Thursday, August 21, 2025

বাম ভোট রামে নয়, প্রধান বিরোধীর জায়গা ফিরে পেতে হোয়াটসঅ্যাপ সেল সিপিএমের

Date:

জ্যোতি বসুর পর বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, এই দুই মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে টানা ৩৪ বছরের রাজ্য শাসন বামেদের। ২০১১ সালে রাজ্যের রাজনৈতিক পালা বদলের পর শুরুর দিকে বাংলার প্রধান বিরোধী শক্তি ছিল সিপিএম তথা বামেরাই। কিন্তু ২০১৪ সালে কেন্দ্রে পালা বদলের পর থেকে গোটা দেশের মতোই এ রাজ্যেও নরেন্দ্র মোদির গেরুয়া ঝড়ের প্রভাব পড়ে। যদিও সেই ঝড় বর্তমান শাসক তৃণমূল কংগ্রেসকে যত না বিড়ম্বনায় ফেলেছে, তার থেকে ঢের বেশি অস্বস্তিতে ফেলেছে সিপিএমকে। একের পর এক নির্বাচনে বামেদের রক্তক্ষয় এমন একটা জায়গায় পৌঁছেছে, যেখানে বর্তমানে অস্তিত্ব সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে তারা। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বামেদের ভোটে থাবা বসিয়েছে রামেরা। অর্থাৎ, তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এখন আর সিপিএম নয়, প্রধান বিরোধী শক্তি হয়ে উঠেছে বিজেপি, যার মূল কারণই হল, বামেদের ভোট বিজেপিতে ট্রান্সফার।

এবার ফের সেই জায়গা ফিরে পেতে মরিয়া বামেরা। রাজ্যে ফের ক্ষমতা দখল এখন তাদের কাছে দিবা স্বপ্নের মতো, তবে প্রধান বিরোধী শক্তির তকমাটা আপাতত ফিরে পেতে চাইছে সিপিএম। এবং এক্ষেত্রে তাদের লড়াই বিজেপির সঙ্গে। জনবিছিন্ন হয়ে যাওয়া বামেরা তথা বড় শরিক সিপিএম চাইছে, গেরুয়া শিবিরে নিজেদের চলে যাওয়া ভোট ফিরিয়ে আনতে।

গত কয়েক বছরে বছরে এ রাজ্যে বিজেপির বিরোধী শক্তি হিসেবে ক্রমাগত উত্থানের পিছনে একটা বড় ফ্যাক্টর তাদের শক্তিশালী সোশ্যাল মিডিয়া সেল।ফেসবুক-টুইটার-হোয়াটসঅ্যাপ থেকে শুরু করে গেরুয়া বাহিনীর সোশ্যাল মিডিয়া সেল খুব দ্রুত দলের নেতাদের বক্তব্য, রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে শুরু করে শাসকের নেতিবাচক দিকগুলি খুব সুন্দরভাবে জনগণের সামনে তুলে ধরেছে। সেখানে বামেরা বিরোধী হিসেবে অনেকটাই পিছিয়ে। যুগ বদলেছে। তাল মিলিয়ে বদলেছে রাজনীতির প্রেক্ষাপটও। সেটা একটু দেরিতেই বুঝেছে সিপিএম। সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণমূল-বিজেপির দ্বৈরথে রক্ত কয় আরও বেড়েছে সিপিএমের। এবার তাই সোশ্যালে মিডিয়ায় আধিপত্য বাড়াতে চাইছে সিপিএমও। এক্ষেত্রে তাদের সেই চিরাচরিত গণসংগঠনের কায়দায় একেবারে দক্ষ “হোয়াটসঅ্যাপ সেল” গড়ার উদ্যোগ নিল আলিমুদ্দিনের ম্যানেজারেরা। আপাতত খসড়া আকারে পরিকল্পনা। তবে তা দ্রুত বাস্তবায়িত করতে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে সিপিএমের এই হোয়াটসঅ্যাপ। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে যেনতেন প্রকারেণ তারা বিজেপির আইটি সেলকে টক্কর দিতে চাইছে। যাতে নিদেন পক্ষে পরবর্তী নির্বাচনগুলিতে নিজেদের ভোট ব্যাংকের ভাঙন যায়। এবং একই সঙ্গে বামেদের যে ভোট বিজেপি দিকে চলে গিয়েছে তা যাতে ফিরিয়ে আনা যায়।

রাজ্যস্তরে প্রতিটি জেলার নেতা, গণসংগঠনগুলির নেতা, সোশ্যাল মিডিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্তদের নিয়ে গঠন করা হবে রেড স্ট্রিম কোর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। জেলাস্তরে সম্পাদকমণ্ডলী, জেলা কমিটির সদস্য ও এরিয়া কমিটির সম্পাদকদের নিয়ে থাকবে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। এর পাশাপাশি ব্লকে ব্লকে, বিধানসভা ভিত্তিক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি হবে। রাজ্য দফতরে পাঠাতে হবে জেলা কমিটির সব সদস্যদের নাম ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর।

Related articles

যোগীরাজ্যের পাঠ্যপুস্তকে বাদ কেন রবীন্দ্রনাথকে? সাংসদ ঋতব্রতর প্রশ্নে অস্বস্তিতে কেন্দ্র

উত্তরপ্রদেশের দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে কি বাদ দেওয়া হয়েছে? তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্নে স্পষ্টতই...

প্রয়াত সিপিএম নেতা-প্রাক্তন মন্ত্রী দীনেশচন্দ্র ডাকুয়া

প্রয়াত সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতা দীনেশচন্দ্র ডাকুয়া। বুধবার এনআরএস হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর।...

উপাচার্য নিয়োগের ইন্টারভিউয়ে ডাক মেলেনি! শীর্ষ আদালতে শান্তা দত্ত 

স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের ইন্টারভিউ পর্বে ডাক পাননি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য শান্তা দত্ত। যোগ্য হয়েও তাঁকে সুযোগ দেওয়া...

১৫ দিনেই রেকর্ড সাফল্য! রাজ্যে সাড়া ফেলল ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচি

মাত্র পনেরো দিনেই নজির গড়ল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নতুন কর্মসূচি, ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’। রাজ্যের মানুষের হাতে উন্নয়নের...
Exit mobile version