন আরেকজনের পেশার মধ্যে ঢুকে পড়লেই পুরো ব্যাপারটায় জট পাকিয়ে যায়।
কী ভাবে ইস্টবেঙ্গলের আইএসএল খেলা সম্ভব? (যদিও এই বছর সম্ভব নয়) নিয়মগুলো একটু পরিস্কার ভাবে শেষবারের মত বলি। বাকিটা দু’দিন পর মিলিয়ে নেবেন। এর সঙ্গে জার্সি–প্যান্ট–মোজার কোনও সম্পর্ক নেই।
১) এএফসি বলেছিল, ইতিহাস সমৃদ্ধ দুটি ক্লাবকে এই মরশুমেই আইএসএলে নিয়ে নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু শর্ত পূরণ করে।
আপনি আইএসএলে নিয়ে নেওয়াটা শুনলেন। আর শর্ত পূরণের পয়েন্টটার সময় চোখ বন্ধ করে নিলেন, এটা হয় নাকি!
মোহনবাগান শর্ত পূরণ করেই আইএসএলে। তাহলে ইস্টবেঙ্গলকে কী করতে হবে?

২) এই মরশুমে কোনও বিড পেপার খোলা হবে না। অনেক আগের সিদ্ধান্ত। ধরুণ, বিড ওপেন হল। এবার ইস্টবেঙ্গলের বদলে কাশ্মীর বিড পেপার তুলে সব শর্ত পূরণ করল। এবার কাশ্মীরকে না নিয়ে তারা তো আদালতে চলে যাবে। এফএসডিএল নিতে চাইল ইস্টবেঙ্গলকে। আর চলে এল কাশ্মীর।
সমস্যা আরও একটা ছিল। বিড ওপেন করার পরও যদি আর্থিক সমস্যায় কেউ বিড পেপার তুলল না, তাহলে তো আইএসএলের পক্ষে অত্যন্ত বাজে বিজ্ঞাপন। তাই যাঁরা বিড পেপার তুলে নেওয়া হয়েছে বলে লাফিয়েছিলেন, প্লিজ গুজব ছড়িয়ে পুরো ব্যপারটা জটিল করে তুলবেন না। তাহলে?

৩) ইস্টবেঙ্গলকে খেলতে হলে সবার আগে ঠিক ঠাক ভাবে আর্থিক শর্ত পূরণ করতে হবে। যা ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি সহ।
তাই যাঁরা বলছেন, ‘আমি ১০০০ দিচ্ছি, আপনারাও দিন’ এগুলো শিশু সুলভ কথা বার্তা। আপনি যেখান থেকে খুশি ৪০ কোটি টাকা যোগার করে এফএসডিএলের টেবিলে রাখলেন, আর আইএসএল খেলে ফেললেন, এরকমটা একদমই ভাববেন না।
খেয়াল করে দেখুন, যে ইনভেস্টররা আইএসএলে খেলে,তাদের প্রত্যেকের ৫–৬ হাজার কোটি টাকা টার্নওভার।
৪০ এর বদলে আপনি ৪০০ কোটি টাকা তুলে দিন না। এফএসডিএল আপনার কোম্পানীর প্রোফাইল চেক করে খুশি হলে তবেই আলোচনা এগোবে।

৪) বিড পেপার ওপেন হবে না। কিন্তু আপনার ইনভেস্টর সহ অন্যান্য কাগজপত্র দেখে এফএসডিএল যদি মনে করে, তাদের সব শর্ত আপনি পূরণ করেছেন, তাহলেই একমাত্র আইএসএল খেলা সম্ভব। যা ঠিক ঠাক করতে মোটামুটি দেড় মাস লেগে যাবে। এরসঙ্গে বিড ওপেনের কোনও সম্পর্ক নেই।

৫) এই সব কিছুই হল না। অথচ এর মধ্যে কেউ যদি বিড পেপারের মত জার্সি প্যান্ট পাঠানোর লিঙ্ক খুঁজে পায়, তাহলে সেটা তাঁর একক কৃতিত্ব। বা কেউ যদি ভাবেন, এফএসডিএল ৭ আগস্টের মিটিং স্থগিত রেখেছে
ইস্টবেঙ্গলের জন্য, সেই ভাবনা নিয়ন্ত্রন করার ক্ষমতা কারও নেই।

৬) ৭ আগস্ট এফএসডিএলের কোনও মিটিং ছিল না। মানে ইস্টবেঙ্গল কেন্দ্রিক। ওরা জানিয়েছিল, ৭ আগস্টের মধ্যে আইএসএলের দিন ঘোষণা করবে। এফএসডিএলের সর্বোচ্চ ব্যক্তি এই মুহূর্তে বিদেশে। তাই প্রেস রিলিজ তৈরি করা সম্ভব হয়নি। যে কারণে, সংবাদ প্রতিদিনে খবর করি, এই সপ্তাহে ঘোষণা হবে না। খবর না জেনে যদি কেউ খবর জানার দাবি করেন, সেটা তাঁর ব্যাপার।
ইস্টবেঙ্গল ক্লাব ইনভেস্টর পাবে না, এরকমটা হয় নাকি? আজ না হোক কাল পাবেই। সবাই চান, ইস্টবেঙ্গল এই মরশুমেই আইএসএল খেলুক। কিন্তু বাস্তবটা তো বাস্তবই। আপনি পছন্দ না করতে পারেন। কিন্তু মানতে তো হবেই। ৪০০ কোটির টাকার স্পনসর পেলেও, এই মরশুমে ইস্টবেঙ্গলের আর আইএসএল খেলার কোনও সম্ভাবনাই নেই। প্র‌্যাকটিস মাঠ থেকে হোটেল, সব বুক হয়ে গিয়েছে। শুধু ঘোষণাটাই বাকি।
করোনা না হলে সেপ্টেম্বর থেকে আইএসএল শুরু হওয়ার কথা ছিল। যার ঘোষণা এপ্রিল মাসে করার কথাও ভেবে রেখেছিল এফএসডিএল। কিন্তু করোনাতেই সব কিছু পিছিয়ে যায়। কিন্তু তারজন্য পরিকল্পনা বা নিয়ম কানুন অদল বদল হয়ে যায়নি। আর্থিক নিরাপত্তার বদলে জার্সি–প্যান্ট–মোজা আইএসএল খেলার শর্ত হয়নি কখনও।
আবার বলছি, ইস্টবেঙ্গল কর্তারা ইনভেস্টর পাওয়ার জন্য সত্যিই আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। তাঁদের প্রতিটি বক্তব্যর পিছনে নিশ্চয়ই কোনও স্ট্র‌্যাটেজি থাকে। কিন্তু তার সঙ্গে গুজবের বা নিয়ম বদলে যাওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই।

 

Previous articleএকসঙ্গে ১১ টি পাক হিন্দুর মৃতদেহ উদ্ধার! ঘটনায় চাঞ্চল্য
Next articleগত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্ত ২,৯৩৯, মৃত্যু ৫৪